অপেক্ষা (পর্ব - ২)
অপেক্ষা (পর্ব - ৩)
অপেক্ষা (পর্ব - ৪)
সকাল থেকেই কেমন অন্যমনস্ক হয়ে আছে অবনী। গতদুদিন ধরে নিলয়কে কেমন জানি অন্যরকম মনে হচ্ছে। গত সাত মাস ধরে একটু একটু করে যে নিলয়কে ও চিনেছে এই নিলয়ের সাথে তার যেন কোন মিল নেই। নিলয় কি আসলেই বদলে গেছে নাকি ওই-ই ঠিকমতো বুঝতে পারছে না নিলয়কে? কিছুটা অন্যমনস্কভাবেই সে ফোন দেয় নিলয়কে।
: হ্যালো।
: বাব্বা!!! এত্তো ফর্মালিটি?? কি ব্যাপার?? হু??
: কে? অবনী?
: কেন তুমি জানো না বুঝি কে??
: এতোদিনে মনে পড়লো আমায়?? এতো রাগ তোমার?? মানছি সেদিন যা হয়েছে তাতে রাগ হবার-ই কথা। তাই বলে অন্তত একবার ফোন করে জানতে তো চাবে যে কেন আমি আসিনি সেদিন?
: এই কি বলছো তুমি এইসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি ফোন করিনি মানে? সেই রাগ তো আমার কবেই হাওয়া হয়ে গেছে। তুমি তো বলেই ছিলে যে তোমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তাই তুমি আসতে পারোনি। তাহলে এখন আবার এই কথা আসছে কেন?
: আমি বলেছিলাম? সেদিনের পর তো তোমার সাথে আমার কথাই হয়নি। সেদিন তোমার সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে আমার মোবাইল চুরি হয়ে যায়। তোমার নম্বরটা আমার মনে ছিলনা তাই তোমাকে গত দুদিন ফোনও দিতে পারিনি। সিম তুলে বসেছিলাম কখন তুমি ফোন করবে সেই আশায়।
মুহুর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় অবনী। এইসব কি বলছে নিলয়? তাহলে ও এ দুদিন কার সাথে কথা বলেছে? মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ও ভুলে নিলয়ের আগের নম্বরটাতে ফোন দিয়েছে। তার মানে নিলয় যা বলেছে তা সত্য। ও এতোদিন অন্য কারো সাথে ফোনে কথা বলেছে। ধীরে এই দুদিনে ওর মনে যত প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে, সবকটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় সে।
নিলয়কে একে একে গতদুদিনের সমস্ত ঘটনা খুলে বলে অবনী। কি বলবে বুঝতে পারে না নিলয়। এরকম প্রতারনাও কেউ কারো সাথে করতে পারে এটাই ভাবতে পারছে না সে। তবুও একটাই সান্ত্বনা এতোকিছুর পরও আবার অবনীকে ফিরে পেয়েছে সে।
বেশকিছুদিন পর। অবনী আবার নিলয়ের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন শুধু ফোন নম্বর নয়, অবনীর বাসার ঠিকানাও মুখস্থ নিলয়ের। তবুও এইবার আর মজা করেনি অবনী। নিলয়কে জানিয়ে দিয়েছে লাল রঙের জামদানী পড়ে আসবে সে। এও জানিয়ে দিয়েছে নিলয়কে কালো পাঞ্জাবী পড়ে আসতে হবে। ওর প্রিয় রঙ বলে কথা।
যথাসময়ে পূর্বনির্ধারিত স্থানে এসে অবনী দেখতে পায় অদূরে একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে হাসিমুখে এগিয়ে আসছে নিলয়।
তাহলে এই তার সেই ভালোবাসার মানুষটি, ভাবে অবনী, যার সাথে দেখা করতে গিয়ে একবার তাকে কাঁদতে হয়েছিল। কিন্তু আজ?? পারেনি, বিধাতা পারেনি তার প্রতি, তার ভালোবাসার প্রতি এতোটা নিষ্ঠুর হতে। চোখজোড়া মুহুর্তেই জলে ভরে গেল তার এই ভেবে যে সেদিনের মতো আজ সে একা নয়...আজ সেই অশ্রু মুছে দেয়ার জন্য তার পাশে আছে তার পরম ভালোবাসার মানুষটি...
শেষ হয় অপেক্ষার প্রহর......
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





