somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আঙ্গুরি (শেষ পর্ব)

৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আঙ্গুরি-১পড়েছেন, তারা দয়া করে এ পোস্টের ২ নম্বর সিকোয়েল থেকে শুরু করুন


এবারের গল্পটা আমাদের সহপাঠী পলাশুদ্দিন তমালকে নিয়ে। ওর গল্পটা বহুদিন ধরেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। এ নিয়ে আঙ্গুরির সাথে মাঝেমধ্যে আলাপও করেছি। আঙ্গুরি উৎফুল্ল হয়ে বলতো- খুব ভালো হবে গল্পটা। লিখে ফেলো। গল্পের বাঁক, রহস্য কোথায় কী হবে, সে আমাকে বলতো।
পলাশুদ্দিন তমাল আমাদের ক্লাসের ফার্স্টবয় ছিল। আঙ্গুরি তার প্রেমে পড়েছিল। গল্পে সেই প্রেমের কাহিনিটাই বলবো বলে ভাবছি। কিন্তু তাতে কোনো ট্র্যাজেডি না থাকলে কি গল্প জমবে? আঙ্গুরি খুব অনুনয় করে বললো- না, ট্র্যাজেডি করো না প্লিজ।

আমাদের পলাশুদ্দিন তমাল খুব নিরীহ, ভাবুক এবং অন্তর্মুখী স্বভাবের। সে শুধু দূর থেকে দেখে আর কল্পনা করে। কাছে গিয়ে মুখটি খুলে বলতে পারে না- ‘বাহ, তোমার নখগুলো সুন্দর তো!’ মেয়েটি হয়ত এ কথায় অবাক হয়ে ফিরে তাকাবে আর কপাল কুঁচকে চোখ সরু করে বলবে- ‘এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি; হুট করেই মেয়েদের নখ দেখে বখাটে ছেলেরা।’ অমনি সে লাজে সংকুচিত হয়ে মাথা নীচু করবে আর মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দেবে- এতকিছু থাকতে সে মেয়েটির নখ দেখতে পেলো কীভাবে? তার চুলগুলো খুব লম্বা; কোমর অব্দি ঝুলে পড়েছে। বলতে পারতো, ‘তুমি কিন্তু খুব সুন্দর করে হাঁটো!’ তখন পলাশুদ্দিন তমালের খুব মন খারাপ হবে, অপমানিত বোধ করবে। আর বেশ কিছুদিন উদাসভাবে আকাশের মেঘ দেখে বেড়াবে।

তারপর একদিন বিকেলে পলাশুদ্দিন তমাল আমার কাছে আসবে। তার চোখমুখ উজ্জ্বল। খাটের উপর আয়েশ করে শুয়ে শুয়ে খুব সুন্দর করে গল্পটা আওড়াবে- ‘হায়, মেয়েরা এমন হয় না কেন?’ তার চোখে একটা মেয়ে ভেসে উঠবে, যাকে সে দেখে নি কোনোদিন, চেনে না; কোনো এক অদ্ভুত কারণে একদিন সেই মেয়েটি তার সামনে এসে পড়বে।

