## প্রথম অধ্যায়: অনলাইন থেকে অফলাইনে
ফেসবুকের পাতায় একটি সাধারণ দিন। আমি তখন নিউইয়র্কের ব্যস্ত শহরে বসে থাকি, চারপাশে মানুষের কোলাহল আর কাজের চাপ। হঠাৎ করেই ফেসবুকে একটি পোস্টে কমেন্ট করতে গিয়ে মীমের সাথে পরিচয়। প্রথম পরিচয়ের দিনটি আজও স্পষ্ট মনে আছে। মীমের কমেন্ট ছিল খুবই সংযত, শান্ত এবং সুরুচিপূর্ণ।
মীমের সাথে কথোপকথনের শুরুটা ছিল সহজ, কিন্তু কিছুদিন পরেই আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠলাম। আমাদের মধ্যে এমন কিছু ছিল যা প্রতিদিনের কথায় আরও স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগলো। মীমের মধ্যে একটা আলাদা ধরনের শান্তি ছিল যা আমাকে খুব টেনেছিল। আমাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হতে লাগলো, আর আমরা নিয়মিত কথা বলতে শুরু করলাম।
---
## দ্বিতীয় অধ্যায়: ভালোবাসার জন্ম
প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেছে। আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আস্তে আস্তে ভালোবাসায় রূপ নিতে শুরু করেছে। মীমের মধ্যে আমি এমন কিছু পেয়েছিলাম যা আমি আগে কখনো খুঁজে পাইনি। সে তার পরিবারের বড় মেয়ে, দায়িত্বশীল এবং মাশাল্লাহ খুবই সুন্দরী। তার বাবা একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, আর মীম অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
প্রতি মাসে আমি মীমকে ৫ হাজার টাকা পাঠাতাম তার খরচের জন্য। তবে মীম কখনো টাকার বিষয়ে কথা বলতো না। একদিন মীম আমাকে বললো, "তুমি দেশে আসলে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।" আমি জানতে চাইলাম, "কি সারপ্রাইজ?" সে হাসিমুখে বললো, "এখন বলবো না, পরে বলবো।"
কিছুদিন পরে মীম আমাকে বললো, "তোমার এক টাকা ও আমি খরচ করিনি। আমি জমিয়েছি তোমার জন্য।" আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, "কেন?"
সে বললো, "যেনো তুমি কখনো বলতে না পারো আমি তোমার টাকার জন্য সম্পর্ক করেছি। আমি তোমার টাকা পয়সা কোন কিছু দেখে তোমাকে ভালোবাসিনি। আমি ভালোবেসেছি কারণ তুমি একজন ভালো মানুষ, আর তোমার কথা খুব সুন্দর।"
---
## তৃতীয় অধ্যায়: প্রতীক্ষার প্রহর
মীম সবসময় আমার অপেক্ষায় থাকতো, কবে আমি দেশে যাবো। তার পরিবার আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা শুনিয়েছে। এমনকি তার ছোট ভাই তাকে মারধর করেছে, একদিন তার বাবা ও তাকে মেরেছিল। কিন্তু তবুও কেউ আমাদের ভালোবাসার পথ থেকে দূরে সরিয়ে দিতে পারেনি।
আমি এই সম্পর্ক নিয়ে আমার বাবা-মাকে জানিয়েছি। তবে মা এবং বোন মীমকে পছন্দ করেনি। তাদের মতে, মীমের চেহারায় মায়া কম। তবে আমি জানি, মীম খুবই সাংসারিক মেয়ে এবং আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে একদম পারফেক্ট। তাই আমি ভেবেছি মীমকে পরিবার ছাড়া বিয়ে করবো।
---
## চতুর্থ অধ্যায়: ভালোবাসার স্বপ্ন
আমাদের সম্পর্কটা দিন দিন গভীর হতে লাগলো। আমরা দুজনেই একে অপরের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ফেসবুকের কমেন্ট থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনের এই যাত্রা আমাদের ভালোবাসার গল্পকে আরো মধুর করে তুলেছে।
মীমের সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে অমূল্য। আমরা যখন একে অপরের সাথে কথা বলতাম, তখনই বুঝতে পারতাম, আমাদের ভালোবাসা কতোটা গভীর। আমরা দুজনেই স্বপ্ন দেখতাম, কিভাবে আমরা একসাথে জীবন কাটাবো, কিভাবে আমরা একে অপরকে সুখে রাখবো।
---
## পঞ্চম অধ্যায়: ভালোবাসার অঙ্গীকার
অবশেষে সেই দিনটি এলো, যখন আমি মীমকে বললাম, "আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।" মীমের চোখে অশ্রু ঝরছিলো, কিন্তু সেই অশ্রু ছিলো আনন্দের। আমরা একে অপরকে প্রতিশ্রুতি দিলাম, যে কোন পরিস্থিতিতেই আমরা একে অপরের পাশে থাকবো।
এভাবেই ফেসবুক থেকে শুরু হওয়া আমাদের ভালোবাসার গল্প বাস্তব জীবনের পথে এগিয়ে চলেছে, যেখানে ভালোবাসা এবং বিশ্বাসই আমাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
---
## উপসংহার: ভালোবাসার পূর্ণতা
আমাদের গল্পটা হয়তো খুব সাধারণ, কিন্তু আমাদের জন্য এটা একেবারে বিশেষ। ফেসবুক থেকে শুরু করে বাস্তব জীবনের পথে আমাদের যাত্রা ছিলো একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আমরা দুজনেই একে অপরকে ভালোবাসি এবং বিশ্বাস করি, আর এটাই আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করে তুলেছে।
আমাদের ভালোবাসার গল্পটি প্রমাণ করে, ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে যে কোন সম্পর্কই হতে পারে অটুট। মীমের সাথে আমার এই যাত্রা কেবলমাত্র শুরু, আমাদের সামনে আরও অনেক পথ পাড়ি দেওয়ার অপেক্ষা। আমরা জানি, যে কোন পরিস্থিতিতেই আমরা একে অপরের পাশে থাকবো এবং ভালোবাসার এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



