somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এইসব দিনরাত্রি

১৩ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুরভিকে বিয়ে করে নিয়ে এলাম।
সুরভির বাবা পড়লেন বিরাট বিপদে। কারন এখন ঘর সংসার কে সামলাবে! সুরভির মা বেচে নেই। অনেক খোজটোজ করে একজনকে পাওয়া গেলো। তার নাম শাহানা। এই শাহানা রান্না করবে। ঘর দেখভাল করবে। বাসায় মাত্র দুজন, সুরভির বাবা আর এক ছোট ভাই। বাকি দুজন বিদেশ। শ্বশুর সারাদিন বাইরে থাকে। সকালে কোর্টে বিকালে চেম্বারে। সুরভির ভাই চাকরি করে। সেও সকালে বের হয়, রাতে ফিরে।

শাহানাকে আমরা সবাই আপা বলে ডাকি।
বিক্রমপুর বাড়ি। রান্নার হাত দারুন। ভদ্র মার্জিত। সবচেয়ে বড় কথা ব্যাক্তিত্ব আছে। তার রান্না খেয়ে আমি মুগ্ধ! আমি যেদিন যেতাম, শাহানা অনেক পদ রান্না করতো। অনেক সেবাযত্ন করতো। আমার মনে হয়, শ্বাশুড়ি বেচে থাকলেও, এতটা করতে পারতো না। শাহানা শ্বাশুরির অভাব ভুলিয়ে দিয়েছে। শাহানার এক মেয়ে, এক ছেলে। দুজনেই লেখাপড়া করে। শাহানার স্বামী নিখোঁজ। ১১ বছর ধরে তার কোনো খোজ খবর নেই। শাহানা কোনো রকমে সংসার টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছে। ছেলে কলেজে পড়ে।

একদিন শাহানার স্বামী ফিরে আসে।
শাহানা ভীষণ খুশি। লোকটাকে আমি দেখলাম। লম্বা মতোন। বুড়ো হয়ে গেছে। হাসিখুশি মানুষ। আমি বললাম, এত দিন কোথায় ছিলেন? উনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় গিয়েছিলাম। আমি বললাম, স্ত্রী ছেলেমেয়ে রেখে? লোকটা হাসলো। বললো, আল্লাহর রাস্তায় গেলে এত কিছু ভাবলে চলে না। শাহানা বলল, ভাইজান উনি গানবাজনা পছন্দ করেন। মাজারে মাজারে ঘুরেন। বাউলদের সাথে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম ঘুরে বেড়িয়েছে। আমি কি পারবো, মা, ভাই, বউ আর মেয়েকে রেখে এমন করে চলে যেতে? নো নেভার।

যাইহোক, শাহানা কাজ ছেড়ে চলে গেলো।
সে ভীষণ খুশি। তার স্বামী ফিরে এসেছে। ছেলেমেয়েরাও খুশি। শাহানা চলে যাওয়াতে সুরভি পড়লো বিপদে। সুরভির বাবা আর ভাইয়ের না খেয়ে থাকতে হবে। আবার খোজ খবর করে একজন পাওয়া গেলো। চাঁদনীর মা। চাঁদনীর মা এসেই ইউটিউব সিনেমা দেখতে বসে যায়। দুপুরে আমার শ্বশুর বাসায় আসে। এসে দেখে রান্না করে নাই চাঁদনীর মা। সে ঘুমাচ্ছে। শ্বশুর বয়স্ক মানুষ। অসুস্থ। কিন্তু চাঁদনী তার ইচ্ছে মতো চলতে থাকলো। সে কোনো কথাই শুনে না। তাকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সে আরো পাচ হাজার টাকা চায়। না বলে দুই তিন আসে না। ফোন করলে ফোন ধরে না। তাকে মাছ রান্না করতে বললে, মূরগী রান্না করে। জামা কাপড় ধুতে চায় না। বলে লন্ড্রিতে দেন।

সুরভি তার বাপ ভাইয়ের চিন্তায় অস্থির।
সারা দিনই সে মন খারাপ করে থাকে। চাঁদনীর মাকে ফোন দিয়ে বুঝায়। কিন্তু কোনো লাভ হয় না। সে নেচে গেয়ে টিকটক ভিডিও করে। মাছ মাংস ফ্রিজে যা থাকে চাঁদনীর মা রান্না করে নিয়ে যায়। বলে, বাসায় আমার স্বামী আছে। আমি সারাদিন থাকি এই বাসায়, তাহলে আমার স্বামী কি না খেয়ে থাকবে? সবচেয়ে বড় কথা চাঁদনীর মা মুখে মুখে তর্ক করে। বেয়াদবি করে। শ্বশুর মশাই একদিন কোর্ট থেকে ফিরে দেখেন চাঁদনী রান্না করে নাই। ঘুমাচ্ছে। শ্বশুরের খুব রাগ হলো। চাঁদনীকে বলল, তুমি জানো আমি অসুস্থ মানুষ। আমাকে সময় মতো খেতে হয়। তুমি কেন রান্না করলে না? চাঁদনীর মা বলল, ফুড পান্ডা থেকে অর্ডার করে নিন। চাঁদনীকে বিদায় করে দেওয়া হলো।

বর্তমানে যে আছে অর্থাৎ যাকে রাখা হয়েছে সে চোর।
সে শুধু টাকা চুরী করে। শ্বশুরের ওয়ালেট থেকে সুযোগ পেলেই টাকা চুরী করে। একদিন আমার পকেট থেকেও টাকা নিয়েছে। এখন সুরভি তার বাবার বাড়িতে। সুরভির ব্যাগ থেকেও টাকা নিয়েছে। এই হলো বর্তমান অবস্থা। আরো দুখজনক হলো তার রান্না ভালো না। শ্বশুর দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছেন। উনি সুরভিকে বলেন, আমি আর বেশি দিন বাচবো না। আমার শরীরের অবস্থা ভালো না। সুরভি কান্না করে। আমার শ্বশুর মানুষ হিসেবে ভালো। সৎ এবং কাজ পাগল মানুষ। তার সাথে যখন আমার প্রথম কথা হয়, উনি বলেছিলেন আমার বাবা একজন কৃষক। আমি কৃষকের সন্তান।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:০৭
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×