somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ : টেকনাফ সমূদ্র সৈকত

০২ রা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘোষণা : এই লেখাটিতে ৩০ টি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, ফলে ছবিগুলি লোড হতে কিছুটা সময় লাগবে।

কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ এর যাত্রা শুরু ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২০ বাংলাদেশ বিমানের দুপুর ২টার ফ্লাইটে। ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ৪০ মিনিটে প্লেন থেকে পাখির চোখে দেখা অপরূপ দৃশ্যের স্বাদ নিতে নিতে আমরা ৪ জন পৌছে যাই কক্সবাজার এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে একটি ইজিবাইক ভাড়া করে চলে আসি কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টের কল্লোল হোটেলের রেস্টুরেন্ট কাশুন্দি-তে। এখানে দুপুরের খাবার খেয়ে পাশেই হোটেল অভিসারে উঠে আসি। তারপর চলে যাই সাগর সৈকতে প্রথম দিনে সূর্যাস্ত দেখবো বলে। বিকেল আর সন্ধ্যেটা কাটে সাগর পারে ভাড়া করা বিচ চেয়ারে আয়েসী আলসেমীতে চারধার দেখতে দেখতে।

পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বরে সকালে নাস্তা সেরে চলে আসি সাগর পারে। শুরু হয় কক্সবাজার ভ্রমণ ২০২০ এর দ্বিতীয় দিনের সমূদ্র স্নান। অনেকটা সময় নিয়ে চলে সমূদ্র স্নান আর ছবি তোলা। সমূদ্র স্নান শেষে হোটেলে ফিরে দুপুরে লাঞ্চ শেষে আমরা বেড়াতে যাই রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডের রঙ্গীন মাছের দুনিয়ায়। বেশ কিছুটা সময় নিয়ে নানান প্রজাতির মাছ দেখা শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে চলে যাই পুরনো বার্মীজ মার্কেটের পিছনে অবস্থিত আগ্গ মেধা বৌদ্ধ ক্যাং দেখতে।

৩০ সেপ্টেম্বর সকালের নাস্তা সেরে বেরিয়ে পরি সারাদিনের জন্য বেড়াতে। সম্ভবতো ১,২০০ টাকায় একটি সিএনজি ভাড়া করি সারা দিনের জন্য। রুট প্লান হচ্ছে কক্সবাজার > রামু > ইনানী > কক্সবাজার

প্রথমেই দেখে নেই অতি পুরনো কক্সবাজার বিজিবি ক্যাম্প মসজিদ। সেখান থেকে চলে যাই রামুতে ভুবন শান্তি ১০০ সিংহ শয্যা গৌতম বুদ্ধ মূর্তি দেখতে। বিশাল বুদ্ধমূর্তি দেখা শেষে সেখান থেকে আমরা রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহার পৌছে সেখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে চলে যাই লামাছড়ার রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার দেখতে। বনাশ্রম দেখা শেষে আমারা চলে যাই প্রবাল পাথরের ইনানী সমূদ্র সৈকত। ইনানী বেড়িয়ে ফেরার পথে দেখতে পাই হিমছড়ি বন্ধ আছে করোনার কারণে, একই কারণে বন্ধ হয়ে আছে দড়িয়া নগরও। তাই ফিরে আসি কক্সবাজারে নিজেদের হোটেলে। ততোক্ষণে দুপুর গড়িয়ে গেছে। আকাশে মেঘেদের আনাগোনা গেছে বেড়ে। গোমড়া মেঘেরা ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরাতে শুরু করেছে। সেই ঝিরঝিরি বৃষ্টিতে ভিজে শেষ বিকেলে চললো সমূদ্র স্নান।


১লা অক্টোবর সকালের নাস্তা সেরে বেরিয়ে পরি সারাদিনের জন্য বেড়াতে। তখন ঘড়িতে সকাল সাড়ে এগারোটা। যাবো আমরা টেকনাফ। ইচ্ছে আছে টেকনাফ সৈকত, শাহাপরীর দ্বীপ, মাথিনের কুপ এগুলি দেখে সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসবো কক্সবাজারে। ডলফিন মোড় থেকে প্রাইভেট কার ছেড়ে যায় চারজন যাত্রী নিয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে টেকনাফ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত। ভাড়া জন প্রতি ৩০০ করে চার জনের ১২০০ টাকা।



আমি ১,১০০ টাকায় রিজার্ভ নিয়ে নিলাম। যারাই মেরিন ড্রাইভে যাবেন তারা অবশ্যই সাথে ন্যাশনাল আইডি কার্ড সাথে রাখবেন। পথে দুই থেকে তিন যায়গায় আর্মি চেক হয়। সেখানে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হয়। কোথা থেকে এসেছেন, কোথায় যাচ্ছেন, কেনো যাচ্ছেন, কখনো ফিরবেন, সাথে কে-কে আছে ইত্যাদি সাধারণ প্রশ্নগুলি করে। ঘাবরানোর কিছু নেই।

মেরিন ড্রাইভের এই প্রাইভেট কার সার্ভিসের কথা আমার আগে জানা ছিলো না। আগে জানা থাকলে ট্যুর প্লানটা অন্যভাবে সাজাতাম। গত কালের ভ্রমণের কস্ট-কষ্ট-সময় অনেকটাই কমে যেতো তাহলে।



















