স্ট্রক করলাম। স্ত্রী মোটা টাকা ঋণ করে চিকিৎসা করাল। চাকুরী এবং বেতন বন্ধ ছ’মাস। চিকিৎসা ও সংসার সব ঋণের উপরে। কি উপায় হবে? স্ত্রী বললেন, আল্লাহ ভরসা। তো যে জমির মোটে কোন ক্রেতা নেই সে জমির ক্রেতা এসে হাজির। জমি বিক্রি হলো চওড়া মূল্যে। স্ত্রী বলল, বাসস্থান বানাও। কিন্তু বিল্ডিং বানাতে গিয়ে মাঝপথে টাকা শেষ। তারপর টাকা আসবে কোথা থেকে?
জমি অন্যের দখলে। আমাদের বিপক্ষে অন্য পক্ষ মামলা করে জয়ী হয়েছে। আমরা আপিলে গেলাম।ক্রেতা সব এসে ফিরে চলে যায়। আমরা ধরেই নিলাম এ জমি বিক্রির টাকা আমাদের কপালে নাই। এদিকে বিল্ডিং যা করলাম তা’ বাসযোগ্য করতে আরো অনেক টাকার দরকার। অথচ টাকার উৎস হলো শুধুমাত্র সেই জমি।আমার স্ত্রী নেছারাবাদ (ঝালকাঠি) ইয়াতিম খানায় মান্নত করলেন মোটা টাকা।তারপর ক্রেতা এলো। প্রায় তিনকোটি টাকা দিয়ে জমিটা কিনে নিলো। বিল্ডিং বাসযোগ্য হয়ে তাতে বসবাস শুরু করলাম। মেয়ে বিয়ে দিলাম। সব ঋণ শোধ করলাম।সব মুশকিল আসান।
অফিসের সব কাজ পেন ড্রাইভে। সেটা হারিয়ে গেল। কেউ জানে না পেন ড্রাইভ কোথায়? তারপর নেছারাবাদ এতিম খানায় একশত টাকা মানত করলাম। সাথে সাথেই একজন পকেট থেকে পেন ড্রাইভ বের করে দিয়ে বলল, এই নিন আপনার পেন ড্রাইভ।
মেয়ের বিয়ে হয় না। স্ত্রীকে বললাম, যাই তবে বেলাল হুজুরের কাছে। হুজুর তদবীর দিলেন। ঝালকাঠি আসার পর স্ত্রী জানালেন। মেয়ের বিয়ে ঠিক।তারপর মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল।
যতবার গণি ততবারেই দেখি একটি সিপিও নেই। সরকারী ম্যাশিন। এবার না চাকুরী নিয়ে টান বাজে। কিন্তু এমন কঠিন নিরাপত্তার ভিতর ওটা চুরি হলো কেমন করে? অফিস সহায়ক দিয়ে অনেকবার ম্যাশিন গণালাম সেও বলল, একটা সিপিও নেই। মনে অনেক অশান্তি নিয়ে বিষয়টা সুরাহার জন্য নেছারাবাদ ইয়াতিম খানায় দু’শত টাকা মান্নত করলাম। তারপর দিন অফিস সহায়ককে বললাম সব সিপিওর নাম্বার কাগজে লিখ দেখি কোন সিপিও হারিয়েছে। সে সব সিপিওর নাম্বার কাগজে লিখে বলল, স্যার সব সিপিওরে নাম্বারই তো আছে। আমি বললাম তাহলে গণনায় একটা কম হলো কেন? তুমি আবার সিপিও গুলো গণনা কর। সে গণনা করে বলল, সিপিও সবগুলোই আছে। তারপর আমি গণনা করে দেখলাম সব সিপিও আছে। সাথে সাথে গিয়ে ইয়াতিম খানায় দু’ইশত টাকা দিয়ে আসলাম।
আমার এক বস। কিছুতেই বদলী হতে পারছিলেন না। তারপর তিনি নেছারাবাদ মোটা টাকা মান্নত করলেন। তাঁর বদলী হয়ে গেল। তিনি কড়কড়ে নোটের মোটা অংকের টাকা নেছারাবাদ দিয়ে আসলেন। নেছারাবাদের (ঝালকাঠি) রাস্তার পাশে বড় দান বাক্স আছে। রাস্তার দু’ধারে দু’জন টাকা কুড়ানি সব সময় থাকে। তিন সিপ্টে প্রতি দিন ছ’জন টাকা কুড়ায়। গাড়ি যেতে যেতে রাস্তায় টাকা পড়তে থাকে আর টাকা কুড়ানিরা টাকা কুড়াতে থাকে। মান্নতের টাকা কিন্তু মান্নত পুরণ হলে দেওয়া হয়। এত্ত লোকের মান্নত পূরণ! ইয়াতিমরা ভালো ভাবে খেয়ে দেয়ে লেখা পড়া করছে। সকলি আল্লাহর ইচ্ছা। মান্নতে লোকের মুশকিল আসান হয় এবং তাতে ইয়াতিমের রিজিক মিলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:০১