somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ডাক্তার কিন্তু সিরিয়াল কিলার ??? (কত অজানা রে পার্ট-১৬)

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডাক্তার ... একটি মহান পেশার পেশাজীবিদের নাম ... যেখান মানুষ আসে তার অসুস্থতায় সেবা নিতে, তার শারীরিক কষ্ট দূর করতে ... কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষ তার নৈতিকতা হারিয়েছে, ডাক্তাররা তাদের পেশাটাকে ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছে। আজকাল মানুষ ডাক্তারদের উপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। কিছু কারন আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার, কিছু কারন অর্থনৈতিক। আমি নিজে যেহেতু এই পেশায় আছি সেহেতু এই ব্যর্থতার দায় আমাকে নিতেই হবে। সচেতনতা ও মুল্যবোধ আমাদের সকল দায় থেকে মুক্তি দিতে পারে। আমাদের লক্ষ রাখতে হবে যেন স্বাস্থ্য-সেবার এই সব "এন্জেল"
রা যেন "ডিমন"এ পরিনত হতে না পারে।
আজ বলবো এমন কিছু ডাক্তারের কথা যারা ডাক্তার রূপী ডিমন ছিল যাদের কাছে ভুলেও আপনারা কোনদিনই চিকিৎসা নিতে যাতে চাইবেন না।

১) Dr. Josef Mengele (1911–1979)


Josef Rudolf Mengele ... নামের সাথে যে ব্যক্তির ম্যান-গিলি লাগানো সে তো মানুষ গিলবেই। তাকে বলা হয় “The Angel of Death”।
আমার তালিকায় এই লোকটা প্রথম কারণ তিনি সর্বোচ্চ পরিমান হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার নিষ্ঠুরতা নাজি বাহিনীর নিষ্ঠুরতাকেও ছাড়িয়ে যায়।

ফ্র্যাঙ্কফুর্টে মেডিকেল স্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার পর, Mengele SS এর মেডিক্যাল কোরে ভলানটিয়ার হিসাবে কাজ করা শুরু করে, পরে সেখানে সে সৈনিক হিসাবে জয়েন করে এবং ১৯৪৩ সালে তিনি ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হয় এবং মেডিকেল অফিসার হিসাবে কুখ্যাত নাত্সী কনসেনট্রেশন ক্যাম্প Auschwitz-Birkena তে যায়।

Mengele শীঘ্রই তার ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করে। সে শিশুদের ব্লকের দেয়ালে মেঝে থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার উচুতে লাইন টানে। লাইনের নিচে যে সব শিশুর হাইট হতো তাদের গ্যাস চেম্বারে পাঠিয়ে দেয়া হতো। অবশিষ্ট শিশুদের হিউম্যান এক্সপেরিমেন্টের জন্য ব্যবহৃত হয়। সে টুইনদের ব্যপারে ছিল বিশেষ আগ্রহী। Mengele চক্ষুগোলকের মধ্যে রাসায়নিক ইনজেকশনের দ্বারা জোড়া চোখের রঙ পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। সে মানুষের পিঠে ডানা লাগানোর চেষ্ঠা করে এবং এছাড়াও মেয়েরা শক দিতেন ধর্য্য পরীক্ষা দেখার জন্য। সে মানুষের গায়ে কানকো লাগানোর চেষ্ঠা করে। এক্সপেরিমেন্ট সম্পন্ন হবার পর, সাধারণত যারা বেঁচে যেত তাদের মেরে ফেলা হতো এবং তাদের মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করা হতো।

Mengele যুদ্ধের পর জার্মানিতে ছদ্মপরিচয়ে লুকিয়ে থাকে, নির্দিষ্ট সময়ের পরে, সে দক্ষিণ আমেরিকায় পালিয়ে যায় , যেখানে তাকে ধরা হয় এবং নাৎসি যুদ্ধাপরাধী হিসাবে সারা জীবনের জন্য বন্দী করা হয়।

২) Dr. Shiro Ishii (1892–1959)


