somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রম্যরচনা : জাঙিয়া

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন হাফপ্যান্টেও চেন থাকে,ছোটোবেলায় আমাদের বোতাম ছিল। তিন বোতামের এক আধটা খসে যেত প্রায় প্রায়। স্কুল যাওয়ার ঠিক আগে সে শূন্যস্থান আবিষ্কার হতেই, শাঁখা থেকে সেফটিপিন খুলে মা টেঁকে দিত ততক্ষণাৎ। সন্তানের লজ্জা নিবারণে মায়ের এই first aid কার্যকরী ছিল নিঃসন্দেহে, কিন্তু যে কুস্থান রাখতে ঢাকতে এই তৎপরতা অধিকাংশ সময়ে তার first aid আবশ্যক হয়ে পড়তো..! অতঃপর কলঘরে গিয়ে ডেটল.. বোরোলীন.. লাল ওষুধ..!!
এ যন্ত্রণা তো কেবল শরীরী নয় কারণ 'ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে'। আমার ওখানে যে কিছু একটা আছে.. সেটাকে অবহেলা করার, সেটাকে গুরুত্ব না দেওয়ার মায়ের এই উন্নাসিক মানসিকতায় মরমে মরেছি বারবার, গর্জে ওঠা হয়নি কখনও। তবে অচিরেই এই বিপদ থেকে রক্ষা করলেন বাবা। একদিন অফিস ফেরত হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন - "এখন থেকে এটা পরবে।" আস্ত একখান নতুন জাঙিয়া....!!!!!
এর আগে লুকিয়ে চুরিয়ে বাবার জাঙিয়া পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নেচেছি। নাচতে গিয়ে দেখেছি সবই নাচছে। মন খারাপ হয়েছে খুব। এই প্রথম নিজের সাইজের টাইট ফিটিং একখান জাঙিয়া হাতে পেয়ে যারপরনাই শ্লাঘা অনুভব করলুম। বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতায় দু'চোখ ভরে এলো। বুঝতে পারলুম বায়োলজিকাল কারণেই আমার সমস্যাটা বাবা বুঝেছে, মায়ের বোঝার কথা নয়। আরো বুঝলুম, সেফটিপিন যাতে ফুটে না যায় সেজন্যই ছেলেরা জাঙিয়া পরে, পরতে হয়..!
বোতাম থেকে চেনে উত্তীর্ণ ক্লাস সেভেনে, ফুলপ্যান্ট। খাকি প্যান্টের নীচে লাল জাঙিয়া। ক্লাস এইটে জীবনবিজ্ঞান শিক্ষক বীরেন বাবু ফুলেদের পরাগমিলন, আর ব্যাঙেদের যৌনজীবনের চ্যাপ্টার সবে শেষ করেছেন। কিন্তু ফুল বা ব্যাঙ কেউই জাঙিয়া পরে না। জাঙিয়া পরার প্রকৃত কারণ জলের মতো পরিষ্কার হলো পটলাদার পাল্লায় - "তাহলে কী বুঝলি, এ হলো উত্থান পতনের বিজ্ঞান..! উত্থানে শৌর্য, পতনে বীর্য..!"

''জাঙিয়া পরার রহস্য উন্মোচন.. এসব আজ ছেলেমানুষি মনে হয় ভায়া'' - হরিপদদা বিড়ি ধরালেন। "আসলে জাঙিয়া পরা নয়, জাঙিয়া ছাড়ার রহস্যটাই বুঝি জীবনের গল্প..! বাবাকে দেখেছি আজীবন নিজের জাঙিয়া নিজে হাতে কাচতে, তারে মেলতে, শুকোতে দিতে। তারপর জাঙিয়া ছেড়ে দিলেন। তারে শুকোতো সাদা সুতির ঘের দেওয়া অ্যান্ডারওয়্যার..! সেও গেল সময়ে। শেষদিকে ক্যাথিটার.. পাতলা চাদর। কাঠের চিতায় সুতোটি নেই। যেমন এসেছিলেন, তেমনি চলে গেলেন। রইল পরে চশমা, লাঠি, জামা, পাজামা, সেভিং সেট আর... জাঙিয়া...!!!"
.
কৃতজ্ঞতা ..... আমার বন্ধুবর সৌরভ।


সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:১৭
১৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×