somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেশন…

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০১ সাল, জুনের এক সুন্দর সকাল। হিউস্টনের পুলিশ ডিপার্মেন্টে ৯১১তে একটা ফোন কল আসে। আন্দ্রেয়া ইয়েটস নামের এক ভদ্র মহিলা খুব ঠান্ডা কন্ঠে একজন পুলিশ অফিসার চেয়ে পাঠান। ফোন অপারেটরের সব প্রশ্নের বার বার একই উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি, “আমার একজন পুলিশ অফিসার লাগবে”। পরবর্তী ফোন কলটি যায় ভদ্রমহিলার স্বামীর অফিসে যিনি ‘নাসা’তে কর্মরত, “এক্ষুনি বাসায় চলে আসো”। আমেরিকাতে পুলিশি সাহায্য চেয়ে কল করলে, সাহায্য পেতে মিনিট দুই-তিনের বেশি সময় লাগে না। ভদ্রলোক বাসায় ফিরে দেখেন পুরো বাড়ি পুলিশ, চিকিৎসক এবং সরকারী অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিতে ভরে গেছে। মূল ফটকে নিজের পরিচয় দিয়ে ভেতরে কী ঘটেছে প্রশ্ন করলে ভদ্রলোককে জানানো হয়, তার পাঁচ সন্তান খুন হয়েছে। এবং খুন করেছেন সন্তানদের মা। যিনি নিজে এই হত্যাকান্ডের কথা শিকার করেছেন। বাথটাবের পানিতে চুবিয়ে একে একে খুন করা হয় বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদেরকে। যার মধ্যে সবথেকে ছোট বাচ্চাটার বয়স ছিলো ছয় মাস। কেন এই হত্যাকান্ড?? প্রথমেই মাথায় আসে দাম্পত্য কলহের কথা। না তেমন সম্পর্ক তাদের ছিলো না। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক? নাহ তেমনটাও নয়। নিশ্চয় সন্তানদেরকে স্নেহ করতেন না! আন্দ্রিয়া ইয়েটস সন্তানদেরকে ভীষণ ভালোবাসতেন। তবে? এই তবে’র উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হয়ে কয়েক বছর। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় শুরু থেকেই তার পাশে ছিলেন তার স্বামী রাস্টি ইয়েটস। মিডিয়া পুরো ঘটনায় নিজেদের মতো করে একটা ইতি টানার টেষ্টা করেন, তাদের ভাষ্যমতে আসল খুনি নাকি রাস্টি ইয়েটস। তাই তিনি তার স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। রাস্টি যদি নাই খুন করবেন তবে মিডিয়ার সামনে এক সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলছেন কিভাবে! না হলে, কেন’ই বা তিনি একজন খুনি স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন? পুরো আমেরিকা তখন আন্ড্রেয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ঐক্যমত পোষণ করেন। আদালত বেশ গুরুত্বের সাথে মামলাটি পরিচালনা করেন।আন্দ্রেয়া মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন পোষ্টপার্টাম সিনড্রোমে ভুগছিলেন। আগে দুই বার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। আদালত আন্দ্রিয়াকে সন্তান হত্যার দায় থেকে মুক্ত ঘোষণা করলো। তবে তাঁকে মানসিক রোগের চিকিৎসার নির্দেশ দিল। মহিলা এখনও মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হয়তো আজীবন তাই থাকবেন।

হিউস্টনের অনুরূপ ঘটনা প্রায়শ ঘটছে আমাদের দেশে। গণমাধ্যমে দেখা যা্য, ‘সন্তানদের হত্যা করে, মায়ের আত্মহত্যা’ শিরোনামের সংবাদ। যেমন, গত ৮জুন রাজধানীর তুরাগ থানাধীন কামারপাড়ার কালিয়ারটেক এলাকার একটি বাড়ির এক কক্ষ থেকে তিন সন্তানের এবং অন্য কক্ষ থেকে মায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শান্তা(১৩), আরিশা(৯), সাদ(১১মাস) এবং মা রেহানা পারভীন(৩৪)। জানুয়ারীর ৯ তারিখে রাজধানীর দারুস সালাম থানার ছোট দিয়াবাড়ি এলাকার একটি বাড়ি থেকে দুই সন্তানসহ এক মহিলার মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুই শিশুর একজনের বয়স পাঁচ বছর অন্যজনের তিন। সন্তান দুটিকে গলা কেটে হত্যার পর মা আনিকা আত্মহত্যা করেন। ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট পিরোজপুরে কণা(২) এবং বেবি(৯মাস) নামের দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে বিষপানে আত্মহত্যা করেন মা নাজমুন্নাহার লাইজু (২৬)। ২৪ জুলাই, ২০১৬ সালে নারায়নগঞ্জে ৪০দিন বয়সের এক শিশুকে কোলে নিয়ে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন মা সোনিয়া আক্তার (২২)।