Shiro Ishii ছিল একজন জাপানি মাইক্রোবায়োলোজিষ্ট। সে দ্বিতীয় সিনো-জাপানি যুদ্ধের সময় জাপানি সেনাবাহিনীর বায়োলজিকাল ওয়েলফেয়ার ইউনিটের লেফটেনেন্ট জেনারেলও ছিল।
১৯২২ সালে মেডিকেল স্কুলের স্নাতক পরে, Ishii 1st আর্মি হাসপাতাল এবং আর্মি মেডিক্যাল স্কুল টোকিও তে চাকরি করেছে, কিন্তু এটা ১৯৪২ সাল যুদ্ধের সময় জাপানি সেনাবাহিনীর জন্য গোপন প্রকল্পের অংশ হিসাবে মানুষের উপর তার বিখ্যাত পরীক্ষায় শুরু করে। তার নিষ্ঠুর পরীক্ষা-নিরিক্ষার শিকার হয় অগনিত মানুষ ( আনুমানিক দশ হাজার হাজার) যারা ছিল বেসামরিক নাগরিক এদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রধানত চীনা যুদ্ধবন্দী। তার ভিক্টিমরা তাকে maruta (logs) শব্দটি এসেছে, এই শব্দটি ব্যবহৃত হয় সে যেভাবে তার বন্দিদের দেখতো সেটাকে। সে তার বন্দিদের পোকা-মাকর হিসাবেই দেখতো। পুরো ফেসিলিটির কভার স্টোরি হিসাবে এটিকে একটি করাতকলের অভ্যন্তরে তৈরি করা হয়।
তার পরীক্ষায় ছিল জৈব অস্ত্র এক্সপোজার, জীবিত অবস্থায় মানুষের দেহ ব্যহচ্ছেদ, জোরপূর্বক গর্ভপাত, কৃত্রিম স্ট্রোক, হার্ট এটাক, frostbites এবং হাইপোথারমিয়া। (ভাই প্লিস বর্ননা করতে বলবেন না, আমি ডাক্তার হয়েই সহ্য করতে পারছি না।)
Ishii কে তার অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয় নি; সে তার এইসব পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার স্বাধীনতার ব্যবস্থা করে দেয়।

৩) Dr. Harold Shipman (1946–2004)


হ্যারল্ড ফ্রেডেরিক Shipman ছিল ব্রিটিশ ডাক্তার এবং ইতিহাসের সবচেয়ে উর্বর মস্তৃস্কের সিরিয়াল খুনীদের মধ্যে একজন। ধারনা করা হয় সে ২৫০+ রোগীর মৃত্যুর জন্য দায়ী।

লিডস স্কুল অব মেডিসিন থেকে স্নাতক হওয়ার পর, ব্রিটিশ মেডিকেল কাউন্সিল এর সম্মানিত সদস্য হয়। ১৯৯৩ সালে সে নিজের ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে। তার অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রথম নজরে আসে ১৯৯৮ সালের দিকে, যখন একজন সহকর্মী চিকিত্সক তার ক্লিনিকের রোগীদের মধ্যে উচ্চ মৃত্যুর হার লক্ষ করেন। পুলিশ তদন্তে বের হয়ে আসে ডঃ Shipman তার রোগীদের diamorphine overdoses দিত।

বিচারে Shipman কে ১৫ বছরের জেল দেয়া হয় কিন্তু ২০০৪ সালে সে আত্মহত্যা করে।

৪) Dr. H.H. Holmes (1861–1896)


হারমান কারার Mudgett (ওরফে ডঃ হেনরি হাওয়ার্ড HOLMES) ছিল মিশিগান মেডিকেল স্কুলের একজন স্নাতক এবং প্রথম লিষ্টেড আমেরিকান সিরিয়াল খুনীদের একজন। কিন্তু যখন অধিকাংশ সিরিয়াল খুনীরা খুন করার জন্য অন্ধকার কোণ বা কানা গলি খুজে সেখানে HOLMES শুধু খুন করার কথা চিন্তা করেই একটি হোটেলে তৈরি করেছিল।
অ্যাসিডের ফাঁদ, গ্যাসের লাইন, গোপন চিমনি এবং এমনকি বেডরুমগুলোতে যাওয়ার জন্য গোপন করিডোর ছিল এই "হাউজ অফ টেরর" খ্যাত এই হোটেলে। HOLMES তার ভিকটিম চির্বাচিত করতো প্রধানত তার মহিলা কর্মচারী ও হোটেল গেষ্টদের।
নির্যাতন করে মেরে ফেলার পর সে বডিগুলোকে বেসমেন্টে নিয়ে যেয়ে নিখুত ভাবে ব্যবচ্ছেদ করতো। এবং হাড় মেডিকেল কলেজ গুলোতে বিক্রি করা হতো।
যদিও পুলিশের হিসাবে হতভাগাদের সংখ্যা হল ২৭, তবে পুলিশ এও বলেছে যে বেসমেন্টে লাশ গুলোকে এমন খারাপ ভাবে টুকরো টুকরো করে ফেলে রাখা হয়েছিল এবং অনেক লাস এতোটাই খারাপভাবে পচে যায় যে মৃতদেহ আসলে কত ছিল সেখানে তা বলা কঠিন। মিসিং রিপোর্টের ভিত্তিতে ধারনা করা হয় HOLMES 'হোটেলে প্রায় ২০০ জন এই করুন মৃত্যুবরন করে। এ নিয়ে মুভি, ডকুমেন্টারিও হয়েছে।
এর মৃত্যু টা ছিল অনেক অনেক কষ্টের। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল ৩৫ মিনিট। খুব ধীরে ধীরে সে অবর্ননীয় কষ্ট পেয়ে মরে। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ ভাল ভাবেই নিয়েছিল। পাক্কা হারামীর বাচ্চা ছিল।

