সবুজ পাতাটি একটু নড়ে সেখান থেকে বের হয়ে এলো এক আশ্চর্য ম্যাগপাই। দু’বিন্দু বৃষ্টি ভোরের প্রচ্ছদ খসে ভিজিয়ে দিল বৃন্তান্মূখ কিশোরী পল্লব। তখন জুনের ভোরের বাতাস রবিবারকে মহিমান্বিত করছিল হিম আর উষ্ণতার বিপরীত দোলাচলে।
আমি বসে আছি অফহোয়াইট ডাউনসোফায় ক্যাপাচিনোর ঠোঙা হাতে। কাঁচের ফাক গলে উপচে পড়ছে মর্নিংওয়াকরত মানুষের নীলাভ শর্টসের বিচিত্র চকমক।
আমি চোখ থেকে চশমা খুলে টেবিলে রাখলাম। এ এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। মূহুর্তে ঝাপসা হয়ে দুলে উঠলো কাঁচের বাইরের দুনিয়া। সবুজ, ম্যাগপাই, শারিরীক করসতে নিমগ্ন বর্ণিল শরীরসমূহ যেন ম্লান ফোটা ফোটা সবুজাভাব বুদ্বূদ হয়ে গেল নিমিষেই। আমার চোখের সামনে কাগজের কমলা ঠোঙায় ফুরিয়ে আসা ক্যাপাচিনো, ব্যবহৃত টিস্যু, কেচাপের পট আর বিলের কপি। কত সহজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই আমরা পারিপার্শ্বিক থেকে হঠাৎ। চোখ এবং অন্তরের মধ্যে দৃষ্টি ছিনিয়ে নেয় বিশ্বাসের প্রতিবিম্ব।
দূরে সবুজের ভেতর আবছা নীলের গুড়ো। ছায়াশরীর নিয়ে এগুচ্ছে মানুষের মতো সরিসৃপ। উষ্ণতা বাড়ছে ক্রমশ। শব্দের সাথে অতৃপ্তি মিশে হুল্লোড় করছে ভেতরের রেডিও।
আমি চশমা পরে নিলাম। ভেজা কান্ড শুষে নিয়েছে ভোরের জলকণা। অদৃশ্য হয়েছে ম্যাগপাইটি। ভিড় বাড়ছে সামনের চাতালে। রোদ্দূরের প্রশান্তিতে ঝলমল করছে নীলাকাশ।
একটু মাত্র ব্যবচ্ছেদ। একটু মাত্র বিরতী। একটুক্ষণের বিভ্রমে কতকিছুই না পরিবর্তিত হচ্ছে নিয়ত। সময় প্রত্যহ গিলছে কালের উচ্ছিষ্ট। আমাদের অগোচরে কতরাত, কতদিন কোটি মানুষের অন্তর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ধারণ করছে নিযুত অভিজ্ঞান। তার কতটুকু বা জানি আমি, আমরা!
আর এই না জানা অংশকে সমীহ করে জনান্তিকে বলেছিঃ
‘জীবন এত ছোট কেনে?’
আইল অফ শেফি
১২.০৬.২০২২
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০২২ ভোর ৪:০৩