somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গান বন্দনা ও কয়েকটি প্রিয় গানের কথা

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে মনে হয় এই সব গানের জন্যই বেঁচে থাকা আনন্দময় হয়ে উঠে,
গান শুনে কখনো আনন্দে ভেসে যাই, আবার একই গান শুনেও বিষন্নতায় নিজেকে হারিয়ে ফেলি।আনন্দ কিংবা বিষন্নতায়, যেভাবেই নিজেকে হারিয়ে ফেলিনা কেন এই সব গানের মাঝেই আবার নিজেক ফিরে পাই। বুদ হয়ে গান শুনতে থাকি, দূ:খ কষ্ট ভুলে যাই। ভীষণ একা মনে হলে গান শুনতে থাকি, এগুলোই হয়ে উঠে আমার বন্ধু, প্রিয় প্রেমিকা। যদিও গানের বোদ্ধা নই, তবুও গানের মাঝে খুজে পাই অন্য আলো, একটা সাধারণ গানও অনবদ্য হয়ে উঠে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে। এমনও দিন গেছে, মনে হয়েছে গান আমাকে বেঁচে থাকার আশ্চর্য বায়ু দিয়ে দাড় করিয়ে রেখেছে। আমি দাড়িয়েই আছি গানের জন্য। গানের কারিগরদের প্রতি কি এক শ্রদ্ধা, ভালবাসা জাগে তা কাউকে বুঝাবার নয়, তাঁরা যে দরদ দিয়ে গান সৃষ্টি করেছেন, তার মূল্য দেয়ার যোগ্য কেউ নাই বলেই আমি বিশ্বাস করি।

গান যখন শুনতে থাকি মনে হয় আমি আর একা নই। পৃথিবীর পশ্চিমে যারা এসেছেন, পূব থেকে, তারা সকলেই ছিলেন কোলাহলের অংশ, পশ্চিমে পা রাখা মাত্রই তারা একা হয়ে পড়েন, এখানে পশ্চিমে পূবের মানুষ, যার এখনো গৃহের প্রতি টান রয়ে গেছে এরা সকলেই নিজের ভেতরে ভীষণ একা, হয়তো সবাই নয়।

এখানে মানুষ খুব ব্যস্ত, কারো দিকে থাকানোর সময় নেই, এমনকি নিজের দিকেও। কিন্তু এখন আমার হাতে সময় অফুরান, সময় নিয়ে কাটাকুটি খেলি, নিজের ভেতরে হেটে হেটে ক্লান্ত হই, আবার নিজের কাছেই চুপটি করে বসে থাকি। শরীরে অসুখের বাসা, মনে জড়তা। মনে ব্যথা নিয়ে লেখালেখি করা যায়, কিন্তু শরীরে ব্যাথা নিয়ে সম্ভব হয়ে উঠেনা।গান মনের ঔষধ হলেও যাপনে কোন তদবির করতে পারেনা আমার বেলায়।তবুও আমায় প্রভাবিত করে বিভিন্ন ভাবে, নিজের ভেতরে ভাবনা জাগায়, আনন্দিত করে তুলে, বিষন্নতায় ভরে দেয় মন-পুকুর, এইবা কম কি।

গানের ধরন যাই হোক না কেন, সকল গানের উদ্দেশ্য এক, মানুষকে সঙ্গ দেয়া। ফোক গান শুনে যেমন ভাব জাগে ঠিক তেমনি হার্ড মেটাল রক ব্যান্ড শুনেও আপ্লুত হই।তবে সকল গানই যে ভাবাবে এমন নয়। প্রথমত কথার উপর নির্ভর করে গান সঙ্গী হয়ে আমায় ভাবাবে কি ভাবাবে না, তারপর সুর ও যন্ত্র সংমিশ্রণ।আমার এমনই মনে হয়,যদিও আমি একজন সাধারণ শ্রোতা মাত্র।

গান সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ভালবাসা।



কয়েকটি প্রিয় গানের কথা ও সংযোগ:

হাতে অফুরন্ত সময়, গান শুনি আর লিখি। পরে কবিতার মত পড়া যায়। এই সকল গান যেন একেকটি দূর্দান্ত কবিতা, কেউ যদি শুনে না থাকে কবিতা বলেই মনে করবে। আমিও মাঝে মাঝে ভাবি না গাইলে তো এগুলো কবিতাই ছিল, আর যারা লিখেছেন তাঁরা তো কবিই।

১।
আমাদের একই ভাষা
আমাদের একই দেশ
সহজ সরল মায়া মমতায়
নাইকো যার শেষ


চোখ জুড়ানো ঘণ নিবিড়
গ্রামের শ্যামলীমায়
উদাস মনটা পাল উড়ায়
অলস পূবালী হাওয়ায়
ধীরে ধীরে আনে মনে
কি যে মধুর আবেশ
সেই সে দেশ
বাংলাদেশ
আমার জন্মভূমি


