somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সংষ্কৃতি/অপসংস্কৃতি

১৪ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা।
এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবণ এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রায় সকল শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। যা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ। শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুন-তরুনী, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী সব শ্রেনীর পেশার মানুষ হাসিমুখে অংশ গ্রহন করে। পৃথিবীর অনেক মুসলিম দেশেই পহেলা বৈশাখে নাচ গান করে দিনটি পালন করা হয়। তবে আমাদের দেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা বেস্ট। এজন্য অনেক বিদেশী এই মঙ্গল শোভা যাত্রারায় অংশ গ্রহন করেন।

বাংলা নববর্ষ তো সম্রাট আকবর প্রচলন করেন।
সুতরাং এটা হিন্দুয়ানী বলে যা প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা! বাংলাদেশের মুসলমানরা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা জাতি। তারা আগে মুসলমান না আগে বাঙালি সেটা আজও বুঝে উঠতে পারে নি। একশ্রেণীর হুজুরদের যত রাগ পহেলা বৈশাখ নিয়ে। ইসলামের সাথে কোন জাতির সংস্কৃতিই সাংঘর্ষিক নয়। আর সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই। আমরা যা, তাই আমাদের সংস্কৃতি। অর্থাৎ, আমাদের কথাবার্তা, চলাফেরা, পোশাক ইত্যাদি কাজের ধরণ গুলোই আমাদের সংস্কৃতি। সুতরাং কোন উৎসব পালন না করলেও আমরা বাঙালিই থেকে যাব। ইসলাম যদি আসলেই কোন সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক হত তবে, মুসলমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একজন মানুষকে আরবী ভাষায় কথা বলতে হত, তাকে খেজুর, রুটি ইত্যাদি মরু অঞ্চলের খাবারে অভ্যস্থ হতে হত। তাই নয় কি?

পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুনের স্বপ্ন রচনা করতে-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বৈশাখী গান গেয়ে নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানাই আমরা। মিষ্টি মুখ, পান্তা ইলিশ আর নতুন দেশি পোশাকে আমরা এই দিনটিতে একদিনের জন্য হলেও পুরো বাঙালি হয়ে যাই। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বসেরা উৎ‍সবের দিন ৷ পুরাতনকে ভুলে নতুনকে আলিঙ্গন করার দিন ৷ এদিন গোটা বাঙালি আলোড়িত হয়। অথচ জুম্মার খুৎবায় হুজুরেরা কান্নাকাটি করেন, বাংলার মাটিতে বাংলা সালের পরিবর্তে হিজরী সাল প্রবর্তিত হোক। তারাই মূলত প্রধান বিরোধী। ধার্মিকদের মনে রাখা দরকার- যে অনুষ্ঠান বোমা হামলা রুখে দিতে পারেনি সেই অনুষ্ঠান কিভাবে বন্ধ করা সম্ভব হবে?

আমাদের ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে বিশাল ব্যাপার।
আমরা প্রতিবছর ভাষা আন্দোল এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সম্মান প্রদর্শন করি। মনে রাখা দরকার- সংষ্কৃতি কোনো দিন স্থির থাকে না, সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন পরিবর্ধন বিয়োজন হতে থাকে। সংষ্কৃতি তখন ধ্বংস হয় যখন নতুন কিছুকে চেষ্টা না করেই অপসংস্কৃতি এর নাম দেওয়া হয়। আমাদের দেশে শুরু থেকেই এই উৎসব মৌলবাদি জঙ্গীদের কুনজরে পরে। ১৯৯৮ সালে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ জঙ্গী হামলা হয়। এখন বাংলাদেশে ঈদ উৎসবের পর সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন। বাংলাদেশের সাধারন মুসলমানেরা ধর্ম পালনের পাশাপাশি নিজের জাতিগত পরিচয়টাও ধরে রাখার চেষ্টা করে।

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
হ্যাঁ দেশে এখন ১৮ কোটি মানুষ। হয়তো কেহ না খেয়ে থাকে না। ১৮ কোটি, অথচ দেশে কোনো খাদ্যের অভাব নেই। সেই ৭২ সাল থেকেই দেশে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। যা কোনো সরকার সমাধান করতে পারেনি। সরকারি হাসপাতালে দালাল। বেকার। ফুটপাত দখল। চাঁদাবাজি। আজও মানুষ ফুটপাতে ঘুমায়। দূর্নীতি। ইত্যাদি সমস্যা গুলো আশা করি শেখ হাসিনা সমাধান করতে পারবেন। কাজেই এসব বিষয় নিয়েও এখনই আমাদের ভাবা উচিত। যাই হোক, সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। ইসলামে বাঙালি সংস্কৃতি উদযাপনের কোন বাধা নাই। ইয়েস, কোনো বাঁধা নাই। বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ‍্য মন্ডিত নববর্ষ/পহেলা বৈশাখ চিরঅম্লান হয়ে যুগ যুগ বাঙালির প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয়ে বেচেঁ থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২২ দুপুর ১:২৭
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বই : টক অব দ্য টাউন

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৮

বই : টক অব দ্য টাউন



একটি বই হঠাৎ করে এতটা আলোচনায় আসবে আমরা কি ভাবতে পেরেছি ?
বাংলাদেশের মানুষ অতি আবেগপ্রবন , বর্তমান রাজনৈতিক অস্হিরতার মধ্যে ও
বাঙালীর স্বভাবসুলভ অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯

পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছর বৃষ্টিপাতের কারণ কী?



পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে প্রায় সারা বছরই বৃষ্টিপাত হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকার কিছু দেশ এবং দক্ষিন আমেরিকার কিছু দেশ ও অঞ্চলে বছরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×