somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সময় তখন ১৯১৯ সাল।
ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের অমৃৃতসর (অমৃতসর শিখ সম্প্রদায়ের একটি পবিত্র শহর) শহরে ইংরেজ সেনানায়ক ব্রিগেডিয়ার রেগিনাল্ড ডায়ারের (১৯২০ সালের মার্চে ডায়ারকে পদত্যাগ করতে বলা হলো। পরে একসময় তিনি নিজেও তার কাজের জন্য অনুশোচনা করতেন। ১৯২৭ সালে ইংল্যান্ডের সমারসেট কাউন্টিতে তার মৃত্যু হয়) নির্দেশে এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। যার পরিণতি স্বরূপ সেদিন সেখানে শত শত মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বড় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় অসংখ্য মানুষের। সেখানে অনেক ছোট ছোট বাচ্চাও ছিলো। এই হত্যাকান্ডে ঈশ্বর কি একটুও বিচলিত হননি? তার খারাপ লাগেনি? নাকি তার ইচ্ছাতেই এমনটা হয়েছে?

১৮৫৭ সালে ভারতবর্ষ সম্পূর্ণরূপে ইংরেজ শাসনের অধীনে আসে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫১ সালে ভারত সরকার জালিয়ানওয়ালাবাগে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে। বানোয়ারিলাল চৌধুরী নামে একজন শান্তিনিকেতনে এসে রবীন্দ্রনাথকে শুনিয়ে ছিলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের মর্মান্তিক সংবাদ। প্রতি বছরই তিরিশে চৈত্র অমৃতসর শহরে খুব বড় আকারের বৈশাখী উৎসব হয়। কাছাকাছি গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানূষ আসে। প্রায় হাজার দশেক মানুষ সমবেত হয়েছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ নামে একটি পার্কে, সেটি চর্তুদিকে দেয়াল দিয়ে ঘেরা, একটি মাত্র প্রবেশের রাস্তা। ছোট ছোট বাচ্চারা বাবার হাত ধরে মেলায় গেছে সেদিন। কত মানুষের স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেলো মুহুর্তে!

জেনারেল ডায়ার তার সেনাবাহিনী নিয়ে এসে সেই প্রবেশ পথ আটকে দেয়।
সাধারণ মানুষকে ছত্রভঙ্গ হতে বলা হলো না, কোনও সাবধান বাণী উচ্চারণ করা হলো না, জেনারেল ডায়ার বীরদর্পে হুকুম দিলেন গুলি চালাতে। অস্ত্রহীন, শান্ত, নিরীহ মানুষের দল, তাদের মধ্যে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধও ছিল, গুলি খেয়ে মরতে লাগল পোকা-মাকড়ের মতন। শত শত নিহত ও আহতের আর্তনাদও ছাপিয়ে গিয়েছিল গুলির শব্দে। রক্তে পুরো এলাকা মাখামাখি। রাস্তাটা সরু বলে মেশিনগান আনা যায়নি, বন্ধুকের টোটা একসময় ফুরিয়ে গেল বলেই সকলকেই শেষ করা গেল না। দিন শেষ হিসাব করলে, ইংরেজরা কি ভারতবর্ষের উপকার করেছে না ক্ষতি করেছে? ভারতের সমস্ত ধন সম্পদ চুরী করে নিয়েছে ইংরেজরা।