পলাশুদ্দিন তমালের হাত ধরে মেয়েটা এমনভাবে কথা বলতে লাগলো যে তারা বাল্যকাল থেকেই পরিচিত, এক ক্লাসে পড়েছিল বহুকাল ধরে, এমনকি মেয়েটা তাকে ‘তুই’ ‘তুই’ করে কথা বলতে বলতে যখন কাঁধে হাত রাখলো এবং একসময় দুষ্টুমি করে মাথার চুল ধরে ঝাঁকি দিল, তখনো পলাশুদ্দিন তমাল শুধু অবাক হয়েই বলতে থাকলো, ‘আমি তো আপনাকে চিনতে পারছি না। আপনি ভুল করছেন।’
‘না, কোনোকালেই ভুল হবে না। আমরা পালামগঞ্জ হাইস্কুলে একসাথে পড়েছি, জয়পাড়া কলেজে একসাথে পড়েছি, এমনকি তুই আমাকে সাইকেলে করে নিয়ে আসতি তাও ভুলে গেছিস? আমার নাম আঙ্গুরি। মনে নাই?’
স্কুল আর কলেজের নাম ঠিক আছে। সাইকেলের কথাটাও ঠিক আছে। বাকি কিছুই ঠিক নাই। ‘আঙ্গুরি’ কারো নাম হতে পারে, এমনকি এমন অপরূপা একটা মেয়ের নাম আফরিনা কিংবা তাসলিমা না হয়ে পশ্চাৎপদ ‘আঙ্গুরি’ নামটা কেন হলো তাও সে বুঝতে পারছে না।
‘আমরা একসাথে জয়পাড়া হলে সিনেমা দেখতাম। মনে নাই? নদের চাঁদ সিনেমা দেখার পর বাড়ি ফিরতে আমাদের রাত হয়ে গিয়েছিল। তোর বাপে তোকে খুব মেরেছিল। মনে নাই?’
নদের চাঁদ সিনেমা সে দেখেছিল, সেটা ঠিক। কিন্তু সাথে ছিল শাহজাহান আর শাহজাহানের বউ। সেই রাতে শাহজাহান পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে, তারপর থেকে উধাও।
মেয়েটা ওর বাহুতে ধাক্কা দিয়ে বলে, ‘তুই কিন্তু খুব দেমাগ দেখাচ্ছিস। আমার মতো সুন্দরী একটা মেয়ে আগ বাড়াইয়া কথা বলতেছে তো, তাই এখন তোর দাম বেড়ে গেছে। আমার নাম আঙ্গুরি। মনে পড়ে?’
‘নাহ! আপনি ভুল করছেন।’
‘আরে ঐ-ঐ-ঐ হারামি- আমি আঙ্গুরি আঙ্গুরি আঙ্গুরি। বড়ো বাড়ির আঙ্গুরি। চোখ বড়ো কইরা আমার চোখের দিকে চাইয়া দেখ। আমি আঙ্গুরি।’ বলতে বলতে আঙ্গুরি পলাশুদ্দিন তমালের দুইগাল দুইহাতে টেনে ধরে একদম মুখের কাছাকাছি গিয়ে বললো- ‘এত হারামি হইলি কেমনে, আমারেও ভুইলা গেলি? একটা সুন্দরী মেয়েরে কেউ ভুলবার পারে, এইটা আমারে বিশ্বাস করতে বলিস?’

পলাশুদ্দিন তমাল এখানে এসে থামে। ওর চোখের সামনে আঙ্গুরির গাল টেনে ধরার দৃশ্যটা আমার চোখেও ভেসে ওঠে। সে খুব আবেশিত হয়। জানালা দিয়ে বহুদূর ওর দৃষ্টি চলে যায়, যেখানে ধানফলানো মাঠের দিগন্তে দুটো ছায়া ধীর ছন্দে দুলতে থাকে। মিষ্টি আলো ওর সমস্ত অবয়বে।

‘এমন গল্প মেলানো যায় না। অন্যকিছু কল্পনা করিস না কেন?’ আমি বলি।
পলাশুদ্দিন তমাল ধীরে ধীরে বলে, ‘আমি কি মেলাতে চাই? একটা মমতাবতী মেয়ে, আমার প্রতি খুবই অনুরক্ত, অথচ আমি তাকে চিনি না, আমার হাত ধরে সে গা লেপ্টে থাকে, আমি বিরক্তির ভান করি, আসলে এটা আমি খুব করে চাই- অনন্ত সময়ের এমন একটা স্নিগ্ধ গল্প চাই। আহা, যদি এমন হতো!’

পলাশুদ্দিন তমাল একদিন একটা মধুর স্বপ্ন দেখলো। সারাদিন সে আনন্দে ঘুরে বেড়ালো। আমাকে একবার এসে বলেও গেলো স্বপ্নের কথাটা, কিন্তু গল্পটা বললো না, কারণ, বলে ফেললেই মজাটা শেষ হয়ে যাবে। আমিও গল্পটা জানার জন্য খুব উদ্‌গ্রীব হলাম এবং বার কয়েক মিনতিও করলাম, কিন্তু সে বললো না। একদিন বিরস মুখে এসে বললো- ‘স্বপ্নটায় আর মজা পাচ্ছি নারে।’
‘কেন?’
‘ধূর!! এত দেখলে কি আর মজা থাকে?’

