লন্ডনে আসার পর ধর্মটাকে আরো গভীরভাবে উপলব্দি করতে পারছি। দেশে থাকতে যেখানে প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম সেখানে দু তিন ওয়াক্ত পড়াই এখন দায়সার।রাতে কাজ থেকে ফিরতে দুটা বাজে।ফজর যায় ঘুমে।যোহরটা ও আছরটা পড়তে পারি।বাকীটা কাজেই চলে যায়।তবুও যতটুকু পারি ধর্মটাকে আগলে রাখার চেষ্টা করি।
লেখাপড়াটা শুরু করা দরকার।পরিচিত বড় ভাইদের কাছে পরামর্শ চাইলাম।সবাই একই কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন।রেষ্টুরেন্টে থেকে পড়ালেখা হবেনা।সপ্তাহে তিনদিন ক্লাশ করতে হবে মিনিমাম।তাছাড়া রেষ্টুরেন্টে কাজ শেষে লেখাপড়া করার সময় কোথায়।
ব্যাপারটা ভাবালো খুব।বাবা জমি বেচে পাচলাখ টাকা আমার জন্য খরচ করে পড়ালেখা করতেই আমাকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছিলেন।সুতরাং যেভাবেই হোক আমাকে লেখাপড়া শুরু করতে হবে।
কিছু টাকা পয়সা জমলে রেষ্টুরেন্টে কাজ ছেড়ে দিলাম।বাসা খুজলাম অনেক।বাসা পাওয়া যাচ্ছিলোনা আমার সাধ্যের মধ্যে।অবশেষে উঠলাম পরিচিত এক বড় ভাইয়ের বন্ধুর বাসায়।ওনার নাম সুমন।ইউনিতে পড়েন।ইউনির পাশেই একটা ফ্ল্যাটে ছোট একটা রুমে থাকেন তিনি।একটা সিঙ্গেল বেড আছে রুমে।দুজন থাকা সম্ভব নয়।অগত্যা আমি সোফায় থাকবো ঠিক করলাম।ভাড়া পচিশ পাউন্ড।এমন ভাবে থাকতে হবে যাতে ফ্ল্যাটের অন্য কেউ বুঝতে না পারে যে এইরুমে দুজন থাকে।ব্যাপারটা ল্যান্ডলর্ড জানলে সমস্যা হবে। ভাবলাম একটা পার্টটাইম কাজ পেলে অন্য একটা বাসা খুজে নেবো।
সুমন ভাই সকালে উঠেই ক্লাশে চলে যান।ফেরেন রাতে কাজ শেষে।আমিও সারাদিন সিভি নিয়ে ঘুরি কাজের সন্ধানে।সুপারমাকেট থেকে শুরু করে সবখানেই সিভি ড্রপ করি।সকালে পয়সা বাচাতে নাস্তা করিনা।দুপুরে বেশী খিদে লাগলে দু পাউন্ড দিয়ে কাবাব কিনে খাই।এরপর রাতে সুমন ভাই ফিরলে দুজনে মিলে রান্না করে খাই।
চলবে.............

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