৫) Dr. John Bodkin Adams (1899–1983)


জন অ্যাডামস ছিল একজন ব্রিটিশ ডাক্তার, তাকে প্রতারণার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং একজন সন্দেহভাজন সিরিয়াল কিলার হিসাবে মনে করা হয়। দশ বছর ধরে (১৯৪৬-১৯৫৬) সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে তার ১৬০ রোগী মারা যায় এবং সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যপার হলো, এই সব রোগীরা তাদের প্রায় সকল অর্থ বা অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ তাকে দান করে দিয়ে যায়।

অ্যাডামস মেডিকেল শাখা anesthetics ছিল, কিন্তু সে পরিশ্রমী বা দায়িত্মশীল ছিল না - শীঘ্রই তিনি তাঁর কর্মজীবনের একটি "আইলসার ধাড়ি" হিসাবে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। সে অপারেশনের সময় ঘুমায় যাইতো অবশ, কেক খাইতো, টাকা গুণতো এবং এমনকি এনেস্থেসিয়ার গ্যাস টিউব মিশিয়ে ফেলতো যার ফলে অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর সেন্স চলে আসতো।
এমন একটা ফালতু ডাক্তার হয়েও ১৯৫৬ এসে সে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ধনবান ডাক্তার হয়ে যায়। যদিও তাকে কয়েকবার আদালতে আনা হয়েছিল কিন্তু তাকে দোষী সাব্যস্ত করা করা যায় নি, বিচারে পুলিশ তার অপরাধ প্রমাণ করতে পারিনি। কিন্তু ইংল্যান্ডের জনসাধারনের মতামত হল অ্যাডামস একজন সিরিয়াল কিলার।

৬) Dr. Jayant Patel (১৯৫০- )


প্যাটেল তালিকায় একমাএ ডাক্তার যে সিরিয়াল কিলার ছিল না, যদিও তার হাতে ৮৭ রোগী মারা যায় কিন্তু তা কোনো হিউম্যান এক্সপেরিমেন্ট ছিল করছে না, কোন মানসিক সমস্যা বা খুন করার অভিপ্রায়ও ছিল না। প্যাটেল এর বিষয় ছিল তার স্থূল অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্যবিধি ও হাইজেনিক প্রসিডিউরের অভাব।
প্যাটেল একজন ভারতীয় ডাক্তার কিন্তু মার্কিন ​​প্রবাশী। তার সহকর্মীরা বলেন, তিনি অপারেশন এতোটাই অবহেলার সাথে করতো এবং অকারণে অপারেশন করাতো (মানে দরকার নাই তবুও), অবহেলায় করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অপারেশনগুলো না করার ফলে রোগীরা গুরুতর ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হতো এবং মৃত্যু বরন করতো।

২০০৩ সালে, প্যাটেল অস্ট্রেলিয়া চলে আসেন, যেখানে দ্রুত তার অযোগ্যতা ও বদঅভ্যাস সনাক্ত হয়ে যায়। সহকর্মীগণ তার অস্ত্রোপচারগুলোকে বলতো "অপ্রচলিত" এবং "অযৌক্তিক" হিসাবে। নার্সরা তাদের রোগীদের তার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতো,যখন তারা জানত তিনি হাসপাতালে ছিল। তার ডাক নাম দেয়া হয়েছিল "ডাঃ মৃত্যু"।

পাটেল ২০০৩-২০০৫ সালের মধ্যে ১২০২ জন রোগীর চিকিত্সা দেন তার ভিতর কনফার্ম ৮৭ জনের মৃত্যু হয় কিন্তু ২০ বছরের কর্মজীবনে এর বাস্তব সংখ্যা একটি রহস্য।
২০১০ সালে তাকে ৩ জন রোগীর মৃত্যুর জন্য দ্বায়ী করা হয় এবং তার ৭ বছরের জেল হয়।

৭) Dr. Michael Swango (১৯৫৩- )