এই ধরনের ঘটনাগুলোকে আমরা অন্য আর দশটি অপরাধের ঘটনার মতো করে বিবেচনা করি। কখনো হত্যাকারীর চরিত্রকে দোষারোপ, কখনো সমাজকে দোষারোপ আবার কখনো দারিদ্রকে। বিশ্লেষকরা মতামতে বলেন, যখন কোনো মা যখন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তখন আর তার সন্তানদেরকে অনিরাপদ রেখে যেতে চাননা বলে আগে সন্তানদেরকে হত্যা করেন পরে নিজে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু কেন মায়েরা আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন এবং সন্তানদের হত্যা করেন, সেটা খতিয়ে দেখা হয় না। অবশ্য পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেশন সম্পর্কে এদেশের বেশির ভাগ মানুষই অবগত নন। পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন কী? সাইকোলজিতে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনটা সাধারণত শিশু জন্মের পরে প্রায় সব মায়েরই এমনটা হয়ে থাকে। অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। শরীরে ম্যাসিভ নিউরো-ট্রান্সমিটার বা হরমোনাল চেঞ্জের জন্য এমনটা ঘটে থাকে। এই সময়ে মায়েরা স্বামীদের খুন করে ফেলতে চায়, অথবা আত্মহত্যা করতে চায়। অথবা এমন কিছু করতে চায় যা সুস্থ মাথার মানুষ কল্পনাও করতে পারে্ননা। সাধারণত ৩০ভাগ নারী প্রসবপূর্ব বিষণ্ণতায় ভোগেন আর ৫০ ভাগ প্রসবোত্তর বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হন। পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেশনে অহেতুক দুশ্চিন্তা, উদাস থাকা, বিষাদ্গ্রস্থ থাকা এবং সন্তানের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই মা’র মনে হতে পারে তার সন্তানের মানসিক বা শাররীক কোনো খুঁত রয়েছে। কাজেই একে মেরে ফেলা ভাল। ক্ষেত্র বিশেষ মায়েরা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।

গণমাধ্যমে সন্তান হত্যার সংবাদে ছোট সন্তানটির বয়স বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বছরখানেকেরও কম দেখা যাচ্ছে। মানে এক্ষেত্রে মা হওয়ার পর শরীরে যে হরমোনাল চেঞ্জের কথা পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেশনে বলা হচ্ছে সেটার সম্ভাবনা ভেবে দেখবার মত। এছাড়াও মানসিক চাপ থেকে মুক্তির জন্য ‘মা’ সন্তানদের হত্যা করছেন। যেমন, মাহফুজা মালেক জেসমিন যিনি তার দুই সন্তানকে হত্যা করেছিলেন তার স্বামী মামলার এজাহারে জেসমিনের মানসিক সমস্যার কথা বলেন। বলেন জ়েসমিন সন্তানদের পড়ালেখা নিয়ে দুশ্চিন্তা গ্রস্থ হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। সন্তানরা না থাকলে মানসিক টেনশনও থাকবে না ধারনা করেই জেসমিন এই কাজ করেন।

আন্ড্রেয়া পেশায় ছিলেন ‘হাউজ ওয়াইফ’। তৃতীয় সন্তান জন্মাবার পর থেকেই মুলত তিনি ডিপ্রেশনে ভুগতে শুরু করেন। চিকিৎসক তাকে এন্টিডিপ্রেশনের ওষুধ দেন। সেবনও করেন কিছুদিন। সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ভেবে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। জন্ম নেয় আন্ড্রেয়ার চতুর্থ সন্তান। পরিস্থিতির অনবনতি হলো। পঞ্চম সন্তানের বয়স যখন ছয় মাস তখন-ই ঘটে এই হত্যাকান্ড। মনে রাখতে হবে, পোষ্টপার্টাম ডিপ্রেশনে যারা আক্রান্ত তারা অপরাধী নয়। সাইকিয়াট্রিস্ট এর সহায়তা নিয়ে এদের উপযুক্ত চিকিৎসা করা প্রয়োজন। ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষেরা নিজেদের মধ্যে একধরণের শূন্যতা অনুভব করেন। তাই ডিপ্রেশনের সাথে আত্মহত্যার প্রবণতা ঘুব ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত। ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষদের কাছে বস্তুত ঠিক ভুলের কোনো আলাদা মানদন্ড থাকে না। ডিপ্রেশন এক গভীর, গোপন অসুখ; যা মানুষ সবার অলক্ষ্যে নিজের ভেতর বয়ে চলে।

ডিপ্রেশন এবং ব্যক্তিত্ব এতটাই একসুতোয় জড়িয়ে থাকে যে, একে আলাদা করা প্রায় অসম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যার ১০ থেকে ২০ ভাগের মধ্যে ব্যক্তিত্বের সমস্যা বা ‘পারসোনালিটি ডিজর্ডার’ রয়েছে। যাদের মধ্যে ‘পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার’ তাদের মাদকাসক্তি, হত্যা, আত্মহত্যা, উদ্বিগ্নতা, নানা ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ার আশংকা বেশি থাকে। এদেশে বিষণ্ণতায় ভুগছেন ৪.৬ শতাংশ মানুষ। দীর্ঘদিনের চাপ ও অসহায়ত্বে ভুগতে থাকা মানুষেরা সবকিছুকে নেতিবাচক ভাবে দেখতে থাকেন। জীবনে নানা ধরনের টানাপোড়েন চলতে থাকে। হতাশা ও বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সবচেয়ে প্রিয় সন্তানদের কোথায়, কার কাছে রেখে যাবেন সেই অনিশ্চয়তা থেকে সন্তানদেরকে আগে হত্যা করে পরে নিজে আত্মহত্যা করেন।

নতুন মা’দের জীবন আগের চেয়ে বেশ খানিকটা বদলে যায়। সন্তানকে পুরোটা সময় মনোযোগ দিতে হয় বলে, অনেকের মনে হয় আগের জীবনের সেই স্বাধীনতাটা আর নেই। নিজের সৌন্দর্য, ফিগার, ক্যারিয়ার সব কিছু থাকে চিন্তিত করে তোলে। অনেক ক্ষেত্রে আগের জীবনের কোনো বিষণ্ণতা হঠাত হঠাত ফিরে আসে। দীর্ঘদিন চেপে রাখা চিন্তা বা ভয় মনে মাত্রাতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত পরিবারের। স্বামীকে স্ত্রীর প্রতি আগের চেয়ে আরো বেশি মনোযোগী হতে হয়। সামাজিক বন্ধন আর পারস্পারিক সহযোগিতা ছাড়া এই অবস্থার উন্নতি করা প্রায় অসম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৩৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×