একটা মেয়ে এক রাতে বিপদে পড়েছিল। খুব অভিজাত বংশের মেয়ে। সাউথ সিটির এক পার্কে বসে সে রাতের আকাশ আর ঝলমলে ঢাকা শহর দেখছিল। বেকার পলাশুদ্দিন তমাল সেই পার্কে খোলা সামিয়ানার নীচে ঘাসের বিছানায় শুয়ে আকাশে জোসনা খুঁজছিল। ঐ সময়ে কয়েকটা লম্পট এসে মেয়েটার সাথে বাজে আচরণ করতে থাকলে পলাশুদ্দিন তমাল তাকে নায়কোচিত বীরত্বে রক্ষা করে নিজের কুটীরে নিয়ে যায়। মেয়েটা সেই দরিদ্র কুটীরে কয়েকদিন থাকে এবং পলাশুদ্দিন তমালের সাথে নানা জায়গায় ঘুরে আনন্দে সময় কাটায়। তার ভালো লাগে পলাশুদ্দিন তমালের সাহচর্য। সে খুব প্রীত হয় এবং মনের মধ্যে একটা ভাব জন্ম লয়। একদিন নর্থ সিটির কয়েকজন পুলিশ এসে মেয়েটাকে উদ্ধার করে। পলাশুদ্দিন তমাল জানতে পারে, মেয়েটার নাম ঐশ্বরিয়া রাই। সে বিশ্বসুন্দরীরের মধ্যে সুন্দরীতমা। সে বাংলাদেশে এসেছিল ভারতের শুভেচ্ছা দূত হিসাবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেদ করে সে রাতের ঢাকা দেখতে বেরিয়েছিল। কুটীর থেকে বিদায় নেয়ার সময় সে হোটেলের ঠিকানা দিয়ে যায় এবং দেখা করতে বলে।
যেদিন পলাশুদ্দিন তমাল টাকা ধার করে দামি পোশাক ও জুতা কিনে বাবু সেজে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সাথে দেখা করতে গেলো, তখন লাউঞ্জে নামিদামি সেলিব্রেটিরা তাকে বিদায় জানানোর জন্য সার বেঁধে দাঁড়িয়ে গেছেন। নিজের পরিচয় বিশদ ভাবে বিধৃত করার পর সে সারিতে দাঁড়ানোর সুযোগ পেলো। সদাশয়া ঐশ্বরিয়া তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ঠিক সেভাবেই মিষ্টি করে হাসলেন, যেভাবে আগের সবার সাথে হাসি বিনিময় করেছেন, যেমন করে স্বল্প-পরিচিত কিংবা অপরিচিত মানুষদের সাথে সৌজন্য বিনিময় করতে হয়। পলাশুদ্দিন তমাল খুব আশা করেছিল, আজকের এই মহতী ক্ষণে এই নামজাদা ব্যক্তিবর্গের সামনে মহাশয়া তাকে সপ্রশংস সম্মানে আলিঙ্গনাবদ্ধ করবেন। কিন্তু ঐশ্বরিয়া চোখের ঝলকে একটু রোশনাই ছুঁড়ে দিয়েই পরের মানুষটার সামনে গিয়ে যখন কাঁটায় কাঁটায় ১০ মিনিট ধরে হাত নেড়ে নেড়ে, ঘাড় দুলিয়ে, হাসি ছড়িয়ে খোশগল্প করে তার দিকে তাকিয়ে থেকেই পরের জনের সামনে পা বাড়ালেন, তখন সে আবিষ্কার করলো- ‘তুচ্ছ’ আর ‘অভিজাত’-এর মাঝখানে যে পার্থক্য- তা কোনোদিন পূরণ হবার নয়। সে মনে করলো, তার পায়ের কাছে যে একদঙ্গল দূর্বাঘাস দলিত হচ্ছে, তার বিক্ষিপ্ত ডালপালায় বা মাটির শরীর ঘেষে খাদ্যান্বেষণে ছুটে চলা পিঁপড়াদের মধ্যে সেও একজন, যে কিনা সামনে বিচরণত একটা সাদা হাতি দেখে বিস্ময়ে মূক হয়ে তাকিয়ে আছে।

