somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

মুখরা রমনী বশিকরণ মন্ত্র.....

১৪ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুখরা রমনী বশিকরণ মন্ত্র.....

আমাদের বাড়ির দুই দিকে আমার দুই চাচা, দুই ফুফুর বাড়ি পাশাপাশি। আবার আমার দুই মামাদের বাড়িও অনতি দূরে। আমার বারো বছর বয়স পর্যন্ত আমাদের যৌথ পরিবারে আমার বড়ো হওয়া। আমার যখন দশ বছর বয়স তখন আমার ফুফাতো বোনের বিয়ে হয় ততকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার কোটালিপাড়া থানার কুশলা ইউনিয়নের এক বনেদী পরিবারে। বর-কনে উভয় ঢাকা শহরের বাসিন্দা হলেও রেওয়াজ অনুযায়ী বরের গ্রামের বাড়িতেও মহা ধুমধামে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন হয়েছিল। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিলো। আমরা শতাধিক স্বজন আপাকে (ফিরতি নাইওর) আনতে যাই গোপালগঞ্জে।

তখন ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ-কোটালিপাড়া যাতায়াত করা ছিলো বিরাট ঝক্কির ব্যাপার। বরিশাল ও ঢাকা থেকে রিজার্ভ বাস, মাইক্রোবাস, কার বহর নিয়ে সকালে যাত্রা করে গোপালগঞ্জ- কোটালিপাড়া পৌঁছাতে রাত আটটা। তারপর বেশ কিছুটা পথ হেটে কুশলা চৌধুরী বাড়ি পৌঁছাতে হয়েছিলো। তখন ঐ এলাকায় কারেন্ট ছিলনা। ৩০/৪০ মিনিটের হাটা পথ পুরোটাই ৪/৫ টা হ্যাজাক লাইট আর পাঁচ ব্যাটারি টর্চ লাইট জ্বালিয়ে বর পক্ষ নিয়ে যায়।

আমাদের সাথে অন্যান্য মালপত্র ছাড়াও পাঁচ মন রসগোল্লা ছিলো। রসগোল্লা নিয়ে আসা হয়েছিল বরিশালের বিখ্যাত "গরবরান" নামের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান থেকে। হাটা পথে সকল ভাড়ী মালপত্র এবং মিষ্টির হাড়িগুলো আমাদের মতো কিশোর তরুণদের হাতে দেওয়া হয় বয়ে নেওয়ার জন্য। আমি ছোট তাই আমার হাতে কোনো লাগেজ দেওয়া হয়নি। মিষ্টির হাড়িও দেয়নি কিন্তু আমি ইচ্ছে করেই একটা মিষ্টির হাড়ি নিজ হাতে বয়ে নেই। তখন শীতকাল ছিলো। হ্যাজাক লাইট আর অনেক গুলো টর্চ লাইটেও কুয়াশায় ১৫/২০ ফিট সামনে দেখা যেতো না...পথ চলতে চলতেই আমি গোটা দশেক রসগোল্লা খেয়ে ফেলি। আমার ইমিডিয়েট বড়ো তিন কাজীনদের ফুসলিয়ে মিষ্টি খাওয়াই যাতে আমি একাই ধরা না খাই.....

বিয়ে বাড়িতে যাওয়া কণে পক্ষের বিশাল বহরে আমিই কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলাম। আপার অনেক জন ননদ ননদিনী সবাই বয়সে বড়ো- কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট। যখন আমরা বিয়ের অনুষ্ঠানে যাই তার কিছুদিন আগেই আমার মাথা ন্যাড়া করা হয়েছিল!
একেতো আমি ছোট তার উপর আমার মাথা ন্যাড়া। আমার বিয়াইনরা আমাকে পেয়ে বসে। সারাক্ষণ আমাকে ক্ষেপায়। একজন বিয়াইন আমার মাথায় টোকা দিয়ে সুর মিলিয়ে বলে, "নাইড়্যা মাথায় কাউয়ার মল, টাক দিলে যায় বরিশাল"! এর সাথে অন্যসব বেয়াইনরাও আমার মাথায় টোকা দিয়ে সুর করে কোরাস কণ্ঠে "নাইড়্যা মাথায় কাউয়ার মল, টাক দিলে যায় বরিশাল"- বলে আমাকে ক্ষেপাতে থাকে....

কিছুক্ষণের জন্য আমি দমে যাই!

পরক্ষণেই বুদ্ধি করে বলি- "যে আমার মাথায় টোকা দিয়ে ওইসব পচা কথা বলবে- সে আমার বৌ হবে!"
আমার বলা মন্ত্র কাজে লাগে। আমাকে নিয়ে কেউ আর ছড়া কাটে না.... কারণ, এই ন্যাড়ার বৌ হতে কেউ রাজী না!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:১৭
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×