যাইহোক, আমরা মেরিনড্রাইভ ধরে এগিয়ে চলি দড়িয়া নগর, হিমছড়ি, ইনানী পেরিয়ে টেকনাফের পথে। যদিও এই গাড়ি আমাদের নিয়ে যাবার কথা টেকনাফ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত, তবে আমরা সেই পর্যন্ত যাবো না। আমরা নেমে যাবো টেকটাফ সৈকতে। পথে কয়েকবার চেক পোস্টে গাড়িটিকে থামতে হলো। তেমন কোনো সমস্যা ছাড়াই এগিয়ে এলাম আমরা। পথে থেমে কিছু ছবিও তোলা হলো।











পথে এই মেঘ-এই রদ্দূরের খেলা চললো। কয়েকবার মেঘেদের মায়া কাটিয়ে শীতল ফোঁটায় বৃষ্টিরা নেমে এলো পথ ভিজিয়ে দিতে। এই পথ যেমন ভালো তেমনি এই পথের পশ্চিম পাশে সমূদ্রের ধার ঘেসে বিচিত্র কর্মকান্ড আর জীবনের ছোঁয়া। এই সব দেখতে দেখতে এক সময় আমরা পৌছে গেলাম টেকনাফ সৈকতে।























আকাশে তখন মেঘেদের আধিপত্য শেষ হয়েছে, চকচকে রোদ উঠেছে। বৃস্তিন্য সৈকতে আমরা ছাড়া আর একজনও পর্যটক নেই। অল্প কয়েকজন জেলে তাদের নিত্যদিনের কাজে ব্যস্ত শুধু।























আমরা এগিয়ে গেলাম জলের দিকে। সৈকতে প্রচুর মৃত শিমুক আর ঝিনুক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যেমন তাদের আকারে ভিন্নতা তেমনি তাদের রংয়ের বাহার। বাচ্চা ছোটাছুটি করে কুড়িয়ে নিচ্ছে পছন্দ মতো। আমিও খুঁজে দিচ্ছি ওদের মাঝে মাঝে।



















এভাবেই বেশ কিছুটা সময় কেটে যায় নির্জন এই সৈকতে।

সৈকত থেকে পথে উঠে এসে একটি ইজিবাইক ভাড়া করি। এটিতে করে প্রথম আমরা যাবে মেরিন ড্রাইভের শেষ মাথায় সাবরাং জিরো পয়েন্টের কাছে। লোকালয় এবং জেলেদের আনাগোনার স্থান থেকে এটি একটু দূরে এবং বেশ নির্জন হওয়ায় যায়গাটি আমার কাছে খুব একটা সেইফ মনে হয়নি।












তাছাড়া চলতি পথে ছোট্ট একটি দূর্ঘটনা ঘরে যায়। আমার বড় মেয়ের জামার এবং জামার হাতার নেটের ঝুল অংশটি ইজিবাইকের সাথে পেঁচিয়ে যায়। ওর চিৎকারে ড্রাইভার চাচা মিয়া গাড়িটি সময় মত থামিয়ে ফেলায় আমার মেয়ে কোনো আঘাত পায়নি। তবে জামার হাতা ও ঝুলের অংশটি ছিড়ে যায়।
সব কিছু মিলিয়ে আমরা ঐখানে তাই সময় না কাটিয়ে উলটে ফিরে আসি। আমাদের এর পরের গন্তব্য মাথিনের কুপ। দেখা হবে সেখানে আগামী পর্বে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেভাবে কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ পরবর্তী নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করতে পারবে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৬ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৪৩

আমি ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোকে কিছু কিছু সাপোর্ট করি। যদিও জানি, ইমাম মাহদী (আঃ) আসার আগে পর্যন্ত কোন ইসলামী দলই পরিপূর্ন সমাধান হিসেবে আবিভূর্ত হতে পারবে না। তবে, আহলে বায়াত... ...বাকিটুকু পড়ুন

নির্বাচিত দেবদূত

লিখেছেন সাজিদ উল হক আবির, ১৬ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:৫৩

ব্লগের শিরোনামে যে শব্দগুচ্ছ দেখলেন, সেটা আমার ১০ম বই (৫ম ছোটগল্পের সংকলন) এর নাম। অনুবাদ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আমার এই বইটি এ বছর মর্যাদাপূর্ণ কালি ও কলম তরুণ কথাসাহিত্যিক এর... ...বাকিটুকু পড়ুন

গোপালগঞ্জের ঘটনায় জাতি আরেকদফা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:২০

জুলাই গনঅভ্যূত্থানের বর্ষপুর্তিতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈ্তিক দল এনসিপি জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসাবে গতকাল গোপালগঞ্জ যায়। গতকাল গোপালগঞ্জে দিনব্যপী সংঘর্ষের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ধরনের বক্তব্য দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

গোপালগঞ্জে এটা দরকার ছিল!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:৫৪


দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অ্যাকশনে উত্তপ্ত গোপালগঞ্জ। হামলা-সংঘর্ষের সময় অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা ও পরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

NCP'র গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ পদ যাত্রা....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৭ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:০৪

NCP'র গাড়ি বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ পদ যাত্রা....

সার্বিক অর্থে NCP তাদের পূর্ব ঘোষিত জেলায় জেলায় পদযাত্রা সফর হিসেবে (NCP নেতা সার্জিসের ভাষায় রোড মার্চ টু গোপালগঞ্জ) গোপালগঞ্জে সফল হতে পারেনি স্থানীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×