somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

আমার কালের কথা

২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোটবেলার কথা আমার খুব মনে পড়ে।
মা আমাকে মাঝে মাঝে এক শ' টাকা দিতেন দেশী মূরগী আনার জন্য। তখন অবশ্য ফার্মের মূরগী পাওয়া যেত না। ৭৫ বা ৮০ টাকা দিয়ে একটা দেশী মূরগী কিনতাম। আর এখন একটা দেশী মূরগীর দাম কমপক্ষে পাঁচ শ' টাকা। তখন পাইজাম চালের খুব চাহিদা ছিল। আমরা তখন পাইজাম চাল খেতাম। কেজি ছিলো মাত্র দশ বা বারো টাকা। এখন চালের কেজি ষাট টাকার উপরে। গরুর মাংস কিনতাম ষাট টাকা কেজিতে। এখন সাড়ে পাঁচ শ' টাকা কেজি। কাঁচা মরিচ কিনতাম এক টাকার। অনেকদিন চলে যেত। এখন কিনতে হয় দশ টাকার। দুই দিনও হয় না। আলু ছিল তিন/চার টাকা কেজি। এখন পঁচিশ টাকা কেজি। শাক ছিল দুই টাকা আঁটি। এখন পনের টাকা। যখন দেশী মূরগী, বা গরুর মাংস বা চাল যথাক্রমে ৮০, ৬০, এবং ১২ টাকা ছিল তখনও মানুষ খুব বলতো জিনিসপত্রের যা দাম! আমি হয়তো মরার আগে দেখে যাবো গরুর মাংস বারো শ' টাকা কেজি।

একটা গোল্ডলিফ সিগারেট ছিল দেড় টাকা।
এখন দশ টাকা। তখন বেনসন ছিল না। ছিল বাংলা ফাইফ। ধনী লোকেরা খেত। দাম আড়াই টাকা। এখন একটা বেনসন তের টাকা। পনের টাকা দিলো, দুই টাকা ফেরত দেয় না। একটা চকলেট ধরিয়ে দেয়। স্কুলে আমাকে টিফিন বাবদ দেওয়া হতো তিন টাকা, কখনও পাঁচ টাকা। সেই তিন টাকা দিয়ে অনেক কিছু খাওয়া যেত। কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের বেতন ছিল এক শ' টাকা। তখন রিকশা ভাড়াও অনেক কম ছিল। এখন রিকশা ভাড়া যেখানে ৩০ টাকা দেই। তখন দিতাম পাঁচ টাকা। এখন একটা বাটারবন/ক্রীম রোল পনের বা বিশ টাকা, তখন দাম ছিল দুই টাকা। তখন পাঁচ টাকা দিয়ে হোটেলে সকালের নাস্তা হয়ে যেত। এখন লাগে কম পক্ষে চল্লিশ টাকা। কোনো ভিক্ষুক বাসায় এলে তাকে এক মুঠ চাল দেওয়া হতো। ভিক্ষুক খুশি মনে চলে যেত। এখন এক মুঠ চাল নিতে কোনো ভিক্ষুক আসে না। এখন ভিক্ষুককে কমপক্ষে পাঁচ টাকা দিতে হয়।

ছোটবেলার দিন গুলো আনন্দময় ছিল।
ঈদের দিন সারা দিনে দেড় শ' টাকা সালামি পেতাম। অনেক টাকা। এই টাকা যতই খরচ করতাম, শেষ হতো না। খেলনা গুলোরও দাম কম ছিল। চিপস, বিস্কুট আচার এক টাকা-দুই টাকা দিয়েই পাওয়া যেত। আব্বা মাঝে মাঝে পাঁচ টাকা দিত। অনেক টাকা। কত কিছু খাওয়া যেত। ছোটবেলা আমি আব্বার সাথে বাজারে যেতাম। অনেক বাজার করতো আব্বা। বাজার থেকে পাঁচ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে বাসায় আসতাম। এখন সেই দূরত্বের ভাড়া দিতে হয় ত্রিশ টাকা। ত্রিশ-চল্লিশ টাকা দিয়ে বড় তরমুজ পাওয়া যেত। এখন একটা বড় তরমুজ তিন শ' টাকার ওপরে। ছোটবেলা আমি খুব সাইকেল চালাতাম। আমার বাইসাইকেল ছিলো না। বাইসাইকেল ভাড়া নিতাম এক ঘন্টা আট টাকা করে। তখন একটা নতুন বাইসাইকেলের দাম ছিল পঁচিশ শ' থেকে তিন হাজার। আর এখন একটা সাইকেলের মূল্য কমপক্ষে ত্রিশ হাজার টাকা। আগের আমলে মানুষের কাছে টাকা কম ছিলো? এখন বেশী?

এখন একটা পুরীর দাম পাঁচ টাকা।
ছোটবেলা আলু বা ডাল পুরী খেতাম আটটানা (পঞ্চাশ পয়সা) করে। এক কাপ চা খেতাম এক টাকা করে। এখন কাপ চা ছয় টাকা। কোথাও কোথাও দশ টাকা করে। অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাতাম। ভিজিট ছিল পঞ্চাশ টাকা। এখন কমপক্ষে পাঁচ শ' টাকা। খিলগা থেকে গুলিস্তান টেম্পু ভাড়া ছিল দুই টাকা। এখন বারো টাকা। কোচিং এর বেতন ছিল এক শ' বা দেড় শ' টাকা। এখন তিন হাজার টাকা। মিষ্টির কেজি ছিল পঞ্চাশ-ষাট টাকা। এখন পাঁচ শ' টাকা। কমলা ডজন ছিল পঞ্চাশ টাকা। এখন তিন শ' টাকা। সেলুনে চুল কাটাতাম দশ টাকা দিয়ে। এখন লাগে কমপক্ষে এক শ' টাকা। গরুর মাংস কালো ভূনা ছিল চল্লিশ টাকা করে। এখন এক শ' পঞ্চাশ টাকা। একটা সিমেন্টের বস্তা ছিল এক শ' টাকা। এখন সাড়ে চার শ' টাকা। একজন রাজমিস্ত্রীর রোজ ছিল দেড় শ' টাকা। এখন সাত শ' টাকা। হোটেলে রুই মাছ দিয়ে ভাত খেলে এক পিছ রুই মাছের দাম নিতো ত্রিশ টাকা। এখন নেয় দেড় শ' টাকা।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:২৫
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×