আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা আমাদেরকে একটি পঙ্গু মেরুদন্ডহীন জাতি উপহার দিচ্ছে।
এখন ই অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখনো যদি এর দরকারি সংস্কার না করা হয়, তবে আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে ঠেকবে এর কোন ইয়ত্তা নেই।
প্রথমত, বয়সের দিকটা দেখেন, অনার্স পাশ করে মাস্টার্স শেষ করতে করতে ২৬-২৭ বছর পার হয়ে যায়। ভাল একটা জব খুজতে খুজতে বয়স চলে যায় ৩০ এর কোটায়। তারপরে হবে বিয়ে, গাড়ি-বাড়ি ওসব। কিন্তু আমাদের দেশে বেতনের যেই হাল, মিথ্যা আশা আর ভরষা দিয়ে বিয়ে ঠিকই করে ফেলা যায় কিন্তু গাড়ি আর বাড়ি স্বপ্ন ই থেকে যায়। এটা হল স্বাধারনের কথা। অথচ একজন ছেলে বা মেয়ে ১৮ বছর বয়সেই পূর্ন প্রাপ্তবয়স্ক, উপার্যনের জন্য আইনসিদ্ধ। অথচ আঠার হতে হতে আমাদের না দেওয়া হয় কোন কর্মমুখী প্রশিক্ষন; না দেওয়া হয় কাজের সুযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকজন নিয়মিত ছাত্রের আইনত ভাবে উপর্যনের যোগ্য হলেও কোন সুযোগ আদৌ নাই। এমন কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে পড়ার পাশাপাশি একজন ছাত্র আট টা টু পাচ টা ফুলটাইম কাজ করতে পারবে। ফুলটাইম তো দূরে থাক পার্টটাইমের ও সুযোগ নাই। আর কেউ কাজ করতে চাইলেও আমাদের সিস্টেম আমাদের যোগাযোগ ব্যাবস্থা এত সংকীর্ন করে রেখেছে যে, দশ মিনিটের রাস্তা দু ঘন্টাও যাওয়া যায় না। সুতরাং কাজের সুযোগ নেই বসে বসে খাও,, চালের দাম কমিয়ে দেবো। হায় রে বোকা পাইলো রে, আমার পাবলিক রে!
এখন, আসি; এই শিক্ষা ব্যাবস্থা আমাদের কি শিখাচ্ছে তাতে। একটু চিন্তা করে দেখেন এই শিক্ষা ব্যবস্থা কতটুকু বাস্তবধর্মী। মাথায় দুটো শিং ওয়ালা একটা অদ্ভুত অবাস্তব প্রানী, যে নাকি আবার মাঠে দুটো ডিম ও পারে! এরকম হাজারো মিথ এবং অপ্রয়োজনীয় তথ্যে ভরপুর করে দিচ্ছে আমাদের মস্তিস্কে। যারা আজ পড়াশোনা শেষ করে কর্মক্ষেত্রে চলে আসছি; তারা ভাল অনুধাবন করতে পারবে আমার জিবনের প্রয়োজনীয় শিক্ষার কত শতকরা আমাকে স্কুলে শিখিয়েছে বা স্কুল থেকে শিখার কত শতকরা আমাদের বাস্তব জিবনে কাজে লাগতেছে। বিশ্বাস করেন, বেশির ভাগের কাছে এই শতকরাটা নাইমাত্র একটা সংখ্যা হবে।
শেষে এবং সংক্ষেপে সিস্টেম মেকারের কাছে এই আকুতি ই থাকবে, আমাদের কে ১৮ বছর হবার আগেই ১০০শত ভাগ তরুনকে কর্মমূখী প্রশিক্ষন দেওয়া হোক। এর পর সবাইকে কাজ দিতে হবে না কাজের সুযোগ দিলেই হবে। উচ্চ শিক্ষাও কেন বইয়ের পাতায় বন্ধি থাকবে! উচ্চশিক্ষা হবে গভেষনা ধর্মী। আর সাইকেল নিয়ে গভেষনা করতে হলে আগে সাইকেল চালাতে হবে। সুতরাং আগে কাজের সুযোগ দিন তারপর হবে গভেষনাধর্মী বাস্তবমূখী উচ্চ শিক্ষা।
বিশ্ববিদ্যায়ন গুলোও কিন্ডারগার্ডেনের মত আমাদেরকে বইয়ের পাতায় খোঠার মত বেধে রাখতেছে। ( খোঠা:-গরু বেধে রাখার জন্য বিষেশ কাঠি বা খুটি )
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষার ধরন কেন আদৌ বাস্তবমূখি হচ্ছে না; এটা এক বিরাট রহস্য।