somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজের মেরুদন্ড কেন বাঁকা করতে হবে? কবে থেকে আমরা এতটা দুর্বল হয়ে গেলাম?

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ ভোর ৪:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিচিত মহলে এক পাকিস্তানী আছে। সে আমাকে ঘাটায় না, আমিও না। তার জীবনে সে কী করে না করে আমার কোনই মাথাব্যথা নাই। আমার জীবনের ব্যাপারেও তার হয়তো একই ফিলোসফি।
পরিচিত এক বাঙালি আছেন। তাঁর স্বভাব হচ্ছে পাকিস্তান বাটে পড়লেই এই লোকটার উপর চড়াও হওয়া। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্যাপারটা বুমেরাং হয়। যেমন কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের উপর ইন্ডিয়ার বিমান হামলার ঘটনা নেয়া যাক। প্রথমদিন ইন্ডিয়া দাবি করলো দুই তিনশো জঙ্গি মেরে ফেলেছে, পাকিস্তান নড়াচড়ারও সময় পায়নি। তার আগেই ঝামেলা শেষ। কাশ্মীরে হামলার চরম জবাব দেয়া হয়েছে। ইত্যাদি।
পাকিস্তান এই ঘটনায় টু শব্দ পর্যন্ত করলো না।
তো এই বাঙালি ভাই সেদিন গিয়ে পাকিস্তানিটাকে ধুয়ে ফেললো। হাসি, মশকরা, তামাশা, টিটকারি ইত্যাদি। পাকিস্তানিটা নিজের সরকারের মতই নীরব।
তারপরে ধীরে ধীরে খোদ ভারতীয় মিডিয়াতেই নানান তথ্য প্রকাশ হতে লাগলো। ভারত পুরানো স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করেছে, তিনশো জঙ্গি হত্যার কথা বলেছে, কিন্তু জঙ্গল পোড়ানো ছাড়া কোন ছবি নেই। তারচেয়ে বড় কথা, ভারত দাবি করছিল তাঁদের কোনই ক্ষতি হয়নি, কিছুদিনের মধ্যেই জানা গেল তাদের একটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে এবং তার পাইলট ধরা খেয়েছে। মোদির রাজনৈতিক নির্বাচনী স্টান্টবাজির ঘটনায় আপার হ্যান্ডে উল্টো পাকিস্তান চলে গেছে। সেই পাইলটকে মুক্তি দিয়ে ইমরান হয়ে গেল হিরো!
এই কয়েকদিন ধরে বাঙালি ভাই যে সত্যতা না বাছাই করেই লাফালাফি করছিল, এখন তাঁর মুখ কোথায় গেল?
আরেকটি উদাহরণ দেয়া যাক। সাম্প্রতিক শেষ হওয়া বিশ্বকাপে পাকিস্তান প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্টইন্ডিজের হাতে ধরা খেল। এমনই সে মার যে পরে শুধুমাত্র এই এক ম্যাচের কারণেই তারা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল। এই সুযোগ বাঙালি ভাই ছাড়বেন কেন? ওয়েস্টইন্ডিজের ক্রেডিট পুরোটাই মেরে দিলেন। আল্টিমেটলি টুর্নামেন্ট শেষে রেজাল্ট হচ্ছে,ওরা অল্পের জন্য সেমিফাইনাল স্পট মিস করেছে, পঞ্চম হয়েছে, টানা জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে। আমরা দশের মধ্যে অষ্টম হয়েছি, শেষ দুই ম্যাচেই বাজেভাবে হেরেছি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, শেষেরটি ওদের বিরুদ্ধেই ছিল।
মূল কথা হচ্ছে, আবেগ, চেতনা, দেশপ্রেম যাই থাকুক আপনার মনে, সবগুলোর ভিত্তি যেন সত্য ঘটনা নির্ভর হয়। নাহলে উল্টো আপনার সাথে সাথে দেশেরও বেইজ্জতি। এই লোকটাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিক্ষেপনের ঘটনায় এক আড্ডায় বলছিল, "যখন রকেট আকাশে উড়ছিল, আমার চোখ দিয়ে দরদর করে অশ্রু ঝরছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন!"
