somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ nnএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

রোকেয়ার স্বপ্ন এবং আজকের বাস্তবতা.......

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রোকেয়ার স্বপ্ন এবং আজকের বাস্তবতা.......

"...... একদিন তার খেয়াল হল যে, তার রাজ্যের সব নারীরা সুশিক্ষা পাবে। দ্রুত সে খেয়াল পূরণ করা হল! অল্প সময়ের মধ্যে গভর্মেন্ট অসংখ্য বালিকা স্কুল স্থাপন করল। এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও উচ্চশিক্ষা পৌঁছে গেল। শিক্ষার উজ্জ্বল আলোয় কুসংস্কারের অন্ধকার কাটতে শুরু হল, এবং বাল্যবিবাহ প্রথাও বন্ধ হল। একুশ বছর বয়সের আগে কোনও কন্যার বিয়ে হবে না —এই আইন চালু হল। আর এক-কথা—এই পরিবর্তনের আগে আমরাও আপনাদের মতো বন্দিনী থাকতাম।"- এই লেখাটি ১৯০৫ সালে মহীয়সী রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের রচনা 'সুলতানার স্বপ্নে'র একাংশ। সে সময় রোকেয়ার এই লেখা ছিল ভবিষ্যতের দিক নির্দেশক।

পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে মা। কবির ভাষায়, ‘যেখানে দেখি যাহা, মায়ের মতো আহা, একটি কথায় এতো শুধা মেশা নাই।’ জগৎসংসারের শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে যে মানুষটির একটু সান্তনা আর স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের সব বেদনা দূর করে দেয়, তিনি হলেন মা। মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। প্রতিটি মানুষ পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা মায়ের। মায়ের তুলনা অন্য কারো সঙ্গে চলে না। মায়ের সঙ্গে সন্তানের নাড়ীর সম্পর্ক; তাই একটুখানি আঘাত পেলেই আমরা ‘মা’ বলে চিৎকার করি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার কাছে তার মা অতি মূল্যবান। শুধু মানুষ কেনো? পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণিই তার মায়ের কাছে ঋণী। সে ঋণ শোধ করার কোনো যথাযথ উপকরণ দুনিয়ায় সৃষ্টি হয়নি।

কন্যা-জায়া-জননী তথা নারীদের সুশিক্ষার জন্য যিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ সাল, সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি দিলেন হাইকোর্ট। শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সকল ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অভিভাবকের জায়গায় বাবা অথবা মা আইনগত অভিভাবকে রাখার নির্দেশ দিয়ে এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য যে, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগে এক শিক্ষার্থী তথ্য ফরমে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে বাবার নাম পূরণ করতে না পারায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী ঠাকুরগাঁও জেলার সেই তরুণীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে এ ঘটনার ভিত্তিতে এবং সন্তানের অভিভাবক হিসেবে মায়ের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে রিট করে।

সেই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহম্মেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেয়। একপর্যায়ে রুলের চুড়ান্ত শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রায় দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, পিতৃপরিচয়হীন সন্তান, যৌনকর্মীদের সন্তান যাদের বাবার পরিচয় নেই তারা শুধু মায়ের নাম দিয়েই ফরম পূরণ করতে পারবেন। হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে, শুধু বাবার নাম না থাকলে একজন শিশু ফরম ফিলাপ করতে পারবে না, পাসপোর্ট পাবে না এটা ঠিক না। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে সমতার কারণে বাবা অথবা মায়ের পরিচয় থাকলেই যেকোনো ফরম পূরণ বা রেজিস্ট্রেশন পূরণ করার অধিকার পাবে।

এই রায়ের ফলে এসএসসি, এইচসি পরীক্ষার ফরম পূরণ, পাসপোর্টের ফরম পূরণসহ সব ফরম পূরণে বাবা অথবা মা অথবা অথবা আইনগত অভিভাবকের নাম লেখা যাবে। এই রায়ের ফলে বাবা-মায়ের উভয়ের নাম লেখার বাধ্যবাধকতা থাকলো না। শুধু মায়ের নাম লিখেও ফরম পূরণ করা যাবে।

সব মেয়ে ও মায়েরা বেগম রোকেয়ার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হোক আমাদের আন্তরিক সমর্থন ও সহযোগিতায়। ঘরে ঘরে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের মত মানুষের জন্ম হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:১৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু "নতুন" ব্লগারের জন্মের কারণই হচ্ছে আমার ব্লগিং

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:০৯



আমরা নতুন নতুন ব্লগারের আগমণের জন্য উৎগ্রীব; সম্প্রতি বেশ কয়েকজন এসেছেন; এদের ২/৪ জন, এসে ১টা শুভেচ্ছা পোষ্টও লেখেননি, তার আগেই আমার পোষ্টে ঝাপ দিয়ে পড়েছেন মন্তব্য করতে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

পুঁজিবাদের আত্মরক্ষায় নেটো গঠিত হয়েছে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:০৭



সোস্যালিজম ও কমিউনিজম পুঁজিবাদীদেরকে তাদের শ্রেণী শত্রু ঘোষণা করে তাদেরকে খতম করার ঘোষণা প্রদান করে।তখন পুঁজিবাদী রাষ্ট্র সমূহ সোস্যালিজম ও কমিউনিজম এর হাত থেকে আত্মরক্ষায় নেটো গঠন করে।পুঁজিবাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিভ্রান্তি (কিঞ্চিৎ রম্য)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৩১


বয়স
সাবেক এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল জীবনের আয়-উন্নতি নিয়ে। কথা প্রসঙ্গে বয়সের বিষয়টা সামনে এল। জিগ্যেস করলাম, স্যার, আপনার বয়স এখন কত চলে?
উনি বললেন, ৩৬।
আমি একটু অবাকই হলাম। ৫ বছর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে পাঁচ জন ডাক্তার!

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৫০

বাংলাদেশের একজন রোগীর জন্য কমপক্ষে পাঁচ জন ডাক্তার!

বিশ্বাস হয়না?
তাহলে আপনার অফিসে, গলির কোনো টং দোকানে অর্থাৎ যেখানে অন্তত জনা পাঁচেক লোক আছে- সেখানে কাউকে বলবেন-'আমার মাথা ব্যথা করছে'/'আমার পেট খারাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বান্তনা

লিখেছেন জটিল ভাই, ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:২৬


(ছবি নেট হতে)

আমি নতুন নতুন ব্লগারের আগমণের জন্য উৎগ্রীব; সম্প্রতি বেশ কয়েকজন এসেছেন; উহারা ২/৪ জন, এসে ১টা শুভেচ্ছা পোষ্টও লেখেননি, কারণ, উহারা আমার শিষ্যকে লইয়া জয়গান করিতে জানেনা বিধায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×