আমি কয়েকদিন দরে অসুস্থ। ল্যাব এইড হাসপাতালে ডাঃ আজহারুল হককে আমার মাথাটা দেখিয়েছিলাম, বল্লাম স্যার মাথাটা চালু আছে কিনা? আমার মাথায় তো কিছু থাকেনা, এক কান দিয়ে শুনি, আরেক কান দিয়ে বের হয়ে যায়। আমার স্ত্রী সাথে সাথে রাগ করে নালিশ জাতীয় কিছু বলতে লাগলো। ডাক্তার বল্লো সমস্যা নাই, আপনি এক কান দিয়ে শুনেন, আরেক কান দিয়ে বের হয়। আপনার স্ত্রী তো এক কান দিয়ে শুনে, আর মুখ দিয়ে বের করে।
যাক, আমি বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলাম, কিছুটা অনুভব করলাম মৃত্যু যন্ত্রণা কত কঠিন হতে পারে। সেই সময় পার্থিব এবং পারলৌকিক যে চিন্তা মাথায় আসে পৃথিবীর যেকোন মানুষ সে চিন্তা জাগ্রত রাখলে তার দ্বারা কখনো অন্যায় কাজ করা সম্ভব না।
ভাবলাম আহ্ এই বিশ্ববিদ্যালয়, এই ছাত্রলীগ কত ভুল শিক্ষাই না আমাকে দিয়েছে। কতজনকে মারলাম, কতজনের মাথা বাড়ি দিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। কত অন্যায় করলাম, এগুলার মাফ পাবো কিভাবে?
কেমন জানি বাঙালি হিসেবেও আমরা বর্বর হয়ে উঠছি। ভাষা আন্দোলনে সালাম বরকত রফিক জব্বার নিহত হয়েছিল, ইতিহাস শ্রদ্ধাভরে আজও তাদের স্বরন করে। কিন্তু হায় এখন রাস্তায়/মিছিলে/সমাবেশে/ক্রসফায়ার/হরতাল/অবরোধের নামে কত শত শত সালাম বরকত রফিক জব্বার অকালে হারিয়ে যাচ্ছে। এটা এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার, কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাহলে কি আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক ও মানবিক উদারতা থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি?
আরেকটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেখছি আজকাল বাংলাদেশে নারী প্রগতি নারী ঐক্যমন্ছের নামে আমাদের মা বোনদের রাস্তায় নামিয়ে ইজ্জত লুণ্ঠন করা হচ্ছে। মা বোনদের বানিয়ে দেয়া হচ্ছে পন্য। অবাক হই যখন দেখি কাছের বন্ধুরাই মেয়েদের "মাল" বলে সম্বোধন করছে। অবশ্য একদিকে মাল বলাটাও তো অস্বাভাবিক বলবো কিভাবে? আজকাল কর্পোরেট কম্পানিগুলাতো মেয়েদের মাল মানে পণ্য বানিয়েই ছাড়ছে। ফ্রিজ টেলিভিশন মোবাইল আর গাড়ীর বিঙ্গাপনই বলেন মনে হয় ফ্রিজ মোবাইল কিনবো না, কিনবো মেয়ে। বাণিজ্য মেলায় গিয়েছিলাম দেখি ওমা কত সুন্দর সুন্দর "মেয়ে" স্টলে সাজিয়ে রাখছে বিক্রির জন্য। পরে বুজলাম, না মেয়ে না স্টলে গাড়ী বিক্রি করে। মেয়েগুলিই নাকি গাড়ীর আকর্ষন বাড়াচ্ছে। কি পিকুলিয়ার!
চ্যানেল আইতে একবার বাচ্ছাদের ক্ষুদে গানরাজ একটা অনুষ্ঠান দেখছিলাম। ৬/৭ বছরের একটা বাচ্ছা হবে হয়তো, একটা গান গাচ্ছে "তুই যদি আমার হইতিরে, ও বন্ধু আমি হইতাম তোর, কোলেতে বসাইয়া তোরে করিতাম আদর" গান শেষে বিচারক বাচ্ছাটিকে বল্লেন, আরো আবেগ দিয়ে গাইতে হবে। আবেগের অভাব। মূলত সেইদিনই বুজলাম আসলে বাংলাদেশে কিসের অভাব!!!
আমাদের একটা সন্তান জন্ম হওয়ার সাথে সাথে আমরা গানের শিক্ষক, নাচের শিক্ষক ঠিক করে ফেলি। আপচুছ কোরান শিক্ষাটা দেয়ার সময় হয়ে উঠেনা।
আজকে আমার সকল বন্ধুদের সামনে ওয়াদা করছি আল্লাহ আমাকে বাছিয়ে রাখলে, এবং আমাকে সন্তান দান করলে আমি আমার সন্তানকে কুরআনের শিক্ষা দিয়ে একজন সত্যিকারের আলেম বানাবো। হে আল্লাহ তুমি আমার সন্তানকে সুলতানুল আরেফিন বানিয়ে দিও, অন্ততঃ আমার সন্তানের উছিলায় আমি গুনাহগারকে জান্নাত দিও, আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