যে দুটি বিষয় নিয়ে লিখতে যাচ্ছি, তার প্রথমটি ইনটেনশান বা অভিপ্রায়। ইনটেনশান বা অভিপ্রায় কি? সহজ উত্তর, আমি আপনি সজ্ঞানে বা অজ্ঞাতসারে প্রতিদিনই যা করছি তা। আরেকটু ভেঙ্গে বলি, যদি নিজেকে অবলোকন করেন তাহলে বুঝতে পারবেন, মনের ভেতর ও বাইরে থেকে আসা নানা প্রসঙ্গ আমাদের সবসময় এনগেজড করে রাখে। দিনের পর দিন, বছরের পর ধরে চলা এসব চিন্তাভাবনা মস্তিষ্কে আপন সার্কিট তৈরী করে। এটাই অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়। শুধু অভ্যাস? না, বরং পুরো জীবন যাপন রীতির নিয়ন্ত্রক হয়ে দাঁড়ায়। আপনি আমি তো সেই মানুষ, যে মানব বৈশিষ্ট্য আমরা একাকী মনের ভেতর ধারন করি।
স্বচ্ছ অভিপ্রায় জীবনের চলার পথকে সহজ করে দেয়। সাফল্য তখন বাইপ্রোডাক্ট। আবার অস্বচ্ছ অভিপ্রায় ধারন করা মানুষের সাফল্য সাময়িক হলেও সেটা তার ও কাছের মানুষের জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখতে পারে না। মানুষ যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে চায়, সেটা ভালো বা খারাপ যেদিকেই হোক না কেন, তাহলে সবচেয়ে বেসিক কাজ করার জায়গাটা হচ্ছে তার ইনটেনশান বা অভিপ্রায়। বিষয়টা এমন না যে আমি মনকে বললাম, আজ থেকে এই কাজ করবো, এরপর করাটা সহজ হয়ে গেল। ইনটেনশান একটা নিয়মিত চর্চার ব্যাপার। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেকে নিজে সাজেশন দেওয়ার মতো ব্যাপার। বেসিক এই স্কিলটার চর্চা মৃত্যুর আগে দিনেও করে যেতে হয়। সবাই নিজের প্রয়োজন অনুসারে ইনটেনশানের চর্চা করুন। এই শুভকামনা জানিয়ে প্রথম অংশ শেষ করছি।
আমার আজকের লেখার দ্বিতীয় অংশ। প্রসঙ্গটি সাময়িক বিরতি নিয়ে৷ আমার একমাত্র নিকের বয়স নয় বছর, অনেকদিন ধরেই একটিভ ছিলো না। করোনার মাঝে নিক নিয়ে রীতিমত পাসওয়ার্ড উদ্ধার করে ব্লগে কেন ফিরে আসা হলো, সেটার উত্তর আমি নিজেও জানি না। তবে মনে হয়, এই সময়ে কর্মজীবনের প্রয়োজনে আমাকে কয়েকবার কোয়ারান্টাইনে থাকতে হয়েছিল, সেখান থেকে ব্লগে ঢু মারতে গিয়েই আবার নিক সচল করার ইচ্ছেটা এলো। আমি অনিয়মিত ব্লগার, করোনার কারনেই বরং নিয়মিত হয়েছি। এবং আমি মোটেও ভালো লেখক নই। ছোট গল্প লিখতে পছন্দ করতাম, ব্লগে সেগুলোর কয়েকটি পোস্ট করেছিলাম, ব্যস এটুকুই। ব্লগারদের সাথে ইন্টারেকশন বলতে গেলে, তিন থেকে চারজনের সাথে আমার ব্যক্তিগত জীবনে দেখা হয়েছে।
আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। এক, আমি নারী বিদ্বেষী ( যার যুক্তিযুক্ত কোন প্রমান ব্লগে অভিযোগকারী দিতে পারেননি) , দুই, আমি ব্লগারদের বই মেলা নিয়ে গালি দিয়েছি ( মোটেও তা নয়। করোনার কেস কেমন বাড়ছে তা সবাই দেখছেন, বোধহয় কোন সহব্লগারের পোস্টে যারা করোনার মধ্যেও পাঠকদের স্টলে এসে দেখা করে আডা দিতে বলেছেন তাদের জন্য আমি এক ইতর শ্রেনীর প্রানীর নাম বলেছি, সেটা মোটেও ব্লগারদের বিরুদ্ধে দেওয়া কোন গালি নয়, যুক্তিযুক্ত প্রমান অভিযোগকারী দেখাতে পারেনি) আমার বিরুদ্ধে তিন নম্বর অভিযোগ হচ্ছে, আমি ব্যক্তিগত আক্রমন করেছি ( আমার মনে হয় আমি করে থাকতে পারি দুইএকটি ক্ষেত্রে, তবে যিনি অভিযোগ করেছেন তাকে ব্যক্তিগত আক্রমনের প্রশ্নই আসে না, কাউন্টার কমেন্ট ব্যক্তিগত আক্রমন হলে ব্লগাররা ব্লগে কমেন্টই করতে পারতো না)। আমার জানা মতে আমি ব্লগার সাজিদ আবির কে একবার ব্যক্তিগত আক্রমন করেছিলাম, সেটারও সেসময়ে কারন ছিল। পরে আমি সহব্লগার হিসেবে আমাদের দূরত্বটা কমিয়ে নিয়েছি যতটুক পারি।
আজ এক সহব্লগার পোস্ট দিয়েছেন। তিনি আমার দ্বারা ব্যক্তিগত আক্রমনের শিকার হয়েছেন ( তিনি আমাকে দায়ী করে পোস্ট আগেও দিয়েছিলেন, তার যুক্তি খন্ডন করে আমি কাউন্টার পোস্ট দিয়েছিলাম, তিনি যে ভুল অভিযোগ করেছেন তা ধরিয়ে দেওয়ার পর তিনি তার লেখা সরিয়ে নিয়েছিলেন) ।
যিনি আজ তার দুটো নিক থেকে আমাকে দায়ী করে ব্লগকে বিদায় বলছেন, তার সাথে সেই অনভিপ্রেত ঘটনার পর তারই অন্য পোস্টে গিয়ে আমি সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টাও করেছি ( যদিও আগ বাড়িয়ে ভালো মানুষ সাজার দরকার ছিল না আমার)। কিন্তু এতোদিন পর হঠাৎ করে আজকের লেখায় যেভাবে ঢালাও ভাবে তিনি অভিযোগ করলেন, তাতে মনে হলো - ব্লগে থাকাটা নিয়ে নিজেকেই আমার আরেকবার প্রশ্ন করা দরকার।
উত্তরটা পেলাম - সাময়িক বা পূর্ণ বিরতি। আমার কারনে সত্য বা মিথ্যে হোক কেউ ব্লগ থেকে বিদায় নিবে আর অভিযোগের দায়ভার নিয়ে আমি ব্লগিং করে যাবো তা আমাকে প্রশান্তি দিবে না। এছাড়াও জীবনে একটা সময় আসে যখন ফোকাসটা একমুখী রাখতে হয়। সেরকম একটা সময় আমিও পার করছি।
আমি এই মুহুর্তে আজ সামহোয়্যারইনকে বিদায় বললাম। আমি চাই যিনি আমার কারনে ব্লগকে বিদায় বলতে যাচ্ছেন তিনি ব্লগে থাকুন। শুভকামনা সবার জন্য।
কোন দিন ব্লগের সত্যিকারের, সত্য লেখার, সত্য চরিত্রগুলোর সাথে দেখা হবে হয়তো। ততোদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
আল্লাহ হাফেজ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:২২