অপেক্ষা (পর্ব - ২)
সকাল থেকেই দিনটা খারাপ যাচ্ছে। এক রাস্তা থেকে আরেক রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে আরিফ। আজকের নেশা করার টাকাটা এখনো হাতে পায়নি। ২/৩ বার চেষ্টা করেছিল কিন্তু একবারও সফল হয়নি। আজকাল মানুষজন খুব চালাক হয়ে গেছে। টাকা-পয়সা, মোবাইল সবকিছুই খুব সাবধানে সামলে রাখে। হাতই দেয়া যায় না। এখনো যদি কিছু যোগাড় করতে না পারে তাহলে আজকে রাতটা তার যে কিভাবে কাটবে সেটা ভাবতেও ভয় হচ্ছে।
এইচ.এস.সি পর ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারে খুব upset হয়ে পড়ে আরিফ। তখনই এলাকার কিছু বাজে ছেলের পাল্লায় পড়ে ড্রাগস নেয়া শুরু করে। প্রথম প্রথম ভালোই লাগতো কিন্তু দিনকে দিন সেটা যখন নেশার পর্যায়ে চলে যায় তখনই বাবা-মার কাছে ধরা পড়ে যায় সে। প্রথম দিকে তার পরিবারের লোকজনের তাকে সুস্থ করার চেষ্টার অন্ত ছিল না। কিন্তু যখন তারা বুঝতে পারলো যে এতে কোন লাভ হবে না, তখনই হাল ছেড়ে দিল।
নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আরিফ, তাই তার পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা কিংবা নেশা কোনটার অর্থই ব্যয় করা সম্ভব হয়নি।
এখন আরিফ নিজের খরচ নিজেই চালায়। নিজের খরচ বলতে নেশার খরচ। ওই জিনিসটাই এখন তার সবকিছু। হঠাৎ নজরে পড়লো ফুটপাত দিয়ে একটা ছেলে প্রায় ছুটতে ছুটতে যাচ্ছে। নিশ্চয়ই কোন তাড়া আছে। এই সুযোগটাকে কাজে লাগানো যায়। ভাবামাত্রই কাজে নেমে পড়লো সে।
বাহ দারুন। এতো সহজে কাজটা হয়ে যাবে সে ভাবতেও পারে নি। অবশ্য পকেট সাফাই এর কাজ সে যে খুব ভালোই পারে তাতে তার কেন কারোই সন্দেহ নেই।
একটার পর একটা কল আসছে। কল রিসিভ করার প্রশ্নই আসে না। মোবাইলটা অফ করে সে হাঁটা শুরু করলো।
মোবাইলটা ভালো দামেই বিক্রি করা গেছে। সেটটা দামী-ই ছিল। ঘরে ফিরে কি মনে হতেই সে সিমটা তার মোবাইলে ঢুকিয়ে অন করলো। একগাদা মেসেজ। সেই মেয়েটা, যে বিকাল থেকে কল দিয়ে যাচ্ছে। মেসেজগুলো পড়ার লোভ সামলানো গেল না। দুটো মেসেজ পড়তেই আবার কল এলো। কৌতুহলটা দমিয়ে রাখা গেল না। শেষ পর্যন্ত কলটা রিসিভ করলো সে।
: হ্যালো, নিলয়।
: হুমম।
: কি হয়েছে তোমার? আজকে আসলেনা যে? একটা খবর তো দিবে...
: আসলে একটা সমস্যায় পড়ে গেছিলাম। তাই জানাতে পারিনি। (মনে মনে ভাবলো মেয়েটার ভয়েস খুব সুন্দর)
: কেন কি হয়েছে? বাসায় কিছু হয়েছে? আংকেলের কিছু?
: হুমম, বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লো। তাই তোমাকে জানাতে পারিনি। রাগ কোরোনা প্লিজ।(বাহ, আমি তো ভালোই অভিনয় করতে পারি)
: তোমার ভয়েস এমন শোনাচ্ছে কেন?
: (সেরেছে কি বলবো) না মানে, ঠাণ্ডা লেগেছে।
: ও। আচ্ছা ঠিক আছে। রাখি এখন।
: শোন, তুমি আর এই নম্বরে ফোন কোরো না। আমি তোমাকে নতুন একটা নম্বর দিচ্ছি। এখন থেকে আমি ওই নম্বরটাই use করবো।
: কেন?
: না, তেমন কিছু না। উল্টা-পাল্টা কিছু ফোন আসছে কয়দিন ধরে, তাই।
: Okk. Bye.
পুরোনো সিমটা ফেলে দিয়ে নিজের নম্বরটা অবনীকে sms করে দেয় আরিফ...
অপেক্ষা (পর্ব - ৪)
অপেক্ষা (শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





