আমাদের চঞ্চল হলো এক নম্বর এর ফাঁকিবাজ, কিন্তু বস কে তেল মারতে এক নম্বর..
বস যা বলবে চঞ্চল করতে দৌড়োবে | অফিসের কাজ তো বটেই , ছেলের স্কুল এর ফিস দেওয়া , মেয়ের নাচের ড্রেস নিয়ে আসা সব চঞ্চল করতো |
আমাদের তখন এম ডি হয়ে এলেন চক্রবর্তী সাহেব | যথারীতি চঞ্চল, চক্রবর্তী সাহেবের প্রিয় হয়ে উঠলো কিছু দিনের মধ্যেই |
কোথায় ওনার গাড়ি সার্ভিস করা , ছেলের স্কুল এর প্রজেক্ট করে দেওয়া , মেয়ের অর্গান টিচার ঠিক করে দেওয়া , সব-ই চঞ্চল।
এমনকি চক্রবর্তী সাহেব এর বৌ শপিং করতে যাবে , সেখানে সঙ্গে যাবে কে, কেন চঞ্চল | আমাদের তো খুব হিংসে হতো , যে বেটা এই করে প্রমোশন বাগাবে |
এই রকম চলছিল ভালোই | হঠাৎ করে একদিন সকালে খবর এলো চক্রবর্তী সাহেবের এর মা মারা গেছেন | অফিস খালি করে আমরা চললাম ওনার বাংলো তে |
এম ডির মা মারা গেছেন বলে কথা | সবাই খুব দুঃখ দুঃখ মুখ করে ঘুরছে | এক এক জন কে তো দেখে মনে হচ্ছে তার নিজের ই মা মারা গেছে |
কিন্তু আমরা অবাক হলাম!!
চঞ্চলকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না | চক্রবর্তী সাহেব এর বাড়ির এই অবস্থা, ও তো সব ব্যবস্থা করবে, কিন্তু সে বেপাত্তা।
আমরা আলোচনা করতে লাগলাম কোথায় গেলো | কেউ বলে ফুল কিনতে গেছে, কেউ বলে খাট কিনতে গেছে, কেউ বলে পুরোহিত খুঁজতে গেছে।
কিন্তু না, খাট, ফুল, পুরোহিত সব এসে গেলো, চঞ্চলের দেখা নেই | স্কোর বাড়াবার এতো ভালো সুযোগ হাতছাড়া করলো।
যাই হোক একসময় সাহেবের মা কে নিয়ে গাড়ি এগিয়ে চললো শিবতলা শ্মশানের দিকে | আমরাও সাহেবের পিছন পিছন চললাম | হাজার হোক এম ডির মা | অফিসএর কাজ চুলোয় যাক |
শ্মশানে গিয়ে দেখা গেলো সেদিন যেন মরার ধুম পড়েছে। প্রায় ১৫-১৬ টা মৃতদেহ অলরেডি লাইন এ। দুটো চুল্লি হলেও প্রায় ৮-৯ ঘন্টা লাগবেই ।চক্রবর্তী সাহেবের ফর্সা মুখ এই অবস্থা দেখে লাল হয়ে উঠছে ক্রমশ |
হঠাৎ দেখা গেলো দুই নম্বর বডিটা আস্তে আস্তে উঠে বসছে । সবাই হই হই করে উঠলো | আরে এতো চঞ্চল।
"স্যার স্যার, আপনার মা কে যাতে কষ্ট করে লাইন দিতে না হয় তাই আমি লাইন দিয়ে রেখেছি!!"
.
।।।।।।।মরাল ।।।।।।।।
★তেল মারারও একটা সীমা থাকা উচিত★
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৯