কথিত আছে এক ব্যাক্তি কোন এক বিজন এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় কুৎসিত কদাকার বিশ্রী চেহারার একটি অবয়ব দেখলো। লোকটি তাকে জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি কে?" অবয়বটি উত্তর দিলো "আমি তোমার বদ আমল। তোমার অন্যায় অনাচার আর পাপের দৃশ্যই আমি।" লোকটি তখন জিজ্ঞাসা করলো,"তোমার থেকে মুক্তির উপায় কি?" সে তখন বল্লো," তুমি রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর। যেমন হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে, রাসুল (সাঃ) বলেন, তোমরা আমার উপর দরুদ শরীফ পাঠ করো। কেননা এটি তোমার জন্য পুলসেরাতের অন্ধকারে নূর ও জ্যোতির কাজ দেবে। জুম্মার দিন যে ব্যক্তি আমার প্রতি ৮০ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবে, আল্লাহ তার ৮০ বছরের গোনাহ ক্ষমা করে দিবেন।"
জনৈক ব্যাক্তি রাসুলের উপর দরুদ পাঠের ব্যাপারে বেশ গাফেল বা উদাসিন ছিলো। লোকটি একদিন স্বপ্নে দেখলো রাসুল (সাঃ) তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। লোকটি রাসুল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলো," হুজুর আপনি কি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট?" রাসুল (সাঃ) জবাব দিলেন," না, আমি তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট নই।" লোকটি তখন প্রশ্ন করলো," তাহলে আপনি আমার দিকে ফিরে তাকাচ্ছেন না কেন?" রাসুল (সাঃ) বল্লেন, "তার কারণ, আমি তোমাকে চিনি না।" তখন লোকটি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলো," হুজুর! আমাকে না চেনার কি কারন? অথচ আমি আপনার একজন উম্মত এবং অলি আউলিয়াগন বলে গেছেন, পিতা যেমন পূত্রকে চিনে, আপনি আপনার প্রতিটি উম্মতকে তার থেকেও বেশী চিনেন।" তখন রাসুল (সাঃ) বল্লেন, "উলামায়ে কেরামগন ঠিকই বলেছেন। কিন্তু তুমি আমাকে দরুদ পাঠের মাধ্যমে স্মরণ করো না। উম্মতের প্রত্যেক ব্যাক্তিকে আমি আমার প্রতি দরুদ প্রেরণের মাধ্যমে এবং তারই অনুপাতে চিনে থাকি। আমার প্রতি দরুদের পরিমান যার যত বেশী, তার সাথে আমার পরিচয় তত বেশী।" এর পর থেকে ঐ ব্যাক্তি প্রতিদিন ১০০ বার দরুদ পাঠ শুরু করেন এবং তা নিয়মিত পড়তে থাকেন। কিছু দিন পর তিনি স্বপ্নে রাসুল (সাঃ) কে দেখেন এবং রাসুল (সাঃ) তাকে বলেন," আমি তোমাকে চিনি এবং ক্বেয়ামতের ময়দানে আমি তোমার জন্য সুপারিশ করবো।"
সূত্র- মুকাশাফাতুল ক্বুলুব
হযরত ইমাম হামেদ গাজ্জালী (রহঃ)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০০