সে ইউএস মেরিনের সাবেক মেডিকেল অফিসার, প্রায় ৬০টি মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করা হয় এবং এই সব মৃত্যু তাকে একজন সিরিয়াল কিলারে পরিনত করে। যে হাসপাতালে সে কাজ করতো সে হাসপাতালের নার্সরা লক্ষ করলো যে যেই ফ্লোরে সে দায়িত্বে থাকতো সেই ফ্লোরের সুস্থ রোগীরা অজানা কারনে খুব অসুস্থ্য হয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। একদিন একজন নার্স তাকে এক রোগীকে আনঅথরাইজড ইনজেকশন দিতে দেখে। এছাড়া এই জানোয়ারটা কাওকেই ছাড় দিত না, যেদিন সে তার সহকর্মীদের জন্য চা বা কফি বানাতো সেদিন তারা কোন কারন ছাড়াই খুবই খারাপভাবে অসুস্থ্য হয়ে যেত। পুলিশ তদন্ত করে দেখে যে সে সবাইকে বিভিন্ন ধরনের পয়জন দিত এবং তা কিভাবে কাজ করে তা দেখার জন্য। অপরাধ প্রমানের পর তার ৫ বছরের জেল হয়।
জেল থেকে বের হবার পর সে তার নাম চেন্জ করে আবার সেই কাজ করা শুরু করে। এখানে সে নিজের নাম রাখে Dr. Daniel J. Adams তার লাষ্ট পেশেন্টের নামে, পুরাই সাইকো। এখানেও তার পেশেন্ট ও কলিগরা পয়জনিং এর কারনে মারা যায় এবং ধরা পরার ভয়ে জিম্বাবুয়ে পালিয়ে যায়। অনুমান করেন সে ওখানে গিয়ে কি করতো, রাইট .... আগের কাজই ...
যা হোক, ২০০০ সালে সে হত্যা অভিযোগে গ্রেফতার হয় এবং তার একবার না, তিন বার যাবৎজীবন কারাদন্ড হয়। ট্রায়াল চলা কালে প্রসিকিউটর তার ডায়রি পড়ে শুনান যেখানে সে বর্ননা করে অপরাধের সময় কতটা আনন্দ লাভ করতো।

৮) Dr. Marcel Petiot (১৮৯৭-১৯৪৬)


প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত হবার পর সে ফ্রান্সের ফিরে আসে এবং মেডিকেল কোর্স কমপ্লিট করে। তার নিজেই ছিল অনেক মানসিক সমস্যা যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে একটি সামরিক অপারেশনের সময় ধরা পরে। তা সত্যেও সে ডাক্তার হিসাবে অনেক নাম করে। কিন্তু তার ক্লিনিককে ঘিরে ইলিগাল এবোর্শনের ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঔষধ প্রেসক্রাইবের গুজোব শোনা যেত।
তার প্র‌থম ভিক্টিম হিসাবে ধরা হয় তার গার্লফ্রেন্ডকে যে ছিল তার প্রথম পেশেন্টের মেয়ে। হঠাৎ মেয়েটি একদিন গায়েব হোয়ে যায় এবং তার প্রতিবেশীরা বলে যে তারা ডাক্তারকে একটি বড় ট্রাংক তার গাড়িতে তুলতে দেখেছে। যা হোক পুলিশের খাতায় মেয়েটিকে ঘর থেকে পালিয়ে গেছে বলে নথিভুক্ত করা হয়।
দ্বিতীয়বার পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে যে তার বাসার চিমনি দিয়ে লাগাতার ধোয়া বের হচ্ছে। পুলিশ তার বাসার বেসমেন্টে একটি কয়লার চুলা দেখতে পায় এবং পুরো বেসমেন্টে মানুষের দেহাবশেষ।
১৯৪৬ সালে তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

৯) Dr. Linda Burfield (১৮৬৭-১৯৩৮)


তাকে ডাকা হতো “Dr. Hazzard” বলে। সে কোন মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা ডাক্তার ছিল না কিন্তু একজন লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রেকটিশনার ছিল। আমাদের দেশের স্বাস্থ্যআপাদের মত আরকি। সে আবার সামান্য ঠান্ডা-জ্বর থেকে শুরু করে ক্যান্সারের চিকিৎসা পর্যন্ত করতো। তার চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল একই, না খেয়ে থাকা, মানে রোগীরা খেতে পারতো তবে তা হলো সারা দিনে দুইবাটি টমেটো জুস ও একটা কমলা। এই মহিলা ধরা পরে যখন একজন প্রভাবশালী ধনী ব্যক্তির বৌ মারা যায় তার ওজন ছিল ৫০ পাউন্ডেরও কম। সে অভিযোগে তার ২ বছর জেল হয়।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সে একটি হাসপাতাল দেয় যার নাম ছিল “school of health”। ১৯৩৮ সালে সে নিজের চিকিৎসা পদ্ধতি নিজের উপর এপ্লাই করতে যেয়ে মারা যায়। ধারনা করা হয় তার হাতে ১৫ জনের বেশি মৃত্যু বরন করে।

