somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটা সন্ধ্যা পুষে রাখে কিছু নীলচে বিষণ্ণতা

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিসুত্রঃ পিন্টারেস্ট।

কিছু বিকেল আসে তীব্র বিষণ্ণতা নিয়ে। শেষ বিকেলের রক্তিম আভায় দুঃখ গুলোকে মনে হয় গ্যাস বেলুনে উড়িয়ে দিই। টুপ টুপ করে ঝড়ে পড়া শিশির বিন্দু কাশফুলের ডগায় আলতো করে ব্যথার পরশ বুলিয়ে দেয়, সেই শিশিরের ভেজা অনুভূতি কারো হৃদয়ে হাহাকার তুলে দেয় একান্তই আপনার কারো জন্য। মনে হয় এই বিকেল এর ধূসর বিষণ্ণতা শ্যাম্পেন এর বুদুবুদ এর সাথে একাকার হয়ে যাক। কিন্তু নীল অপরাজিতার মত চুপটি করে হৃদয়ের গহীনে কিছু ব্যথা জমে থাকে। আদতে কিছু হাহাকার পুষে রাখতে হয় আয়নায় লাগানো টিপের মত। পলাশ রাঙ্গানো রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে বহুবার আমি তীব্র অভিমান ভুলে আকাশপানে ভালবাসা বিলিয়েছি।

এই যে তীব্র আলোর ঝলকানি চারদিকে, ট্রেনের হুইসেল, অথচ ফেরার তাড়া নেই। কারণ এই ট্রেন এখন অন্যমুখি। এভাবেই ধীরে ধীরে কখন আমাদের জীবনের গতিপথ বদলে যায় আমরা টের পাই না, হয়তোবা পেতে চাই না। আমরা আমাদের মত ভাবতে পছন্দ করি কিন্তু জীবনের হিসেব অন্য। দিনশেষে অপেক্ষা আর উপেক্ষার দোলাচলে সবকিছু গুলিয়ে যায়। সন্তানের জন্য মায়ের অপেক্ষা, কিংবা হাসপাতালের করিডোরে বাবার ক্লান্ত, বিধ্বস্ত চাহনি, ভাইয়ের অক্সিমিটার এ তাকাতে গিয়ে দম আটকে আসা । এই বুঝি কিছু হয়ে গেল, সবই ভালবাসা। তবু কোথাও না কোথাও আমরা হেরে যায়। হয়তোবা হেরে যেতে হয়। খুব ভালবাসার কারো সাথে হারাতেই বোধহয় একধরণের জিত লুকিয়ে থাকে। কিংবা হার জিতের প্রশ্নই এখানে অবান্তর।

প্রিয়তম, তুমি কেমন আছো?
ভেবো না এটা কোন চিঠি না। এটা আমার একান্তই এলোমেলো কিছু অনুভূতি। শেষ যে বার চিঠি নিয়ে তুমি খুব বিরক্ত হলে, তারপর আর কখনো তোমাকে চিঠি দেয়ার ইচ্ছে হয়নি, খামবন্দী করে ফেলে রেখেছি। কিন্তু নতুন বছরে খুব ইচ্ছে হল রংধনু রঙে একটা চিঠি হোক এবার। দেখো, হয়তোবা তুমি চাওনি বলে ঈশ্বর ও চায়নি। এখন তো শুধু অপেক্ষা ........

এই তো কয়দিন আগেও ভাবছিলাম, আমাদের দেখা হোক কুয়াশা ভেজা শান্ত, বুনো ফুলের মাদকতায় ভরা লন্ডন ব্রিজে। হয়তোবা আমাদের দেখা হোক শেষ ট্রেনে। বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে নাহয় আরেকবার আমার ছণ্ণছাড়া জীবন গতি খুঁজে পেত। খুব ইচ্ছে হত শিউলি কুড়াতে গিয়ে একটা ভোর কুড়াই দু'হাতে তোমার সাথে। সে আর হয়ে উঠেনি ।

হলিউড, বলিউড না ; দেরিদা, ফুঁকো, সিডনি শেলডন থেকে শুরু করে সাদাত হোসাইন হয়ে আমরা আবার হুমায়ূন আহমেদ এই থামতাম। সেসব এখন বাকির খাতায় পড়ে গেল। আমাদের তথাকথিত কোন ভ্যালেন্টাইন্ কিংবা ফাল্গুন নেই। কিন্তু আমার লেপ্টে যাওয়া কাজল জানে কতবার শহীদ মিনার পার হতে গিয়ে আমি আমূল কেঁপে উঠেছি। প্রতিটা আঠা ছেড়ে দেয়া টিপ জানে, প্রতিটা শ্বাস- প্রশ্বাস এ তুমি কতটা কাছের ছিলে।
অন্য অনেকের মত তোমার গল্প, কবিতার কোথাও আমি নেই। নাইবা থাকলাম, আমার গল্পজুড়ে বরং তুমিই থাকো।

জীবন বোধহয় অতিমাত্রায় নাটকীয়তা পছন্দ করে। নাহলে, এমন কেন হবে বলতো? ঝুম বৃষ্টিতে বহুদিন ব্যঙের ঘ্যানর ঘ্যানর শুনতে শুনতে চা'য়ের কাপ নিয়ে বসা হয়নি। এই সেদিন ও হলো না। এক কাপ চা'য়ের জন্য এতটা হাহাকার জমে যাবে আমি কখনো ভাবি নি।
জীবনে কখন কি ঘটে যায় আমরা কেউ জানি না। তবু ও আমরা স্বপ্ন দেখি। কোন চাওয়া পাওয়ার হিসেব নিকেশ এ আমি যেতে চাই না। এ শহর কিংবা অন্য কোন শহরের হ্যালোজেন এর আলোয় এক কাপ চা'য়ের আবদার তুমি পুষিয়ে দিও।

আবার নাহয় কোন জ্যোৎস্না মাখা সন্ধ্যায় শার্টের হাতা গুটিয়ে দিতে গিয়ে তোমায় ছুঁয়ে দিব। বহুদেশ পরে তুমি ভালো থেকো।
যখন কিছুই করার থাকেনা, অভিধানে একটা শব্দ শুধু আলগোছে থেকে যায়, অপেক্ষা.....

সেই অপেক্ষার নোনা ব্যথার ওপারে তুমি ভালো থেকো,
তুষার শুভ্র কন্টকাকীর্ণ সমস্ত পথ পেরিয়ে নিজেকে শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে গড়ে তোল।
ভাল থেকো প্রিয়।
সেদিনের মত আবারো বলছি.... পরাহত জীবনের কোন এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আবারো হাতে হাত রাখার আহবান জানাবে কি ??
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৮
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×