somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গণভবনের ব্যাংকয়েট হলে যেভাবে সংলাপ

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বহুল আলোচিত এই সংলাপ।
সংলাপে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের ২৩ জন এবং ঐক্যফ্রন্টের ২০ জন নেতা অংশগ্রহণ করেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গণভবনে ঢুকতে দেখা যায় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের। ১৪ দলের অন্যান্ন নেতারা তার আগেই ৬টার দিকে আসেন।
বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ। ঐক্যফ্রন্টের সমর্থকরা কর্মীরা মোমবাতি হাতে গলায় ব্যানার ঝুলিয়ে তারা সংলাপ অনুষ্ঠানের ‘সাফল্য’ কামনা করে। গণভবনের এত কাছে সমাবেশ, তবু পুলিশ বাধা দেয় নি।
ঠিক সন্ধ্যা ৭টায় হাসিনা গণভবনের ব্যাংকয়েট হলে এসে সবাইকে স্বাগত জানান।
সারদিনই ব্যাস্ত হাসিনা, প্রকল্প ওপেন, জাতীয় যুব দিবসের অনুষ্ঠান ইত্যাদি শেষ করে সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

৩ঘন্টা ৪০ মিনিট কথা বার্তা চলে, আলোচলা/বৈঠকে কোন মর্ডারেটার ছিলনা। এরপরেও কোন বিশৃক্ষলা হয় নি।
শেখ হাসিনা ঠান্ডা মাথায় ৪৩ জনকে একাই সামাল দেন। কোন বাগ-বিতন্ডা ধমক বা উচ্চগলায় কাউকে কিছু বলতে দেখা যায় নি।
হাসিনার ব্যক্তিত্বের সামনে কেউই কুলাতে পারেনি।
অনেককে একাধিকবার বক্তব্য দিতে দেয়া হয়েছিল, কেউই উচ্চগলায় বক্তব্য দেয় নি। ওদের হাসিনা বধ/ঘায়েল করার প্রস্তুতি হোমওয়ার্ক ছিলনা বোঝাই যায়।
অনেকে ফালতু পার্সোনাল সমস্যার কথা বলেছেন। (এতবড় মিটিংগে পার্সনাল প্যাচাল?)

ড.জাফরুল্লাহ তার জমির সম্পুর্ন দখল পাচ্ছেন না বলে আক্ষেপ করেছেন।
মোউদুদও তার বাড়ী বেদখল হওয়ার তার হোমলেস অবস্থার অভিযোগ করেছেন।
ফকরুল ও ভাইবার মান্না জোড় দিয়ে ম্যাডামের মুক্তি চাইছিলেন। (ফকরুলের নেত্রী, সে চাইতে পারে। ভাইবার মান্না কান্দে কি কারনে?)
মুল ব্যাপার 'ফেয়ার নির্বাচন' নিয়ে কথা বরং কম হয়েছে।

প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টাব্যাপী সংলাপে বিএনপিসহ ঐক্য ফ্রন্টের ২১ নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু সংলাপে কেউই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি উত্থাপন তো দুরের কথা, উচ্চারনও করেন নি।

শুধুমাত্র দলনেতা ড. কামাল হোসেন সূচনা বক্তব্যে ৭ দফা দাবি প্রসঙ্গে বলেছেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেননি। এমনকি সেখানে বিএনপির যে নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন তারাও এ বিষয়টি উত্থাপন করেননি।

যদিও সংলাপের বাইরে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সবসময়ই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, দেশ ছাড়া করার হুমকি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে আসছিলেন।

ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রবল ব্যক্তিত্ব এবং প্রধানমন্ত্রী যেভাবে আন্তরিক আপ্যায়ন করেছেন, যেভাবে তিনি আবেগের সাথে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, সে কারণে তাঁর সামনে এ ধরনের কথা উচ্চারণ করার সাহস উপস্থিত কারোরই হয় নি।’



মির্জা ফকরুল হতাসার কথা জানালেও
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বললেন চারটি প্রাপ্তির কথা।
একটি হচ্ছে বিনা বাধায় সভা-সমাবেশ করতে পারা,
রাজনৈতিক হয়রানি/গায়েবি মামলা বাতিল হবে। মামলার তালিকা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী,
নতুন আর কোনও হয়রানি মামলা না দেওয়ার আশ্বাস ।
এবং জাতীয় নির্বাচনে অবাধে পর্যবেক্ষক নিয়োগের পথ খোলা রাখা।
নির্বাচনে সেনা বাহিনীও থাকবে।

গণভবনে সংলাপে অংশ নেয়ার আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বেইলী রোডের বাসায় বৈঠক করেন। কি কি বলবে ঠিক করেন। এখানেও কিছুটা বাগ-বিতন্ডা .. পরে সবাই একমত হয়ে তারা গণভবনের উদ্দেশে রওনা দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে একে একে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গণভবনে পৌঁছান। সন্ধ্যা ৭টায় দুই পক্ষের সংলাপ শুরু হয়। গণভবনের ব্যাংকয়েট হলে দুই পক্ষের নেতারা সামনা সামনি বসে আলোচনা করেন। বৈঠকের শুরুতেই নেতাদের আপ্যায়িত করা হয়।
এরপর দফায় দফায় চাহিদামত খাবার আসতে থাকে। মাঝে মাঝে আলাপে বিরতি, অন্ন ধ্বংশ চলতে থাকে ...


গণভবনে সংলাপ শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ড. কামাল হোসেনের বেইলী রোডের বাসায় যান।
সংলাপ শেষে মিডিয়া কর্মীরা এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মান্নার নিকট কিছু জানতে চাইলে তিনি নিরুত্তর থাকেন! বলেন লিপ ক্লোজ।
ডঃ কামালের বাসায় অনুষ্ঠিতব্য সাংবাদিক সম্মেলন সম্পর্কে বলেন...
'সংবাদ সম্মেলন হবে কিনা জানি না। হলেও সেখানে আমি থাকবো না, কারা থাকবে আমি জানি না'।
ফকরুল ও যেতে চান নি, ফকরুল মান্নাকে বলছিলেন "আপনি গেলে যান আমি যাবোনা" মান্না বলেন আমিও যাবোনা

কিন্তু একটু পরে মধ্যরাতে ওদের সবাইকেই কামালের বাসার লনে দেখা যায়।

রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ড. কামাল হোসেনের বাড়িতে। রাজধানীর বেইলি রোডের এই বাড়িতে আগে থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত। বাড়ির আঙ্গিনায় সংবাদকর্মীরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় থাকলেও ভেতরে নেতারা বসেন পরবর্তী অবস্থান নিয়ে আলোচনায়।
বাড়ির বৈঠকখানার সঙ্গে লাগোয়া বসার স্থানে বসেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। আক্ষেপ করেই মির্জা ফখরুল বললেন, ‘আপনারা ম্যাডামের জন্য একটুও বললেন না!’ তার কথার উত্তর নেই; সেকেন্ডের মধ্যেই গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘পারলে আন্দোলন করেন।’ মন্তব্য চলেছে কয়েক মিনিট, প্রতিক্রিয়া-পাল্টা প্রতিক্রিয়া। ফকরুল গজগজ করছিলেন, ‘হাসিনা তার জায়গা থেকে একইঞ্চিও নড়েননি।’ আ স ম আবদুর রব বিরক্ত উচ্চ স্বরে বলে ওঠেন, ‘তাহলে কী বলবো সাংবাদিকদের, বলেন?’ পাশ থেকে জাফরুল্লা বললেন, ‘একেবারে সব নেতিবাচক বলা ঠিক হবে না।’ আ স ম রব আবার বললেন, ‘আপনারা কে কী বলবেন, বলেন?’
নীচে শতাধিক সাংবাদিক ক্যামেরা স্যাটেলাইট কানেক্সন সহ অপেক্ষা করছিল, অনেকটা বিশৃক্ষলা ..
এরপর ড.কামাল কিছু বক্ত্যব্য রাখেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩২
১৫টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×