তার ভাষায়, যার চোখে সেদিন অশ্রু আসেনি, সে দেশপ্রেমিক নয়।
একই ঘটনা আমিও দেখলাম। আমারতো চোখ দিয়ে পানি আসেনি। আমার কী দেশপ্রেম নাই? সজীব ওয়াজেদ জয়েরও চোখে পানি দেখিনাই। শেখ হাসিনাকেও কাঁদতে দেখিনাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে এই ভাইয়ের আবেগ তাঁর পরিবারের লোকজনের চেয়েও বেশি। এতে একটা ঐতিহাসিক তথ্য শেয়ার করি, বঙ্গবন্ধুর মায়ের মৃত্যুতে তাঁর চেয়ে বেশি কেঁদেছিলেন খন্দকার মোশতাক। বাকিটা বুঝে নেন।
কথা প্রসঙ্গে বলি, আরেক ভাইকে চিনি, যিনি মার্কিন মুল্লুকে বাসকারী প্রতিটা বঙ্গসন্তানকে জামায়াত শিবির আর রাজাকার গণ্য করেন। কেন? কারন ১৯৭১ সালে নিক্সনের অ্যামেরিকান সরকার পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। "এই সত্য জানার পরেও ঐ দেশে থাকার রুচি হয় কিভাবে?"
ভদ্রলোক অধিক চেতনায় ভুলেই গেছেন বঙ্গবন্ধুর আপন মেয়ের ঘরের নাতি শুধু মার্কিন দেশে বাসই করেন না, তিনি মার্কিন রমণী বিবাহও করে একাধিক মার্কিন নাগরিকের পিতা হয়েছেন।
যাই হোক, পাকিস্তানিদের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর "নির্দেশের" কথা মনে আছে? "তোমরা ভাল থাকো, আমাদের ভাল থাকতে দাও। তোমাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক শেষ।"
খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। কোন আহ্লাদ না, কোন পীড়িত না। কোন খোঁচাখুঁচিও না। ভাব নাও যেন দুনিয়ার মাটিতে ওরা নেই। খুব কী কঠিন এমন নির্লিপ্ত থাকা? আপাতত মনে হচ্ছে অসম্ভব।
উপরে উল্লেখ করা ভাইয়ের কথাই ধরা যাক। ধরুন কোন কফি কর্নারে সেই পাকিস্তানির সাথে আপনার দেখা হয়ে গেছে। সেই লোকটিই আপনাকে জিজ্ঞেস করলেন হাউ আর ইউ? আপনি জবাবে বললেন, "ফাইন থ্যাংক ইউ।"
কথাবার্তা কিন্তু এখানেই শেষ। এমনও না যে আমি বা অন্য কোন বাঙালি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন "হাউ আর ইউ?"
এতেও বাঙালি ভাই খেপে যাবেন। "ঐ পাকির সাথে এত আলাপ আসে কিভাবে?" এবং তারপরে লম্বা লেকচার।
ইনি ভুলেই যান প্রফেশনালিজমও একটি ব্যাপার যা রক্ষা করতেই হয়। শেখ হাসিনার বাড়িতে ইমরান খানের ফোন রিং হলে তিনি বলেন না "বলে দে বাড়িতে নেই।"
তিনি ফোন তুলেন, কুশলাদি বিনিময় করেন। ওর অর্থ এই না যে তাঁর প্রেম হয়ে গেছে। বুঝতে হবে। মাথার ব্রেন খানিকটা ইস্তেমাল করতে হবে।

কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ইমরানের খানের সাম্প্রতিক ভাষণের কথাই ধরা যাক।
বাংলাদেশের মানুষের সম্পূর্ণ দুইরকম অনুভূতি দেখলাম। একদল ইমরান বন্দনায় তাঁর পূজা শুরু করে দিয়েছে। পাকিস্তানের নেতাকে ইসলামের নেতা বানিয়ে ফেলেছেন। এইটা ঠিক যে কাশ্মীরিদের নিয়ে বাকি বিশ্ব নেতারা যখন পুরাই অন্ধ ভূমিকা পালন করছেন, তখন কেবলমাত্র ইমরানই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, এবং তাঁর ভাষণে বিন্দুমাত্র ভুল নেই। আসলেই সেখানে হত্যাযজ্ঞ চলছে, কারফিউ উঠে গেলে পরে কী ঘটবে সেটাও অনিশ্চিত। মিলিটারি কোন অবস্থাতেই গণতান্ত্রিক দেশের কোন সমস্যার সমাধান না। সবই ঠিক। কিন্তু আসল প্রশ্ন উঠতে পারে এই জায়গায় যে, ইমরানের এই ভালবাসা কী "শুধু" কাশ্মীরিদের জন্যই? নাকি "নিপীড়িত মানুষের" বিশেষ করে মুসলিমদের জন্য? আরেকটু খোলাসা করলে, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে, চীনের উইঘুর মুসলিমদের ব্যাপারে এমনকি নিজের দেশের বেলুচিদের ব্যাপারে ইমরানের বক্তব্য কী? "কাশ্মীর ভাঙলে ভারতের ক্ষতি" এইটা কী তাঁর মোটিভেশন, নাকি আসলেই তিনি নির্যাতিতের রোদনে ব্যথিত? পয়েন্ট বুঝতে পারছেন?
মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখুন।
"ইমরান বলেছে" শুধুমাত্র এই কারণেই কাশ্মীর ইস্যু বাদ পরে গেছে। যেন কাশ্মীরে কী হচ্ছে না হচ্ছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথার কারন নেই, ইমরান বলেছে, তাই বাদ।
আমরা বাঙালিরা, যারা একাত্তুরের পক্ষের শক্তি, তাঁরা কিভাবে কোন লজিকে কাশ্মীরিদের বা দুনিয়ার যে কোন নির্যাতিতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখি? ওদের তিরিশ লাখ শহীদ, এবং চার পাঁচ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানি না ঘটা পর্যন্ত আমরা নিজেদের সাথে তুলনায় নিব না, এইটা কী ধরনের অমানবিক, বুদ্ধিহীন লজিক? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৭০-৮৫ মিলিয়ন মানুষের প্রাণক্ষয় ঘটেছে, এখন ওরা যদি বলে "তোমাদের মাত্র তিন মিলিয়ন মরেছে, তোমরা কোন লজিকে আমাদের সাথে তুলনা করো" - তাহলে শুনতে কেমন লাগবে? এত রক্ত, এত ত্যাগের বিনিময়ে একটি দেশ লাভ করেছি, আমাদের জন্য ফরজ পৃথিবীর যেকোন দেশে যেকোন নির্যাতিতের পাশে দাঁড়ানো। সেটা হতে পারে কাশ্মীরের জনগণ, হতে পারে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আন্দোলন। আমরা কি সেটা করছি?
ইমরানের অতীতের প্লেবয় ইমেজ টেনে এনে ওকে হেয় না করে আমরা বরং এই আলোচনা করতে পারি, কেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর ইস্যুতে কিছু বলেন নাই। রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি, বিশ্বের যেকোন প্রান্তে যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে আমাদের বাঁধা কোথায়? "বড় ভাই" রাগ করে ফেলতে পারেন বলেই কী চোখ বন্ধ করে থাকা?
শুনেছি, ইমরান বলেছিলেন তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হলে তিনি বাংলাদেশের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইবেন। তাঁর সেই কথার কী হলো? আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে শারীরিক সুস্থতা ও কুশলাদি বিনিময় ছাড়া তাঁর কী আর কিছুই বলার নেই? বিরোধী নেতা হিসেবে তিনি যখন বলতেন ৭১ এ পাকিস্তানের ভূমিকা ঠিক ছিল না, এখন বলতে সমস্যা কোথায়?
এখন আসি ভারত ইস্যুতে। পেঁয়াজ দিয়েই শুরু করা যাক। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, তাই আমাদের দেশে রাতারাতি পেঁয়াজ ধরা ছোয়ার বাইরে চলে গেল। এতে ভারত বিদ্বেষ যেমন বেড়ে গেল, পদলেহনও বড্ড স্পষ্ট হয়ে ধরা দিল কারোর কারোর ক্ষেত্রে। কোনটাই আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের লজিকে মিলছে না। ভারতের নিজেদেরই পেঁয়াজ দরকার, তাই তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, এতে ওদের গালাগালি করার কী আছে? আমার বাড়িতে যদি অন্নের অভাব থাকে, ক্ষুধার্ত শিশু ও বৃদ্ধ থাকে, আমি কী পাশের বাড়ির লোকের লাঞ্চের মেন্যু নিয়ে চিন্তা করবো?
