somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোডিয়াম বাতির নীচে একটি লাল গোলাপ

১৯ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাদেক এখন মিটিমিটি হাসছে কারন তার সামনে যে ছেলেটি বসে আছে তাকে একটু পর কঠিন একটা ছেচা দেয়া হবে। সেটা দিবেন তার বড় স্যার। সাদেকের বড় স্যার পুলিশের মস্ত বড় অফিসার ছিলেন , রিটায়ার করেছেন। তার সামনে কত অপরাধী প্রশ্ন করার আগেই জামাকাপড় ভিজিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। আজকে এই বান্দর পোলার পালা। সাদেকের উপর ভার পড়েছে ছেলেটা যাতে বসার ঘর থেকে পালিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে। তার মতে এই সব ছেলেকে সকাল বিকাল নিয়ম করে দুইবেলা থাপরানো দরকার। কত্ত বড় সাহস , ছোট ম্যাডাম কে গোলাপ ফুল দেয় - তাও আবার বড় স্যারের সামনে !

গম্ভীর মুখে রকিব সাহেব ফারহানের সামনে বসলো। তার মুখে পাইপ , ধোয়া উঠছে। ফারহানের মতে বাংলাদেশের খুব কম মানুষের মুখে পাইপ মানায় এবং আশ্চর্য হলেও সত্যি যে রকিব সাহেবের মুখে তা বেশ ভাল মানিয়েছে। নীরবতা প্রথম ভাঙ্গলেন রকিব সাহেব।

- তুমি অহনাকে গোলাপ দিয়েছো , ভাল কথা - কিন্তু আমার সামনেই কেন দিয়েছো ? লুকিয়ে দিলেও তো পারতে !
- লুকিয়ে দিলে তো আর আপনি দেখতেন না যে কে অহনাকে গোলাপ দিয়েছে , অহনা কার কাছ থেকে গোলাপ নিয়েছে - আর আমাকেও বাসায় এনে এসব জিজ্ঞেস করতেন না !
- কিন্তু কেন দিলে? একটা মেয়েকে লাল গোলাপ দেবার মানে কী তুমি বুঝো ?
- হুম , আমার মা বলেছে - তাকেই লাল গোলাপ দিতে যাকে হৃদয়ে স্থান দেয়া যায় মনের মানুষ হিসেবে।
- তোমার ভয় করলো না ? তুমি তো এখনো নিজেরই দায়িত্ব নিতে শিখো নি , অহনার কী ভাবে নিবে ?
- আমি পারবো , কারন অহনাকে আমি ভালবাসি , অহনাও আমাকে ভালবাসে। কিন্তু ও একটা শর্ত দিয়েছিল , তাই পূরণ করতে গিয়ে আপনার সাথে দেখা হয়ে গেল এবং আমি দুঃখিত যে শর্তটির কথা আমি আপনাকে বলতে পারবো না। আংকেল আমি এখন আসি , রাত হয়ে গেছে - কালকে প্রেজেনটেশন আছে , অনেক কাজ করা বাকী , পরে কথা হবে।

রকিব সাহেবের উত্তরের অপেক্ষা না করেই ফারহান চলে গেল। তার গতিপথের দিকে তাকিয়ে থেকে রকিব সাহেবের মনে পড়লো নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা। এমনই ভাবে একদিন সে অহনার মাকে তার বাবার সামনে ফুল দিয়ে ধরা খেয়েছিল। আজ এত বছর পরে অহনা তার পুনরাবৃত্তি করল! অহনার দাদু সেদিন রকিব সাহেব কে ফিরিয়ে দেন নি। রকিব সাহেব ঠিক করলেন তিনিও ফারহান কে ফিরিয়ে দেবেন না। ছেলেটির না বলে যাওয়া শর্ত যেটি অহনা তাকে দিয়েছিল তাও তিনি জানেন। কারন অহনার মা তাকেও একদিন শর্ত দিয়েছিল যে যদি তার বাবার সামনে রকিব তাকে লাল গোলাপ দিতে পারে তাহলে তাকেই তিনি বিয়ে করবেন। অহনার মা আজ বেচে থাকলে অনেক খুশি হতেন শুনে যে তার মেয়ে তারই মত আরেক পাগলকে খুজে বের করেছে , পছন্দ করেছে।

সন্ধ্যা রাতে রাস্তার ডিভাইডারের সোডিয়াম লাইটের নীচে বসে আছে ফারহান। তার পাশে হাতে লাল গোলাপ নিয়ে বসে আছে অহনা। ফারহান আনমনে তাকিয়ে আছে আকাশের তারা গুলোর দিকে। আর অহনা তাকিয়ে আছে ফারহানের দুই চোখের দিকে। অহনার বিষ্ময় কাটে না , অদ্ভুত সুন্দর এই চোখ জোড়াই তাকে বাধ্য করে অবিরত ফারহানের দিকে নির্লজ্জের মত তাকিয়ে থাকতে। অহনার মাথায় খালি হেনরির কয়েকটা লাইন ঘুরছে ...

Love is you and love is me
Love is prison and love is free
Love’s what’s there when you are away from me
Love is…
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×