শৈশবের বিজ্ঞান বইয়ে খাদ্যশৃঙ্খল পাঠ করেছি । সমাজে সংসারে জটিল খাদ্যশৃঙ্খল দেখে দেখে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছি ক্রমশ:।
'মাৎস্য-ন্যায়' নীতির এই ব্যবস্থায় বড়মাছটি ছোটমাছকে গিলে খাবে এটিই নিয়ম জগতে। শক্তিমান খাদক আর শক্তিহীন তার করুণ খাদ্য ।
পাশাপাশি আরেকটি খাদ্যশৃঙ্খল দেখছি । সেখানের নিয়ম যেন কিছু ভিন্ন! খাদ্য ভিন্ন, খাদক ভিন্ন। হিসেবও এখানে ভিন্ন।
বাজার অর্থনীতির যুগ এখন । জগৎজুড়ে বিশাল এক বাজার বসেছে ।
এখানে নতুন নতুন গেজেট আসছে - খাচ্ছি ।
নতুন ভিডিও গেম আসছে- খাচ্ছি
নতুন এ্যাপস্ - খাচ্ছি
নতুন সিনেমা আসছে- খাচ্ছি
নতুন ফ্যাশন আসছে- খাচ্ছি
নতুন বিনোদন - খাচ্ছি
নতুন ড্রাগ - খাচ্ছি
নতুন পিজ্জা- খাচ্ছি
নতুন রেস্টুরেন্ট - খাচ্ছি
রং ফর্সা করার ক্রিম ...খাচ্ছি
ত্বক টানটান রাখে -খাচ্ছি
লোভের টোপ- খাচ্ছি
কেবল খাচ্ছি, খাচ্ছি আর খাচ্ছি।
চারিদিকে ক্ষুধার্ত হাঙর । গপাগপ ।
কিন্তু প্রশ্ন হোলো, কে জিতছে এখানে ? কে শক্তিমান? পুষ্ট হচ্ছেে কে? বড় মাছটি কোনদিকের? ক্ষুধার্ত হাঙর ?
হিসেব যে গুবলেট হয়ে যাচ্ছে!!!
হে অতৃপ্ত খাদক, হে হাঙর, হে প্রিয় বন্ধুরা, হেরে যাচ্ছি আমরা!! আমি, তুমি! এত খাবার পুষ্টিহীনই করছে ক্রমশ: ।
আসলে আমরাই শিকার হয়ে যাচ্ছি ! বড়শীতে গেঁথে শিকারি সামনে ধরতে পারলেই দিগ্বিদিকশূন্য খেয়ে নিচ্ছি সব ।
এই শিকারের নিপুন নিশ্ছেদ্র ব্যবস্থা বহু যত্নে নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছেে । এবং হতেই থাকবে।
বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলারের শিকার !
পণ্য ও বাজারের জটিল এক খাদ্যশৃঙ্খলে আটকে যাচ্ছে সিংহভাগ মানুষ।
কে জিতছে? সহজ হিসাব-
কে উৎপাদন করছে ? উৎপাদক কে ?
অথবা, কে ভোগ করছে? ভোক্তা কে ?
অতএব, এস, এই খাদ্যশৃঙ্খল পুন:পাঠ করি ।
কোনদিকে নিজেকে দেখতে চাই - ঠিক করে নিয়ে-মুখ খুলি । ধীরে-সুস্থে, ভেবে চিন্তে, সময় নিয়ে, মাথাটাকে খুলে । আরেকটু জেনে-বুঝে ।
করুণ খাদ্য হতে কারইবা ভালো লাগে!
==========================
==============
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২