পলাশুদ্দিন তমাল কোনোদিন ‘রোমান হলিডে’ বা ‘সাদমা’ ছায়াছবি দেখে নি। তা সত্ত্বেও কী করে তার মনে এই গল্প জন্ম নিল তা আমাকে ভাবিয়ে তুললো। নিজেকে এমন চরিত্রে কল্পনা করাকে কোন অভিধায় ডাকা হয় আমার জানা নেই। ‘রোমান হলিডে’ বা ‘সাদমা’ ছায়াছবির গল্পকারদের স্বভাবও ঠিক এমনটাই কল্পনাবিলাসী হয়ে থাকবে। মানুষ মাত্রই কল্পনাপ্রিয় এবং অভিমানী। অভিমান হলো আমার সবচাইতে দামি সম্পদ। কল্পনায় প্রতিটা মানুষই নিজের অভিমানকে ফুলিয়ে বড়ো করে আর সগৌরবে সমুন্নত রাখে।


পলাশুদ্দিন তমালের এসব ভাবতে ভালো লাগে যে, সবাই তাকে খুব ভুল বোঝে, অথচ সকল ভুলের উর্ধ্বে থেকে নিজেকে নির্লোভ, নির্দোষ, দৃঢ়চেতা, সৎ ও দুঃসাহসিক ভাবতে সে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসে।
একদিন দুপুরে হঠাৎ পলাশুদ্দিন তমাল এসে হাজির। ওকে দারুণ চঞ্চল ও খুশি দেখাচ্ছিল।
‘দোস্ত, সেই স্বপ্নের কথাটা শুনবি?’
আমি হেসে দিয়ে বলি, ‘এতে নাকি আর মজা নাই?’
‘হুম। পরে ভেবে দেখলাম, স্বপ্নটা আসলে খুবই মজাদার।’ তারপর পলাশুদ্দিন তমাল ওর স্বপ্নের কথা বলতে থাকে।

গুলিস্তানের গোলাপ শাহ’র মাজার থেকে বাসে উঠলাম। দেশের বাড়ি বেড়াতে যাবে। ঢাকা-মাওয়া সড়ক ধরে শ্রীনগরের ভেতর দিয়ে দোহার উপজেলায় ঢুকবো।
সকাল সাড়ে আটটার বাস কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে আটটায় ছাড়লো। ৪০ সিটের বাসে জনা দশেক প্যাসেঞ্জার। এর আগে এত অল্প মানুষ নিয়ে গাড়ি ছাড়তে দেখি নি।
বাবুবাজার ব্রিজের গোড়ায় গিয়ে বাস থামলো। একজন দুজন করে উঠতে উঠতে প্রায় সবগুলো সিট ভরে গেল। পাশের সিটটা তখনও খালি পড়ে আছে দেখে আমি অবাক হচ্ছিলাম।
বাস ছেড়ে দিল। ব্রিজ পার হবার পর যেখানে গাড়িটি থামলো সেখানেই মেয়েটি দাঁড়িয়ে ছিল। মেয়েটি তরতর করে বাসে উঠে পড়লো, আর আমার মনে আনন্দ ঝিলিক দিয়ে উঠলো। ভেতরে একটি মাত্র সিটই খালি রয়েছে, অতএব সম্রাজ্ঞী এই সিটে না বসে কোথায় বসবেন?
‘এক্সকিউজ মি!’ ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখি মেয়েটি খুব মিষ্টি হেসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে। ‘আপনার পাশে কি বসতে পারি?’ আমি গলে গেলাম। ‘অবশ্যই। অবশ্যই।’ বলতে বলতে বসা থেকে প্রায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলাম।
‘অনেক অনেক ধন্যবাদ।’ আরেকবার মিষ্টি হেসে আমার দিকে সে তাকালো, আর আমার বুক কাঁপতে থাকলো।
‘দেশে যাচ্ছেন বুঝি!’
‘জি! আপনি?’
‘আমিও। কোথায় নামবেন?’
‘হলের বাজার।’
‘বাহ, দারুণ তো! আমিও ওখানে নামবো।’
মেয়েরা এত সহজে ছেলেদের আপন করে নিতে পারে তা আমি এ জীবনে বিশ্বাস করি নি। সে আমার সেল নাম্বার নিল, তার সেল নাম্বার আমাকে দিল। তারপর আমাদের মধ্যে অনর্গল কথা চলতে থাকলো। সে যখন হাসে, মনে হয় তার হাসির সাথে আমি মিশে থাকি। সে যখন গাঢ় চোখে আমার দিকে তাকায়, আমি কোথায় যেন হারিয়ে যাই। সে খিলখিল করে হাসে, খলখল করে তার সর্বাঙ্গে আলো ঝরে।