ষড় ঋতুর নানান রকম
লুকোচুরি খেলায়
জীবন সেথায় অফুরান
রংধনু সুখ ছড়ায়
হাজার নদীর কলতানে
কাটেনা যে রেশ
সেই সে দেশ
বাংলাদেশ
আমার জন্মভূমি



শিল্পী: অপি করিম
কথা ও সুর: ড. ফয়েজ কবির
সংগীত: নাদিম আহমেদ

সংযোগ: আমাদের একই ভাষা

২।
ভালবাসা শত যুদ্ধেও যেতা যায় না
ভালবাসা লুটতরাজ কীর্তিনাশা
একা মেয়েটার নরম গালের পাশে
প্রহরীর মত রাত জাগে ভালবাসা


ভালবাসা এক আজন্ম সন্নাসী
ভালবাসা ধ্যান মগ্ন তাপস যেন
শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রাণয়ন পুরে নেয়া
প্রথাগত হয়ে আমায় ডাকছো কেন


ভালবাসা এক ক্ষ্যাপাটে জুয়ার নেশা
ভালবাসা সব বাঁজি ধরা নির্বোধ
শেষ ছালে হেরে যাবোই তবু আমি
আবার খেলব, চাইবই প্রতিশোধ


ভালবাসা এক উদ্ভট বাঁজিকর
ভালবাসা ছিল ইন্দ্রজালের রাজা
বোকা বনে যাই বারবার তবু বলি
পায়ে তোর প্রেমের গানটা বাঁজা



- কবীর সুমন

সংযোগ: ভালবাসা শত যুদ্ধেও যেতা যায় না


৩।

এই মিনতি করি তোমায় ছেড়ে যাইওনা
আমি তো জানিরে বন্ধু তুমি আপনা


আমি তোমায় ভালবাসি
মন্দ বলে পাড়া-পড়শী বন্ধু
বলে বলুক যার যা খুশি
আমি শুনব না।


ছাড়িয়া সকলের আশা
করেছি তোমার ভরসা
মিটাও আমার প্রেম পিপাসা
নিরাশ কইরনা।


তোমায় না পাইলে যৈবনে
কি কাজ আমার কুল- মানে
তুমি বিনে পাগল মনে
আর কিছু চায় না।


আমি তোমারে পাইলে
বলে শাহ নূর জালালে
ইহকাল আর পরকালের
কিসের ভাবনা।


- শাহ নূর জালাল

সংযোগ: এই মিনতি করি


৪।

আমার সোনা বন্ধুরে, তুমি কোথায় রইলারে
দিনে রাইতে তোমায় আমি খুইজা মরিরে


প্রথম দেখার কালে বন্ধু কথা দিয়েছিলে
ভুলিবেনা মোরে এ জীবন গেলে
যদি না পাই তোমারে আমার জীবনের তরে
সোনার জীবন অঙ্গার হইব তোমার লাইগারে


ভুলতে পার বন্ধু তুমি, আমি ভুলিনাই
মরণ কালে যেন বন্ধু একবার তোমায় পাই
যদি না পাই সেকালে, প্রেম যাইব বিফলে
তখন কিন্তু বলব আমি প্রেম কিছুই নারে


- মুজিব পরদেশী

সংযোগ: আমার সোনা বন্ধু রে


৫।


এই মধু মাসে তুমি নাই পাশে
কে খাবে গাছের পাঁকা আম রে প্রাণ শ্যাম


বৈশাখী ঝড়ে আমা কুড়াতে কেটেছে কত নিশী রাত রে বন্ধু
মিলে দু'জনে উতলা পবনে খেলিতাম প্রেমের খেলা রে বন্ধু
বিচ্ছেদের জ্বালা, অন্তর কালা, কেমনে বুঝাব তারে রে প্রাণ শ্যাম


প্রেম শিখাইয়া, মন ভুলাইয়া, রয়েছ কেন দূরে দূরে ও বন্ধু
আমি অভাগীনি, প্রেম ভিখারীনি, খুজি তোমায় দ্বারে দ্বারে ও বন্ধু
সসীমে অসীম, বলে ইব্রাহীম,দুয়ে মিলে এক ছিলাম রে প্রান শ্যাম


-মোহাম্মদ ইব্রাহীম

সংযোগ: এই মধু মাসে


৬।
[এই এত ছোট গানটা, এত ভাল লাগে যে বলে বুঝানোর ভাষা নাই।]

ফুলে ফুলে ঢ'লে ঢ'লে বহে কিবা মৃদু বায়,
তটিনী হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়
পিক কিবা কুঞ্জে কুঞ্জে কুহূ কুহূ কুহূ গায়,
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়!

- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সংযোগ: ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে




ব্লগস্পটে লেখা।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×