রবীন্দ্রনাথ এই অবস্থার কথা জেনে ক্ষুদ্ধ, উত্তেজিত।
ভাবলেন কিছু একটা অবশ্যই করা দরকার। অ্যান্ডুজকে তিনি দিল্লীতে গান্ধীজির কাছে পাঠালেন একটা প্রস্তাব দিয়ে। গান্ধীজি রাজী থাকলে তিনিও দিল্লি চলে যাবেন। তারপর ওরা দু'জনে একসাথে পাঞ্জাবে প্রবেশ করার চেষ্টা করবেন। পাঞ্জাবের বাইরের লোকের প্রবেশ তখন নিষিদ্ধ। রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজিকে নিশ্চিত গ্রেফতার করা হবে, সে সংবাদ গোপন রাখা যাবে না, প্রচারিত হবে বিশ্বের সর্বত্র। এটাই হবে প্রতিবাদ। রবীন্দ্রনাথ সহজ সরল ভালো ও নরম মনের মানুষ। তিনি আর কি করতে পারেন? তার হাতে বন্ধুক তুলে দিলেও ডায়ারকে গুলি করে মেরে ফেলতে পারবেন না।

গান্ধীজি এই প্রস্তাবে রাজী হননি। তারপর তিনি চিত্তরঞ্জন দাশের বাড়িতে গেলেন।
কবি বললেন, পাঞ্জাবের ঘটনায় বাঙ্গালিরা কেউ প্রতিবাদ করবে না? তিনি এটা সহ্য করতে পারছিলেন না। তখন কবি মনে মনে ভাবলেন, আমাকেই যদি সব দায়িত্ব নিতে হয়, তা হলে আর সভা ডেকে লোক জড়ো করার দরকার কী, নিজের কথা লিখেই জানাব। ইংরেজ সরকার আমাকে খাতির করে 'নাইটহুড' দিয়েছিল। যে -সরকার আমার দেশের মানুষের ওপর এমন নৃশংস অত্যাচার করে, সেই সরকারের দেওয়া খেতাব আমার দরকার নেই। জালিয়ানওয়ালাবাগের প্রতিবাদে আমি নাইটহুড ফিরিয়ে দিচ্ছি।

অনেক কাটাকুটি করে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন, ( কী জ্বলন্ত ভাষা )-
The time has come when badges of honour make our shame glaring in their incongruous content of humiliation, and I for my part wish to stand, shorn of all special distinctions, by the side of my countrymen...
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণভবনের গুপ্তধন!!!

লিখেছেন অনুপম বলছি, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬

♦️উনার চরিত্র হননের জন্য গণভবন খুলে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন হাজার হাজার কোটি টাকা পাবে, বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখবে জাতি, সোনা-দানা হীরা-জহরত মণি-মুক্তায় পূর্ণ থাকবে গণভবন!
♦️লুটপাটকারি থেকে শুরু করে আপনারা বকরি হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষ আপনাদের ১৩ কোটি টাকা অন্ধের মতন দিসে বন্যার্তদের মাঝে দান করার জন্য

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

ত্রানের টাকা চুরি হয় নাই,ব্যাংক একাউন্টে আছে, মানুষ আপনাদের ১৩ কোটি টাকা অন্ধের মতন দিসে বন্যার্তদের মাঝে দান করার জন্য। এগুলো কারো মৃত মায়ের জমানো টাকা, কারো স্বর্গবাসী পিতা মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ক্লান্তি অনুভব হলেই সবুজের কাছে ফিরে যাই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪২



©কাজী ফাতেমা ছবি
যখনই ক্লান্তি ছুঁয়ে যায় চোখ, চোখের কিনারে ঝাপসা আলো
সবুজের কাছে যাই, যেখানে কেবল সবুজের হাতছানি,
সকল ভ্রান্তি মুছে যায়, লাগে বড় ভালো,
মিহি হাওয়ায় সুখে হয় উতলা মনখানি।

যখনই... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিজার্ভ, ক্যাশ ও সরকারের বড় বড় ব্যয়ের খাত সম্পর্কে জানানোর দরকার ছিলো।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



**** পোষ্ট সামনের পাতায় যায় না; পোষ্টটিতে নতুন কিছু আছে মনে হলে, ১টি লাইক দিবেন, ধন্যবাদ। ****

সরকার পতনের পর, ১ জন সচেতন নাগরিক প্রথমেই দেশের নতুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাগ্যিস বিখ্যাতগণ নেই.......

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:১৩

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

সকল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×