একটা বিদ্‌ঘুটে ব্যাপার ঘটতে থাকলো। মেয়েটার বামপাশে উলটো সাইডে বসা একটা লোক বার বার আমার দিকে ক্রূর চোখে তাকাচ্ছিল। হিংসা! পরশ্রীকাতরতা! পুরুষ মানুষ এমনই। একটা সুন্দরী মেয়ে আমার পাশে বসেছে, আর অমনি তার গতর জ্বলতে শুরু করেছে। তবে, মেয়েটিও এ বিষয়টি খেয়াল করেছে। সেও মাঝে মাঝে লোকটার দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে ইশারায় জবাব দিয়ে দিচ্ছে- বামন হয়ে চাঁদের পানে হাত বাড়িয়ো না। খবরদার!

হলের বাজারে বাস থামলে আমরা নেমে পড়ি। মেয়েটি কোন দিকে যাবে আমি জানি না। সে একটা রিকশার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
‘আসুন না!’ আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে সে আমাকে তার রিকশার সঙ্গী হতে আহ্বান জানালো। আমি একবার জোরে মাটিতে পা ঠুকলাম- নাহ, স্বপ্ন নয়, বাস্তবেই এসব ঘটছে।... এটুকু আমি কল্পনা করছিলাম।
এরপর যা দেখলাম তার জন্য আমি আদৌ প্রস্তুত ছিলাম না। মেয়েটি রিকশায় উঠলো, আর তার পাশে গিয়ে চেপে বসলো ঐ লোকটা, বাসের ভেতরে যে-লোকটা তার উলটো সাইডে বসে ছিল।
যেতে যেতে দুজনেই আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকলো। আমি তাদের দিকে বোকার মতো তাকিয়ে থাকলাম। কিছু দূরে গিয়ে মেয়েটা ঘাড় উঁচু করে একবার পেছনে তাকালো, তারপর হাত নাড়িয়ে টা-টা জানালো আর শেষবারের মতো সুন্দর করে হাসলো।

আমি উৎসুক হয়ে পলাশুদ্দিন তমালকে জিজ্ঞাসা করি, ‘তারপর?’
সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকায়। বলে, ‘তার আর পর কী? আঙ্গুরি বাসায় চলে গেল, আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলাম।’
আমি চেয়ে দেখি, পলাশুদ্দিন তমাল একধ্যানে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে, আমার চোখের গভীরে কোন্ রহস্য লুকিয়ে রেখেছি, ও হয়ত সেগুলো হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকলো।



পলাশুদ্দিন তমাল দীর্ঘক্ষণ ওয়েটিং রুমে বসে থাকার পরও ব্যারিস্টার সাহেবার সাক্ষাৎ পায় না। এত ব্যস্ত তিনি! শহরের নামজাদা, ডাকসাইটে অ্যাডভোকেটগণ তার কাছে নস্যি, তার বাগ্মিতার তোড়ে সবাই ফালি ফালি হয়ে যায়।
ওর ঝিমুনি পাচ্ছিল। এমন সময় দরজা খুলে যায়; খট খট শব্দে পা ফেলে বের হোন ব্যারিস্টার সাহেবা। হাই হিলের শব্দে উঠে দাঁড়াতেই আঙ্গুরির সাথে চোখাচোখি হয়।
‘ওহহো রে!! কী সর্বনাশ! আমি একদমই ভুইলা গেছিলাম যে তুই আসছিস।… কী যে করি! আচ্ছা, তুই কি প্লিজ কষ্ট কইরা একটু কাল সকালে আসবি? অলরেডি আমি লেট, একটা মিটিঙে যাইতে হবে।’
এরপর পলাশুদ্দিন তমাল আর কিছু ভাবতে পারে না। ওর গল্পগুলো এভাবেই হঠাৎ শুরু হয়ে হঠাৎ মাঝপথে থেমে যায়, কখনো পরিণতি পায় না, বা ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’ ধরনের হয় না।

