somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিগন্তে গোধূলী বেলায় , সংখ্যা ৩:

১০ ই অক্টোবর, ২০১০ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে মনে হয় এই দুর পাহাড়ে থেকে বাবুই এর পড়ালেখাটা হয়তোবা পিছিয়ে যাচ্ছে। বেশ অনেক দিন ধরেই কক্সবাজার রাখাইন পল্লীতে একটা নতুন হাসপাতাল এর কাজ চলছে। হাসপাতালের ডিরেক্টর খিন ওয়ান নূ গত বছর বান্দরবন এসেছিল জলকেলি উৎসবে।সেখানেই কোনোভাবে নীলিমার কথা জানতে পেরে সাথে সাথেই দেখা করতে চলে আসে।আর তখন থেকে ক্রমাগত যোগাযোগ করে যাচ্ছে যেন নীলিমা হাসপাতালটির দায়িত্ব নেয়। ভদ্রলোক একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট, থাকেন নিউইয়র্কে। হাসপাতালটির দায়িত্ব নীলিমা কে বুঝিয়ে দিয়ে তিনি ফিরে যেতে চান নিজের কাজে। সেখানে গেলে বাবুই এর পড়ার চিন্তাটা আপাতত খানিকটা হলেও কমত। কিন্তু পাহাড়ি মানুষগুলোর মায়া যেন বেঁধে রেখেছে ।এদিকে পাহাড়ি ঔষধি গাছের উপর একটা গবেষনা শুরু করেছে ইদানিং। ছোটোখাটো একটা ল্যাবরেটরি তৈরির কাজ চলছে। ফান্ডিং করছে আফ্রিকান একটা ঔষধি গবেষনা কেন্দ্র। পাহাড়ি উপজাতি সম্প্রদায় কিভাবে ঔষধি গাছের মধ্যমে নিজেদের স্বাস্থসেবা চালাচ্ছে এর উপর একটা রিসার্চ পেপার জমা দিয়েছিল নীলিমা অনেক দিন আগে। গত বছরের শেষের দিকে ওরা যোগাযোগ শুরু করে এবং এ বছরই ফান্ড দিয়েছে । এটাও একটা কারন কক্সবাজার না যেতে পারার। আর কক্সবাজার মানেই পরিচিত কারো সাথে দেখা হবার ভয়। সব মিলিয়ে আপাতত পাহাড় ছেড়ে যাবার কথা ভাবতে ইচ্ছে করছেনা।


আজকের সকাল টা একটু অন্যরকম ,মন ভালো করা একটা আবহাওয়া । আর পাহাড়ে থেকে যাবার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেও ভালো লাগছে।এখন ল্যাব এর কাজটা দ্রুত শেষ করতে হবে।পাহাড়ি আরো কিছু লোক নিয়োগ দিতে হবে ঔষধি গাছের সন্ধান করার জন্য। একজন কেমিস্ট পেলে ভাল হত। কিন্তু তা যেহেতু পাওয়া যাচ্ছেনা আপাতত নিজের সীমিত মেধা কাজে লাগাতে হবে, কি আর করা। হঠাৎ মনে হল বরিশাল যাবার আগে শফিক কে জানাতে চেয়েও পরে আর চিঠিটা লিখা হয়নি।আসলে অনেক দিন তো চিঠি লিখার অভ্যেস নেই । সেই মেডিকেল এ পড়ার সময় রাগ করে রবি কে লিখা চিঠিগুলোর কথা মনে হলে এখন হাসি পায়। মাকে অনেক চিঠি লিখতাম একসময়। তারপর আস্তে আস্তে সবার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া।

বারান্দার পাশ দিয়ে একগুচ্ছ মেঘ চেশে যাচ্ছে। দূরের পাহাড় গুলো হারিয়ে যাচ্ছে মেঘের আড়ালে। মনে হচ্ছে অনেক বৃস্টি হবে। আজ খুব বৃস্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে। দুপুরে খিচুরি খেতে পাড়লে মন্দ হয়না। এখানে একটাই সমস্যা চাইলেই সবসময় সবকিছু পাওয়া যায়না। এখন যেমন একটা ইলিশ পেলে দুপুরের মেন্যুটা বেশ পরিপূর্ণ হত। মলয় সময় মত এক কাপ চা হাতে হাজির। কিভাবে যে বোঝে ছেলেটা কখন আমার খুব চা খেতে ইচ্ছে করে। চা টা শেষ করেই কম্পিউটার এর সামনে বসতে হবে। আজ কিছু রিসার্চ পেপার পাঠানোর কথা মিঃ য্যাকব এর। নিজেও একটা পেপার তৈরি করতে হবে ইউ এস মেডিসিনাল প্লান্ট রিসার্চ ইন্স্টিটিউট এ পাঠাবার জন্য। চা টা খেয়ে মাথাটা বেশ হালকা লাগছে। অনেক কাজ জমা হয়ে আছে,শেষ করতে হবে আজকেই। আগামি সপ্তাহে নতুন কিছু প্লান্ট নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।

বাবুই টা ইদানিং সকালে ঘুম থেকে উঠতে খুব দেরি করছে। বয়সের চেয়ে একটু যেন বেশি তাড়াতাড়ি বড় হচ্ছে মেয়েটা। আট বছরের মেয়ে কোথায় কার্টুন দেখবে,কম্পিউটারে গেম খেলবে,সে কিনা কম্পিউটারে সফ্টওয়ার নিয়ে কাজ করতে চায়। মাঝেমাঝে মেয়েটাকে ওর বাবার মত আঁতেল প্রকৃতির মনে হয়। সারাটা দিন ইন্টারনেটে বসে থাকে। বারান্দায় দাঁড়ালেই এত সুন্দর সবুজ পাহাড়, নীল আকাশ,সাদা মেঘ কিছুই যেন টানেনা ওকে। নীলিমার ভাবতে খুব অবাক লাগে জেনেটিক্যালি মানুষের ভেতর কত কিছু চলে আসে। বাবুই এর অ্যাটিটিউড এ রবির এত প্রভাব। রবিকে যত বেশি ভুলতে চায় নীলিমা, বাবুই যেন ততই মনে করিয়ে দেয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×