১০) Dr. Walter Freeman (১৮৯৫-১৯৭২)


আমেরিকার ডাক্তার ও American Psychiatric Association এর সদস্য ছিল। তিনি তালিকায় একমাএ ডাক্তার যে সরাসরি অপরাধ করেনি, সে একটি খুব বিতর্কিত এবং আদিম চিকিত্সা পদ্ধতি ব্যবহার করতো। হিসাবে ৩,৪০০ জনের ক্ষতির জন্য তাকে দায়ী করা হয়।
সে ছিল পাগলের ডাক্তার। সে সময় একটি ভয়ঙ্কর পাগলদেরকে নিউট্রালাইজ করার জন্য একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো যার নাম ছিল "lobotomy"। এ পদ্ধতিতে দুটি স্টিলের শিক চোখের কোনা দিয়ে ঢুকানো হতো। এতে পাগল ভাল হয়ে যেত না, কিন্তু পাগলের পাগলামি থেমে যেত।
কিন্তু মাথার ভিতরে রক্তক্ষরনের জন্য রোগী মারা যেত যে কারনে এই পদ্ধতিটি নিষিদ্ধ করা হয়। এই ডাক্তারকেও নিষিদ্ধ করা হয়।

[একটা কথা না বললেই নয়, সব জায়গায় ভাল-মন্দ দুই ধরনের মানুষ থাকে, এমন ডেভিল যেমন আছে, এন্জেল ডাক্তারও আছে। যুগে যুগে রাবনরা এসেছে বলেই রামদের জন্ম হয়েছে। ভাল ডাক্তারদের অভাব নাই, একটু সচেতন হলেই আপনি নিজেই তা বুঝতে পারবেন। মনে রাখবেন ডাক্তাররা বিধাতা নয়, তারাও মানুষ। ভুল তাদের হয়ে যায়, কিন্তু যেসব ডাক্তাররা তাদের দায়িত্ব ভুলে যায় তাদের কোন ছাড় নেই, তাদের প্রতিহত করতেই হবে। আর একটা ব্যপার হলো হাতুরে ডাক্তারদের কাছ থেকে দুরে থাকুন। একজন ডাক্তারকে তার বিএমএ বা বিএমডিসি এর সার্টিফিকেট আছে কি না বা সে দেখাতে পারবে কি না সে প্রশ্ন আপনি করতেই পারেন। আফটার অল এটা আপনার জীবন,আপনি কাকে দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন তা আপনি প্রশ্ন করে জেনে নিতেই পারেন। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি]

সবাইকে শুভকামনা , আজ এ পর্যন্তই ...


আমার "কত অজানা রে" সিরিজ:
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-উৎসব (কত অজানা রে পার্ট-১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-কম্পিউটার মাউস (কত অজানা রে পার্ট-২)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-প্রাকৃতিক গরম পানির লেক (কত অজানা রে পার্ট-৩)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- জাপানের কিছু পুকুর যাকে তারা 'হেল' বা নরক বা জিগোকু বলে (কত অজানা রে পার্ট-৪)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুবাই ওয়াল্ড (দেখলেও পস্তাইবেন না দেখলেও পস্তাইবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৫)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ক্রেজিয়েষ্ট ম্যানমেইড ফাউনটে (কত অজানা রে পার্ট-৬)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয় - জিওলজিকাল বিশ্ময় (এর অনেক গুলো আজ প্রথম দেখবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৭)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-এক্সট্রিম বডিবিল্ডার (কত অজানা রে পার্ট-৮)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-জীবন্ত পাথর (পাথর কেটে বানানো বিশাল মূর্তি) (কত অজানা রে পার্ট-৯)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ভুতুড়ে শহর (কত অজানা রে পার্ট-১০)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-"পারফেক্ট" ক্রাইম (কত অজানা রে পার্ট-১১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ট্রেজার শিপ, গুপ্তধনের সন্ধান (কত অজানা রে পার্ট-১২)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-নিষ্ঠুরতম নারীরা যারা নাৎসি বাহিনীতে কাজ করতো (কত অজানা রে পার্ট-১৩)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ইতিহাসের বীর যোদ্ধা জাতি (কত অজানা রে পার্ট-১৪)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুনিয়ার সবচেয়ে দামী হীরা (কত অজানা রে পার্ট-১৫)
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×