আমি পলাশুদ্দিন তমালের এ গল্পটার একটা সার্থক সমাপ্তি সৃষ্টি করার কথা ভাবতে থাকি। তবে, আমার কাছে মনে হয় হুট করেই ওর কল্পনায় গল্পগুলো শুরু হয়ে যায়, একটা নির্দিষ্ট জায়গায় এসে, যেখানে ওর অভিমান খুব তীব্র ও ঘনীভূত হয়, যেখানে ওর নির্মোহ ব্যক্তিত্ব প্রকটভাবে জাজ্বল্যমান হয়ে ওঠে, যার কাছে পূর্বাপর সবকিছু ম্লান ও তুচ্ছ হয়ে যায়, সে ঐ অবস্থানটা ধরে রাখতে চায় অনন্তকাল ধরে; কারণ, এখানেই ওর পরম সুখ। সেজন্য ওর গল্পের কোনো সমাপ্তি নেই, কিংবা বলা যায়- এটাই ওর গল্প সমাপ্তির বৈশিষ্ট্য।
কিন্তু গল্পের শেষটা কী হবে তা মেলাতে গিয়ে আমাকে বেশ হিমশিম খেতে হয়। অন্যের গল্পে সমাপ্তি টানা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না কোনোকালেই, যা আমার ছাত্রজীবন থেকেই মজ্জাগত। আমরা স্কুল-কলেজে বা ক্লাবের কালচারাল ফাংশানে ধারাবাহিক ‘গল্প বলা’ প্রতিযোগিতা করেছি। আমাকে কেউ কোনোদিন দলে রাখতে চায় নি, কারণ, আমি গল্প ভালো বুঝতে পারতাম না, আমার অংশে এসে এমন গুলিয়ে ফেলতাম যে, আমার পরের জন আর তা গুছিয়ে উঠতে পারতো না, ফলে আমাদের দলের সাড়ে-সর্বনাশ ঘটতো, আর আমার ব্যক্তিগত পয়েন্টে সামান্য মার্সি-নাম্বার ছাড়া আর কিছুই জুটতো না।

একবার হলো কী, আমাদের ৪জনের দলে আমি ৩ নম্বরে। শুরুটা হলো শাহজাহানকে দিয়ে এভাবে- ‘জামালুদ্দিন লাগাম একদিন স্কুলে যাচ্ছিল। ঐ পথে সোহানাও যাচ্ছিল। এমন সময় বৃষ্টি এলো। সোহানা বৃষ্টিতে ভিজে কাকের বাচ্চা হইয়া গেলো। সে বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ‘বাঁচাও’ ‘বাঁচাও’ বলে চিৎকার জুড়ে দিল। জামালুদ্দিন লাগামের কাছে কোনো ছাতা ছিল না, তাই সে সোহানাকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে পারলো না।’
করিম ছিল দ্বিতীয় গল্পকার; বলা শুরু করলো- ‘এমন সময় সেখানে একটা রিকশা এলো; সোহানা রিকশায় উঠে হুড টেনে দিল। জামালুদ্দিন লাগাম একলাফে রিকশায় উঠে সোহানার পাশে গিয়ে বসলো। সোহানা লজ্জা পাইয়া রিকশা থেকে নেমে গেলো। জামালুদ্দিন লাগাম একাই রিকশা নিয়া হাঁটতে লাগলো।’
তখন আমার পালা। আমি বলা শুরু করলাম- ‘জামালুদ্দিন লাগামও রিকশা থেকে নেমে গেলো এবং তার হাতের ছাতা ফুটাইয়া সোহানাকে দিল। সোহানা বললো, তোমার ছাতা আমি একা ইউজ করবো কেন, তুমিও ছাতার নীচে আসো। তারা দুইজনে ছাতার নীচে গেলো। ক্যাটস এন্ড ডগস বৃষ্টির মধ্যে দুজনে হাঁটতে হাঁটতে স্কুলে যাইতে লাগলো। চলতে চলতে তারা মিষ্টি মধুর কথা বলতে থাকলো। অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের ভালোবাসা শুরু হলো। একদিন তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করলো। গল্পটা এখানেই শেষ হইল।’
পুরো অডিয়েন্সে হাসাহাসি। আমাদের সবার অংশেই যথেষ্ট হাসির উপাদান ছিল। কিন্তু আমার অংশ ছিল মারাত্মক। আঙুরি ছিল আমার পরের গল্পকার। সে হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না, কারণ, ওর বলার কিছু অবশিষ্ট নাই। করিম বললো জামালুদ্দিন লাগামের কাছে ছাতা নেই, আর আমি ওর হাতে ছাতা ধরাইয়া দিলাম; যে-সোহানা রিকশায় পাশে বসতে লজ্জা পেলো, সেই আবার জামালুদ্দিনের সাথে একই ছাতার নীচে চলে গেলো। এবং, বলা নেই কওয়া নেই, ভালোবাসাবাসিও শুরু করাইয়া দিলাম। এখানেই শেষ না, পালিয়ে গিয়ে বিয়েও করিয়ে দিলাম! আমাদের দলের সবাই আমার উপর ভীষণ চটে গিয়েছিল। এবং আমরা ব্যাপক ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় রাগে-দুঃখে আঙ্গুরি আমার চুল ধরে পিঠে একটা ভয়াবহ কনুই বসিয়ে দিয়েছিল।

