আগের চিঠিটা
আমার আনন্দের আর সীমা পরিসীমা নেই সেই প্রিয় কন্ঠস্বর শোনবার পর, হতবাক চোখে বসে রইলাম কিছুক্ষণ বিমূড়ের মত যেন ঘড়ির কাটাঁ সময়কে থামিয়ে দিয়েছে আর আমাকে পৌছেঁ দিয়েছে জগতের বাইরে সেই আরশী নগরে!
বিষণ্ণতায় ভরা বিকেলটায় ঘর অন্ধকার করে টেবিলে মাথা গুজেঁ রেখেছিলাম...হাতের কাছে রাখা ফোন হঠাৎ কাপাঁ শুরু করলো...হেলো বলতেই ও পাশ থেকে অপরিচিত এক কন্ঠ ভেসে এসে কানের কাছে ডাক দিল "বিহন"? হুমম...কার আওয়াজ এটি? জিজ্ঞেস করতেই শুনতে পেলাম আমার প্রিয় নামটি "শশী", অজান্তেই চোখ কপালে উঠে মুখ হা হয়ে গেছে...সেল ফোনটা ধরে রাখার শক্তিও যেন আমি হারাচ্ছি...এক মূহুর্তে সেই অপরিচিত কন্ঠটাকে এত আপন মনে হল যে আমি চার পাশে চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগলাম আমার অবস্থান এখন কোথায়? "চিনতে পারছোনা?" চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিল, জ্বী আমি চিনতে পারছি, আপনি আমার গুরু, আরশী নগরের কুটির থেকে...কিন্তু কি করব আপনার ঘাতক কন্ঠ আমার রুহ্ পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিয়েছিল...শব্দগুলো গলা পর্যন্ত এসেও যেন পথ হারিয়ে ফেললো...হাজার চেষ্ঠা করেও নীরবতে ভাঙ্গতে পারলাম না...মন প্রাণ দিয়ে চাইছিলাম যেন সেই প্রিয় কন্ঠটা আরো কিছু বলুক আর আমি আরেকটু ঘায়েল হই...কিন্তু সেইখানেই ইতি ঘটলো...সখটা মিটলোনা তাই, অনেক সাহস করে কাপাঁ আঙ্গুলে ডায়াল করলাম নাম্বার গুলোতে...আহ! আবার সেই ঘাতক কন্ঠ...নাহ্ শশীর এতো সাহস নেই তাই নীরবে আবার ইতি ঘটালাম...এই ছিল গুরুর সাথে প্রথম কথা বলার স্মৃতি...সবচেয়ে মধুর স্মৃতি...ভাবতেও পারিনি আমার ভিষণ্ণ সময়গুলোতে এতো চমৎকার একটা উপহার পাবো যেটা বাধ্য করবে আমাকে ভিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠতে...
হয়তো প্রশ্ন জাগছে যে তাহলে কেন অচিরার তলায় ফুলগুলো নিতে আসছিনা...গুরু আপনার শিষ্য আপনার কাছে ছুটে আসতে চাইছে কিন্তু নির্দয়ী বিহন তাকে আটকে ধরে রাখছে...আপনিই তো একবার রবি ঠাকুরের একটি চরিত্রের কথা বলেছিলেন যে ছোট ছেলেটি জগৎ সংসারের মায়া ত্যাগ করেছে...গুরু, সেদিন হয়তো বলিনি কিন্তু আমি, আমার জীবনে কিছু বাজে পরিস্থিতির কারণে গত হয়েক বছর ধরে নিজের সাথে এই খেলাটি খেলছি...আপনার একটি কল যে আমাকে কতটা খুশী করেছে তা আমি বলে বুঝাতে পারবোনা, যদি আমার কষ্ঠ আর গুরু ভক্ত এক পাল্লায় রাখা হত সেখানে আকাশ আর মাটির মত তফাৎ থাকবে...কিন্তু আমি যে এখন আমারই রচনা করা খেলায় আটকে পরে গেছি, আমি চাইলেও আসতে পারবোনা...আমি মায়া নামক অনুভূতিতা খেলতে খেলতে হারিয়ে ফেলেছি...
কিন্তু আমিতো এখন শশী, আর শশীকেতো অচিরার নীচে বসতেই হবে তার গুরুর অপেক্ষায়...
ইতি
শশী...
পরের চিঠিটা
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



