somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

প্রিয় কন্যা আমার- ৭

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রিয় কন্যা আমার-
তোমাকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপর তুমি কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছো। তোমাকে মোট একদিনে তিনটা টিকা দেওয়া হয়েছে। ডাক্তার বলেই দিয়েছেন, জ্বর আসতে পারে। শরীর ব্যথাও করবে এক দুই দিন। অবশ্য ডাক্তার ওষুধ দিয়ে দিয়েছেন। ফ্লাকল, পেডিগ্যাস, নাপা আর নরসল। তিনটা দিন তোমার খুব কষ্ট গিয়েছে। সুরভি আর আমি সারাক্ষণ চেষ্টা করেছি তোমার কষ্ট যেন না হয়। তোমার দেখভাল করতে গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছি বিকেলে। আর ঘুম? না ঘুমাতে পারি নি। তোমার পাশে জেগে বসে ছিলাম। টিকা দেওয়ার কারনে তুমি বিছানা থেকে কোলে থাকতেই বেশী পছন্দ করছো। আমি আর সুরভি তোমাকে কোলেই রেখেছি।

তোমার মা তোমাকে তোমার নানার বাসায় নিয়ে যাবে।
হয়তো দুই তিন থাকবে। আমি যাবো না তোমার নানার বাসায়। তবে আমি তোমাদের দিয়ে আসবো। তোমাদের বেড়ানো শেষ হলে আবার তোমাদের নিয়ে আসবো। টানা দুই তিন দিন তোমাকে ছাড়া থাকতে হবে, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। এদিকে সুরভিকে যেতে মানাও করতে পারি না। অনেকদিন সে তার বাবার বাড়ি যায় না। আগামী শুক্রবার একটা বিয়ের দাওয়াত আছে। তোমাকে সেই বিয়ের দাওয়াতে নিয়ে যাবো। আমি ঠিক করেছি আমি যেখানেই যাবো তোমাকে সাথে করে নিয়েই যাবো। আমার বাবা তার সাথে করে আমাকে খুবই কমই নিয়ে গেছেন। আমি সেই ভুল করবো না। আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তিনি যে ভুল গুলো করেছেন, আমি সেই ভুল গুলো করবো না। নো নেভার।

প্রিয় কন্যা আমার-
আজ আমার প্রিয় কবির জন্মদিন। জীবনানন্দ দাশ। 'মহাপৃথিবী' কাব্য গ্রন্থের 'আট বছর আগের একদিন' কবিতায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর অর্থাভাব, কর্মহীনতা, বেকারত্ব ইত্যাদি নির্বিশেষে সামাজিক অবক্ষয়গুলো প্রকটভাবে প্রকাশিত। তার এই কবিতায় ঐ সময়ের মানুষের জীবনের যন্ত্রণময় পীড়ন, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা, প্রতীকে, চিত্রকল্পে এ কবিতাটির উল্লেখযোগ্য অংশ। জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে গবেষণা করা একাধিক বিদেশি স্বীকার করেছেন, এই কবির নোবেল না পাওয়াটা রীতিমতো অন্যায়! তুমি বড় হয়ে এই কবির সমস্ত লেখা পড়বে। এবং এই কবিকে জানবে। দরকার আছে। একসময় এই কবির অনেক কবিতা আমার মূখস্ত ছিলো। এই কবিকে নিয়ে ১০০ পর্বের একটা ধারাবাহিক লেখার ইচ্ছা ছিলো। বইপত্র যোগাড় করে উঠতে পারি নি। পড়া হয়নি, আর লেখা হয়নি। তবে তুমি বড় হতে হতে আমি তার সব বই সংগ্রহ করে ফেলব।

প্রিয়, ফারাজা তাবাসসুম খান (ফাইহা)
তুমি সংগীত পছন্দ করো। আমি খেয়াল করে দেখেছি, আমি গান ছাড়লেই তুমি গানের তালে তালে মাথা নাড়াও। তখন তুমি কান্না করো না। তখন তোমাকে দেখলেই বুঝা যায় তুমি সংগীত উপভোগ করছো। তুমি কি বড় হয়ে গান গাইবে নাকি? তোমার যদি গান গাইতে ভালো লাগে, তুমি অবশ্যই গাইবে। ছবি আঁকতে ইচ্ছা করলে ছবি আঁকবে। অভিনয় করতে ইচ্ছা করলে, অভিনয়ও করতে পারো। পাইলট বা ডাক্তার তোমার যা হতে ইচ্ছা করবে তুমি তাই হবে। আমি কখনই আমার কোনো ইচ্ছা তোমার উপর চাপিয়ে দিবো না। তবে জীবনে তোমাকে অবশ্যই বড় কিছু হতে হবে। লেখাপড়া শেষ করে, বিয়ে করবে তারপর আর দশটা মেয়ের মতন ঘরসংসার করে জীবন কাটিয়ে দেবে এরকম যেন না হয়। বিশ্ব, দেশ, সমাজ আর মানুষের জন্য অবশ্যই তোমাকে কিছু না কিছু করতে হবে।

আপাতত তোমাকে নিয়ে আমার পরিকল্পনা হচ্ছে-
তুমি যখন হাঁটতে শিখবে, তোমাকে নিয়ে কক্সবাজার যাবো। সমুদ্রের পাড়ে তোমাকে ছেড়ে দিবো। বিশাল সমুদ্রের সামনে তুমি কি করো সেটাই আমার দেখার শখ। পদ্মা সেতুটা হয়ে গেলে সেখানে তোমাকে নিয়ে যাবো। ঢাকার মেট্রোরেল হয়ে গেলে তোমাকে নিয়ে মতিঝিল থেকে উত্তরা যাবো। প্রতিবছর তোমাকে বইমেলাতে নিয়ে যাবো। তুমি আমার হাত ধরে ধরে সারা বইমেলা ঘুরে বেড়াবে। যে যে বই তোমার ভালো লাগবে তোমাকে কিনে দিবো। তবে আমি পছন্দ করেও তোমাকে কিছু বই কিনে দিবো। তোমাকে বই পড়তে হবে, প্রচুর বই পড়তে হবে। হবেই। আমি তোমাকে যা শিখাতে পারবো না, বই তা তোমাকে শিখিয়ে দিবে। তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু হবে দুইজন। এক, আমি। এবং দুই হচ্ছে বই।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৪৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×