somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদীতে কুরবানীর গরু কেনা ও আঙ্কেলের আক্কেল গুড়ুম অবস্থা!

২২ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সৌদীতে কুরবানীর হাটটা খুব সম্ভবত দেখতে বাংলাদেশী হাট গুলির মতই হয়। আমি বাংলাদেশে থাকতে মাত্র এক কি দুইবার কুরবানীর হাটে গিয়েছি। যদ্দুর মনে পড়ে একই মনে হয়েছে।



পার্থক্য হচ্ছে এখানে তুলনা মূলক একটু বেশী সাজানো। এক এলাকায় গরু, এক এলাকায় খাসি, এক এলাকায় দুম্বা, এক এলাকায় উট। তবে কিছু কিছু খামারীর একাধিক ধরণের পশু থাকে, তাদের জন্য আলাদা একটা সাইড বরাদ্দ।

ঘটনায় যাওয়ার আগে আরও কিছু টুকটাক ইনফো দেই।

এখানে গরুর হাট সাধারণত এলাকা ভিত্তিক হয় না। একটা শহরে সাধারণত একটাই হাট হয়। গরু নিজেদের বাসায় এনে জবাই দেওয়া যায় না। সরকারী নির্দিষ্ট জায়গা আছে, সেখানে জবাই দিতে হয়। আপনি চাইলে হয়ত ওখানে নিজের হাতে জবাইটা দিতে পারবেন। তবে কাটাকাটি সব ওরাই করবে, নির্দিষ্ট ফি এর বিনিময়ে। অধিকাংশ সময়ই গরু ঈদের ২য় দিনে, এবং উঠ ঈদের তৃতীয় দিনে জবাই হয়। প্রথম দিনে সাধারণত ছাগল-দুম্বা জবাই হয়।

এবার ঘটনায় আসি।

২০১৯ সালের ঘটনা। কয়েকজন মিলে গরু কিনতে যাবো। এক বড় ভাইয়ের আব্বা-আম্মা দেশ থেকে এসেছেন, ছেলের সাথে ঈদ করবেন, সৌদীতে। আঙ্কেল যেহেতু গরু কেনায় পারদর্শী (অন্তত আমাদের থেকে), তাকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। কুরবানীর হাটের সাইজ দেখে উনি একটু অবাকই হলেন। তবে সৌদীতে যেহেতু এলাকা ভিত্তিক হাট হয় না, তাই এমন বড় হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বেশ ঘুরাঘুরি করে একটা গরু আমাদের সবার মনে ধরলো। দামাদামী করে ঠিক করা হলো ৫হাজার ৯০০ রিয়াল। তখন রিয়ালের রেট ২২ টাকার কিছু আশেপাশে। মোটামুটি ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মত হয়।

আমরা সবাই পুরা টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। গরুর খামারী কোথা থেকে একটা রং এর কৌটা এনে একটা সাইন দিয়ে দিলেন যে এটা বিক্রি হয়ে গেছে।

আমরা চলে আসছিলাম, আঙ্কেল প্রায় চিৎকার করে উঠলেন। বললেন গরু না নিয়ে কোথায় যাও? আমরা বললাম গরুতো ঈদের পরদিন নিবো। উনি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে তাহলে দাম কেন দিলে? দাম দিলে তো রশিদ কেন নিলে না?

আঙ্কেলের ছেলে একটু মাথা চুকলে বললো, আমরা কখন আসলে রশিদ নেই না। যাই হোক, আমরা আঙ্কেলের পিড়াপিড়িতে খামারীর ফোন নম্বর নিয়ে ফিরলাম।

ঈদের পরদিন আঙ্কেল আমাদের জানালেন যে উনি হাটে যেতে চান, এবং যখন আমরা দেখবো যে খামারী গরু নিয়ে চম্পট দিয়েছে, তখন আমাদের মুখের অবস্থা দেখতে চান। আমরা কিছু না বলে ৩/৪ জন চলে গেলাম উনাকে সাথে নিয়ে।

বেশ দূর থেকেই আমাদের খামারী ও গরু দেখা যাচ্ছিলো। আঙ্কেল বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেন। বললেন পুরা টাকাও দিছো, গরুও রেখে আসছে; ব্যাটা বলদ ওখানে দাড়িয়ে কি করে? ভাগে নাই কেন?

গরু নিয়ে যখন ফিরছি, আঙ্কেল অনুরোধ করলেন খামারীকে ১০০ রিয়াল বখশিশ দিতে তার সততার জন্য। খামারী বেশ অবাক হলেন, তবে বখশিশ নিতে দেরী করলেন না।

---------------

শুধু আঙ্কেল না, আমিও যখন প্রথমবার এমনটা দেখেছিলাম, আমিও সমান অবাক হয়েছিলাম। আমার মাথাতে এখনও ঠিকভাবে ধরে না যে দাম পরিশোধ করে গরু রেখে চলে আসলেও একজন খামারী কেন সেখান থেকে ভেগে যায় না! কেমন করে কোন রশিদ ছাড়াই কয়েকদিন পর গরু দিয়ে দেয়। আবার এই কয়দিন গরুর দেখভালও করে!

Photo by nousnou iwasaki on Unsplash
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২৩ দুপুর ২:৩২
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×