আবার একই সাথে, একদল একেবারে ভারত বন্দনায় পঞ্চমুখ। "ওরা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলে আমাদের হালুয়া টাইট হয়ে যায়, গরু রপ্তানি বন্ধ করলে অবস্থা হয় কেরোসিন, ওরা যদি মুতে দেয় তাহলে গোখেকো বঙ্গসন্তানেরা ভেসে যাবে" - এইসব কথাবার্তা ক্যানভাসেরই কিছু ভারতপ্রেমী বঙ্গবাসীর। একটা ব্যাপার এদের কানে ধরে বুঝিয়ে দিতে পারলে ভাল হতো, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক লেনদেনের। ওরা ওদের গরু ও পেঁয়াজ আমাদের কাছে "বিক্রি" করছে, দান খয়রাত করছে না। আমরা নগদ পয়সা দিয়ে কিনছি। আমরা ওদের কাস্টমার, ওরা দোকানদার। কারোরই কাউকে নমঃ নমঃ করার কিছু নেই। ওরা কোন কারনে আমাদের কাছে বিক্রি না করলে আমাদের অন্য দোকান খুঁজতে হবে। কোন কারনে আমরা ওদের থেকে না কিনলে ওরাও অন্য কাস্টমার খুঁজে নিবে। আমাদের বরং আপার হ্যান্ডে থাকার কথা, রপ্তানি করতে না পারলে বিপুল সংখ্যক পেঁয়াজ পঁচে গলে যাবে। ওদের ঘাটতি।
ইকোনমিকসের অতি সাধারণ সূত্র বলি, মার্কেটে যখন পেঁয়াজের ডিমান্ড বাড়বে, সাপ্লাই কম থাকবে, কৃষকরা তখন পেঁয়াজ উৎপাদনে বেশি মনোযোগী হবে। আমরা এককালে কৃষিপ্রধান দেশ ছিলাম (এখন কিভাবে যেন গার্মেন্টস প্রধান দেশ হয়ে গেছি :(), এক বছরের মধ্যেই পেঁয়াজের বাম্পার ফলন আমাদের কৃষকদের কাছে ওয়ান টু হবার কথা।
আবার একই সাথে, মার্কেটে যখন পেঁয়াজের দাম আকাশচুম্বী হবে, লোকে কিনতে পারবেনা, তখন স্বাভাবিকভাবেই পেঁয়াজ ছাড়াই তরকারি খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে যাবে। মেডিটেরেনিয়ানরা অলিভ অয়েল ছাড়া অন্য কোন তেলকে গণনায় ধরে না। বাংলাদেশে কয়জন বাঙালি রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহার করেন? সবই সাপ্লাই ডিমান্ড ইকুয়েশন। ওরা পেঁয়াজ বন্ধ করবে, গরু বন্ধ করবে করুক না, অল্টার্নেটিভসতো কম নেই। আরে ভাই, আমাদের যখন রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে যায়, আমরা তখন মিষ্টির মায়া ত্যাগ করে ফেলতে পারি। সামান্য পেঁয়াজ বাদ দিতে পারবো না বলে মনে করছেন? নিজের মেরুদন্ড কেন বাঁকা করতে হবে? কবে থেকে আমরা এতটা দুর্বল হয়ে গেলাম?
প্রধানমন্ত্রী শুনলাম ভারত সফরে পানি আনতে গিয়ে উল্টো দিয়ে আসার চুক্তি করেছেন। সহমত ভাইদের মন্তব্য শুনতে আগ্রহী। আমি নিশ্চিত, সব ঘটনার মতন, এই ব্যাপারেও তাঁরা তুখোড় লজিক নিয়ে হাজির হবেন। হোক সেই লজিক বাস্তবের, অথবা তাদের নিজেদের মস্তিষ্ক প্রসূত। আমার মাথায় অন্তত এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোন ভাল লজিক আসেনি। আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর মনে হয়েছে।
কিছুদিন আগেই লিখেছিলাম, একমাত্র বাংলাদেশী গ্রোসারি দোকান ছাড়া, অন্য যেকোন দোকানে যদি ইলিশ পাওয়া যায়, সবগুলো বিক্রি হয় "প্রোডাক্ট অফ ইন্ডিয়া" নামে। আমরা বাংলাদেশী আলো হাওয়ায় বড় হয়েছি, ইলিশের গন্ধ শুঁকে বলে দিতে পারি কোনটা চাঁদপুরের পদ্মার ইলিশ আর কোনটা অন্য নদীর - আমরা যখন আমাদের জাতীয় মাছকে "প্রোডাক্ট অফ ইন্ডিয়া" হিসেবে বিক্রি হতে দেখি, তখন কার কেমন অনুভূতি হয় বলতে পারবো না, আমার একদম বুকে এসে বিঁধে।
যাই হোক, অনেক কিছু বলে ফেললাম। কারোরই পছন্দ হবার কথা না। কারোর মন রক্ষা করতে পারলাম না বলে দুঃখিতও নই। আমি না ভারত, না পাকিস্তান, কাউকেই পূজা করতে পারিনা। আবার কথায় কথায় সর্বক্ষেত্রে তাদের বিরোধিতারও পক্ষে আমি নাই। যদি তারা সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে সঠিক। যদি বেঠিক হয়ে থাকে, তাহলে বেঠিক। আমি একজন বাংলাদেশী হিসেবে, সবার আগে এইটা নিশ্চিত করবো যে আমি বেঠিক কিছু করছি না। সবার আগে নিজের বাংলাদেশকে সামনে রাখবো। কতটা কঠিন এই কাজ করা? তাহলে আমরা কেন করতে পারি না?
তারা আমাদের প্রতিবেশী, ঠুকাঠুকি হবেই, সুসম্পর্কও যেমন থাকবে, তেমনি সুশীতল সম্পর্কও থাকবে। কিন্তু নিজের আত্মসম্মানবোধ ধুলায় লুটিয়ে কেন ওদের পদলেহী হতে হবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ ভোর ৪:০৯
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×