পলাশুদ্দিন তমালের গল্পটা আমি দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে, এর নির্যাসটুকু নিয়ে পূর্বাপর সাজিয়ে নিলাম আমার মতো করে। আদতে এ গল্পটা আমার, অথবা পলাশুদ্দিন তমাল- যে কারোরই হতে পারে; কিংবা হতে পারে আপনাদেরও যে কারোর।

আমাদের আঙ্গুরি যেদিন বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য হয়ে শপথ গ্রহণ করলো, গর্বে আমাদের বুক ভরে উঠলো। বিভিন্ন এলাকা থেকে সদলবলে নেতাকর্মীরা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আঙ্গুরির বাংলোয় এসে ভিড় করলো। একদিন আমরা সহপাঠিরাও আঙ্গুরিকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য আমাদের স্কুলের মাঠে বিরাট আয়োজন করলাম।
সকাল থেকেই আমাদের আনন্দ ধরছিল না। আহা, এমন সৌভাগ্য কয়জনের ভাগ্যে জোটে? এই সেই আঙ্গুরি, যার সাথে আমরা এই স্কুলে একই ক্লাসরুমে বসে পড়ালেখা করেছি, একই ল্যাবরেটরিতে ব্যাঙ আর তেলাপোকা ব্যবচ্ছেদ করেছি; জ্বলন্ত রোদে মাঠের চোরকাঁটা তুলেছি। আঙ্গুরি খুব দুষ্টুমি করতো। চোরকাঁটা তুলে আমাদের গায়ে ছুঁড়ে মারতো। একবার পলাশুদ্দিন তমাল খুব রেগে গিয়ে আঙ্গুরির পিঠে ধুমধাম করে তিনটা কিল বসিয়ে দিলে ‘ওরে বাবারে’ বলে আঙ্গুরি মাঠের মাঝখানে শুয়ে পড়ে গলা ফাটিয়ে কেঁদে দিয়েছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারি নি, কিন্তু হেডস্যার একটা সোমত্ত মেয়ের গায়ে হাত তোলার অপরাধে পলাশুদ্দিন তমালের পিঠে একটা আস্ত খেজুরের ডাউগা ভেঙে এর বিচার করেছিলেন।
আঙ্গুরি প্রাণ খুলে হাসলে আমাদের প্রাণ জুড়িয়ে যেত। আমরা আঙ্গুরিকে খুব ভালোবাসতাম। ওর মতো মেধাবী, মিশুক আর প্রাণোচ্ছল সহপাঠিনী সবার ভাগ্যে জোটে না। ও আমাদের গর্ব, আমাদের অহঙ্কার। ওর সবচাইতে বড়ো গুণ, ও সবাইকে আপন করে ভালোবাসতে পারে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পলাশুদ্দিন তমাল অনুপস্থিত। আঙ্গুরির মন খুব খারাপ হয়ে গেলো। আমাদের মাসুদ, শুভ, শামীমা, বীথি, প্রমুখ সহপাঠী নেতারা মাননীয়া সাংসদের উদ্দেশ্যে যাবতীয় স্তুতিবাক্য বর্ষণ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষ করলে আঙ্গুরি বললো- তোরা চল, ওর বাসায় যাই।
জীর্ণ কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে এলো পলাশুদ্দিন তমাল। ওর গায়ে একটা স্যান্ডো গেঞ্জি, পরনে লুঙ্গি, কাঁধে গামছা। চেহারায় কোনো হীনমন্যতা নেই, লজ্জা নেই এত সাধারণ বেশভূষায় আমাদের সামনে এসে দাঁড়ানোর জন্য, যেন আমরা ওর ঘরের মানুষ, সহোদর-সহোদরা, প্রতিদিনকার ঘরোয়া অভ্যাসের মতোই স্বাভাবিক নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায় সে আমাদের সাথে আলাপ শুরু করলো।
