১। সাদেক হোসেন খোকা এখনো ঢাকার মেয়র। যেহেতু তারপর আর কেউ এখনো নির্বাচিত মেয়র নন। তার মৃত্যুতে আমরা মেয়র হারা হলাম।
২। ঢাকার বিখ্যাত বিচ্চুবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ ও তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
৩। সবকিছু ছাপিয়ে সাদেক হোসেন খোকার বড় পরিচয় ,
তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর অবশ্যই দেশের মাটিতে হওয়া উচিৎ।
৪। দেশ থেকে বিতাড়িত করা হচ্ছে,মুক্তিযোদ্ধার জমি বাড়ি দখল হয়ে যাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধার ছেলের চাকরী চলে যায় অন্যায় ভাবে,সেই মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক সাহেব মারা গেলেন আর প্রতিবাদ স্বরূপ রাষ্ট্রীয় শেষ সম্মানটুকু নিলেননা...এ সেই আমল...
৫। সাদেক হোসেন খোকা মুক্তিযোদ্ধা হলেও সে নিজে যখন স্বাধীনতা বিরোধী দলের সাথে জোট করে স্বাধীনতার পক্ষের দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে তখন সাদেক হোসেন খোকার "মুক্তিযোদ্ধা" উপাধির মূল্য কি?
৬। জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এইচ এম কামরুজ্জামানের নামে ঢাকা মহানগরীর প্রধান সড়কগুলোর নামকরণ কে করেছে? কমরেড মনি সিংহ, বিরোত্তম সিআর দত্ত ও সেলিনা হোসেনসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম প্রতিদিন স্মরণীয় করার ব্যবস্থা কে করেছে? তিনি সাদেক হোসেন খোকা। তার রাজনৈতিক অবস্থান এবং বিচ্যুতিগুলো গ্রহণ করতে পারিনি। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা সাদেক হোসেন খোকা অবিস্মরণীয়।
৭। কি দুর্ভাগ্য এই জাতির। বহু বছর মাটি ও দেশ থেকে দূরে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মৃত্যু বরণ করেছেন পরদেশ আমেরিকায়।
রাজনীতির বাইরে মানবিক দৃষ্টি থাকলে যে কারো মন একটু হলেও হু হু করার কথা। রাজনীতির চোরাগলিতে ভুল পথে হাঁটলেও তিনি ছিলেন বাম ধারার লোক।অনেককাল সহজ সাধারণ জীবন যাপন করেছিলেন। হাজার হোক তিনি তো একজন মুক্তিসেনা।
৮। অবশ্যই তিনি এ দেশের মাটিতে সমাহিত হতে পারবেন। আপনার সাথে শ্রদ্ধার সাথে দ্বিমত পোষন করছি, শুধুমাত্র দ্বিমতের কারনে তিনি বিদেশে থাকেন নি,তার কৃতকর্ম সম্পর্কে তিনি ভাল ই জানতেন তাই বিদেশে পালিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার সেই সাহস যদি তার বুকে বর্তমান থাকতো যেকোন রেজিমের বিরুদ্ধেই তিনি দাড়াতে পারতেন। তিনি যতদিন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ততদিন সম্মানী হয়ে থাকবেন, কিন্তু যেদিন তিনি মুক্তিযুদ্বের বাংলাদেশের গলায় ছুরি বসিয়েছেন সেদিন থেকেই ধ্বিকৃত হবেন।
৯। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন, অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ছিলেন। কিন্তু এসব পরিচয় নয়, সাদেক হোসেন খোকাকে আমি গভীরভাবে ভালোবাসি, কারণ তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যে ক্র্যাক প্লাটুনের যুদ্ধের গল্প রূপকথাকেও হার মানায় খোকা ভাই ছিলেন তাদের একজন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
১০। সাদেক হোসেন খোকার জন্ম ১৯৫২ সালের ১২ই মে। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। আশির দশকে বামপন্থি রাজনীতি ছেড়ে আসেন বিএনপিতে। ওই সময় নয়াবাজার নবাব ইউসুফ মার্কেটে বিএনপির কার্যালয় থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা করে সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ওই অন্দোলনে ঢাকা মহানগর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলেন খোকা। ১৯৯০ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে পুরান ঢাকার মানুষের মনে আস্থার জায়গা করে নেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৭ আসনে (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩১