somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালদ্বীপে সাবমেরিনে করে সমুদ্র তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ

৩০ শে জুলাই, ২০১২ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত দেশ মালদ্বীপ। প্রকৃতি এখানে পাখা মেলেছে অবারিত স্বাধীনতায়। আর এ কারণেই মালদ্বীপের আয়ের প্রধান উৎস পর্যটন।

প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক মালদ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে যাচ্ছেন পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে। পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র মালদ্বীপেই বিশালাকায় সাবমেরিনে করে সমুদ্র তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে।

মালদ্বীপে বাস করে বিরল প্রজাতির পানি কাটা পাখি। এক ঋতুর দেশটির উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম মিলে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ছোট ছোট দ্বীপ। এ দ্বীপগুলোর সমন্বয়েই সৃষ্টি মালদ্বীপ।

মালদ্বীপের বর্তমান জনসংখ্যা তিন লাখের কিছু বেশি। মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক মালে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। এছাড়া মালদ্বীপের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কল্যাণে পর্যটকরা অনায়াসে ছুটে বেড়াতে পারেন এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে।

পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সাবমেরিনে করে সমুদ্র তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ। যা পর্যটকদের ১২০ ফুট গভীর সমুদ্র তলদেশ পর্যন্ত নিয়ে যায়। পৃথিবীর আরেক সুন্দর জগত গভীর সমুদ্র তলদেশে বিশাল বিশাল মাছ, গাছ গাছালি, ভয়ংকর প্রাণি, উঁচু-নিচু পাহাড় দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা।

প্রাণ ভরে ছবি তোলেন তারা। সমুদ্র তলদেশে ভ্রমণ এতই রোমাঞ্চকর যে বার বার ফিরে আসতে ইচ্ছে করে মালদ্বীপে। হয়ও তাই । প্রতি বছর পুরানো পর্যটকরা সঙ্গে কওে নিয়ে আসেন তার প্রিয়জনকে।


সমুদ্র উপকূলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য রয়েছে সাফারিবোর্ট। যা উপকূল থেকে পর্যটকদের নিয়ে যায় গভীর সমুদ্রে। সৌন্দর্য পিপাসুদের দেয় অনাবিল আনন্দ। এক একটি সাফারিবোর্ট ১৫ থেকে ২০দিনের জন্য ২০ থেকে ২৫ জন পর্যটক নিয়ে পাড়ি জমায় গভীর সমুদ্র ভ্রমণের পথে। সাফারিবোর্টে ভ্রমণের অংশ হিসেবে পর্যটকরা অক্সিজেন, ওয়াটার প্রুফ জ্যাকেট নিয়ে পাড়ি জমায় অজানার উদ্দেশ্যে। সঙ্গে থাকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত গাইড।

মালদ্বীপের আরেক বিস্ময় হল সমুদ্রের মাঝখানে স্কয়ার সাইজের কয়েক কিলোমিটার জায়গা। যেখানে নেই কোন সাগরের ঢেউ মনে হয় পুকুরের পানির মত নীরব হয়ে আছে। এই জায়গায় পর্যটকরা নির্ভয়ে সাতার কাটে। স্পিডবোটে চড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।

পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য মালদ্বীপে রয়েছে প্রায় ২শতের বেশি সাফারিবোর্ট। মালদ্বীপের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসছে হাজার হাজার পর্যটক। এ কারণে শত শত হোটেল রিসোর্ট সব সময় থাকে মুখরিত।


মালদ্বীপের একটি রিসোর্টের নাম রাঙ্গালিয়া। এতে রয়েছে পানির নিচে বিশেষ রেষ্টুরেন্ট। সেখানে গিয়ে একবেলা খাবার খেতে ব্যয় হয় এক হাজার ইউএস ডলার। দাম এত উচ্চ হওয়ার পরও রেষ্টুরেন্টটিতে পর্যটকদের প্রতিনিয়ত ভীড় জমেই থাকে ।

সবচেয়ে মজার বিষয় হল- পর্যটকরা যখন রাজধানী মালে আসেন তখন প্রথমে তাদের মন কেড়ে নেয় একটি পার্ক। সেই পার্কে রয়েছে শত শত কবুতর। এই কবুতরের সঙ্গে পর্যটকরা মনে খুলে আনন্দ উল্লাস করে।

এর পর চলে যান সুলতান পার্কে। সেখানে গিয়ে প্রাণ খুলে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম করে। মালদ্বীপে আসা বাংলাদেশি পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশার-এর সহযোগিতায় তৈরি মালদ্বীপের রাজধানী মালের বড় মসজিদটি।

প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পর্যটকদেও ভীড় থাকে এই মসিজদটি দেখার জন্য। এছাড়া মালদ্বীপে বহু বছরের পুরানো অনেক ছোট ছোট মসজিদ আছে যা পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। মালদ্বীপের জাদুঘর পৃথিবীর সমৃদ্ধ জাদুঘরগুলোর মধ্যে অন্যতম।

এখানে রয়েছে তাদের পুরানো স্থানীয় মুদ্রা, বিশাল বিশাল মাছের কংকাল, মালদ্বীপের লোকজ শিল্পের সংগ্রহ। মালদ্বীপ শতভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশ। দেশটির প্রধান আয়ের উৎস পর্যটন। দ্বিতীয় আয় হচ্ছে মাছ ও মাছজাত পণ্য রফতানি।


সাগর থেকে মাছ ধরে বিদেশে রফতানি করে হাজার হাজার ডলার আয় করছে দেশটি। দেশটিতে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রবাসী শ্রমিক কাজ করছে। বর্তমানে মালদ্বীপে বাংলাদেশিদের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। এ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী প্রতিবছর দেশে পাঠাচ্ছেন বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা। যা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×