‘আসলি কীভাবে? গাড়ি কই?’ পলাশুদ্দিন তমাল ঠান্ডা স্বরে প্রশ্নটা করে।
আঙ্গুরি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা কলকল খলবল করছি।
‘আমরা হেঁটে এসেছি। তোদের গ্রামে আসার রাস্তাটা খুব বাজে।’
‘হু।’ পলাশুদ্দিন তমাল যথাস্বভাবে বলে।
‘আমারে অভিনন্দন জানা। বল, কংগ্রাচুলেশনস।’ আঙ্গুরির কথায় সে মিটিমিটি হাসে, তারপর বলে, ‘তোর জন্য অনেক অনেক দোয়া।’
পাড়াপ্রতিবেশী, সারা গাঁ থেকে মানুষ এসে জড়ো হয়েছে। কেউ কেউ সড়কে শ্লোগান তুলছে নেত্রীর নামে।
পলাশুদ্দিন তমালের মা আনন্দে ছটফট করতে করতে এক গ্লাস লেবুর শরবত এনে দিলেন আঙ্গুরির হাতে। আঙ্গুরি শরবত নেয়ার আগে নীচু হয়ে পা ছুঁয়ে সালাম করলে খালাম্মা আরো উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। তার এই ভাঙা বাড়িতে কোনোদিন মেম্বার চেয়ারম্যানরাও আসেন না। শুধু ভোটের মওশুম এলে তাদের দেখা মেলে। কিন্তু আজ তার বাড়িতে চাঁদের হাট- খোদ এমপি সাহেবা এসে হাজির। তাঁর ছেলের বান্ধবী এমপি, যাকে ‘তুমি-তুমি’ করে কথা বলা যায়- এ গর্বে তার বুক ফুলে যাচ্ছে। তিনি মনে মনে প্রার্থনা করছেন, এই মেয়েটি যেন মন্ত্রী হয়। মন্ত্রী হয়ে আবার এলে তিনি মন্ত্রীর মাথায় হাত রেখে দোয়া করবেন।
বেশ কিছুক্ষণ তারা এ বাড়িতে থাকার পর বিদায়ের পালা।
‘তুই চল আমাদের সাথে।’ আঙ্গুরি বলে পলাশুদ্দিন তমালের উদ্দেশে।
‘নাহ, একটু ক্ষেতে যাইতে হবে।’
‘আমি তোদের গ্রামে একটা কলেজ করার প্লান করছি। তোদের ডাইয়ারকুম গ্রামটা খুব ব্যাকডেটেড।’
পলাশুদ্দিন তমালের বাম ঠোঁটের কোণটা সামান্য একটু বেঁকে গেলো।
এই তো মোক্ষম সময়। খালাম্মা এগিয়ে এসে বললেন, ‘ও মা, আমাদের কলেজটা পরে হইলেও চলবো। এই যে রাস্তাটা আছে না, এই রাস্তাটা বানাইয়া দেও। আমরা যাতে এক বাড়ি থনে আরেক বাড়ি যাইতে পারি। ভোটের আগে সবাই বলে রাস্তা কইরা দিব, কিন্তু পরে আর কেউ করে না।’
আঙ্গুরির মুখে সামান্য অন্ধকার দেখতে পাই। ওর মাথা নীচু হয়ে আসে।
পলাশুদ্দিন তমাল আমাদের সাথে বাড়ির বাইরে এসে বিদায় জানালো। আমরা ওদের ভাঙা কুঁড়েঘর পেছনে ফেলে একটি ভাঙা রাস্তায় নামলাম, যেটি অনাদিকাল থেকে হয়ত অনন্তকাল পর্যন্ত ভাঙাই থাকবে, আমাদের আঙ্গুরি কলেজ, ইউনিভার্সিটি করে দেবে এই গ্রামে, কিন্তু ভাঙা রাস্তাটি মেরামত করে দিয়ে ওদের এ-পাড়া, ও-পাড়া, অন্যগ্রামে যাওয়ার পথ সুগম করে দেবার কোনো তাগিদই হয়ত মিলবে না ইহজনমেও।


২৯ মার্চ ২০১৯



সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৭
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×