somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিম আনোয়ার
পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

হুমায়ূন ফরীদি স্মরণে জন্মদিনের একদিন আগে !!!!

২৮ শে মে, ২০২০ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




ঘটনাটি এমন। প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন বসে আছেন। পাশের চেয়ারটি ফাঁকা। ফাঁকা চেয়ার পেয়ে আমি যখন বসতে গেলাম। পরিচালক খোকন ঘাবড়ে যাওয়া চেহারা নিয়ে বললেন ওটা ফরীদি ভাইয়ের চেয়ার। ঐ খানে কেউ বসে না। দুজনার কথোপকথনে স্পষ্টতই বুঝতে পারছিলাম খোকন ফরীদির একজন ফ্যান। আমার বন্ধু সহকারী পরিচালক এক ফাঁকে আমাকে বললেন চাকুরী তো দিয়েছিলে খেয়ে। যাই হোক খোকন ফরীদি কে প্রলুব্ধ করছিলেন কোন একটি সিনেমায় অভিনয় করার জন্য। ফরীদি তখন সিনেমায় অভিনয় প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। বুঝা যাচ্ছিল তিনি ছবিটিতে অভিনয় করবেন না। আরও খোকন কে শুনিয়ে দিলেন জান খোকন এই নাটকটি দুই লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে। নাটকটির নাম বিহঙ্গ।

নাটকটির শুটিং ছিল রিকশায় অপি করিম আর ফরীদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি যাবেন। তখন অমর একুশে বই মেলা চলছিল। ফরীদি আশংকায়। এই সময়ে শুটিং করা যাবে না। আমি দায়িত্ব নিলাম । ফরীদি কে আশ্বস্ত করলাম । শুটিং হলো । আমি সঙ্গে থাকলাম। কোন সমস্যা হয়নি। আসলেই দেখলাম ফরীদি তার গাড়ি তে করে এক খানি আরাম কেদারা বহন করছেন । যাইহোক পরে জানলাম নাটকে ফরীদি আমাকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন।

আমার কবিতার বই হৃদয় মালতি শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন ফরীদি কে উৎসর্গ করা হয়েছে। এটি অবশ্য শায়মা কে উৎসর্গ করার কথা ভাবছিলাম। শায়মা কি মনে করে ভেবে আর করা হলোনা। আমার ব্লগে আগমন হুমায়ূন ফরীদির মৃত্যুর পর। আমার মনে আছে তখন আমি অফিসের বহিরঙ্গন কাজে বিছনাকান্দি সিলেট। এমন সময় বেতারে শুনতে পেলাম ফরীদির মৃত্যু সংবাদ। মনে মনে চাইছিলাম খবরটি যেন মিথ্যে হয়। কিন্তু সেটা ছিল কঠিন তম সত্য। বাংলাদেশের সবচাইতে শক্তিশালী অভিনেতার মৃত্যু হলো। এতো বড় অভিনেতা আর একটিও নেই এই বঙ্গে। তিনি ছিলেন একজন ভার্সাটাইল অভিনেতা। তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করে খল চরিত্রকে সমৃদ্ধ সম্মানিত করেছিলেন।তার মত করে প্রেমের সংলাপ আর কোন অভিনেতা দিতে পারেনি। রম্যকার হিসেবে ও তিনি ছিলেন অতুলনীয়। তার জীবনের শেষ জন্মদিন বালাই ষাট অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম । তালের আসারি, চটপটি ফুচকা ইত্যাদি ব্যতিক্রমী সব খাবারের আয়োজন ছিল সেই প্রোগ্রামে। সেটির উপস্থাপনা করেন আফজাল হোসেন এবং ইমদাদুল হক মিলন। আজ ফরীদির জন্মদিন। আজ একজন দেশ প্রেমিক নিমগ্ন অভিনয় শিল্পীর জন্মদিন। বালাই ষাট অনুষ্ঠানে তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের যদি নির্বাসন দাও কবিতাটি আবৃত্তি করে ছিলেন। যদি নির্বাসন দাও আমি ওষ্ঠে অঙ্গুরী ছুয়াবো । আমি বিষপান করে মরে যাবো। অথচ তিনি নিজেকে সেই সময়ে নির্বাসন দিয়েছিলেন। তিনি অভিনয় দিয়ে আমাদের বিনোদিত করে ছিলেন, মুগ্ধ করেছিলেন অনেক আনন্দ ঘন ক্ষণ আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। পরিশেষে বলবো ভাল থাকুন শ্রদ্ধেয় ফরীদি না ফেরার দেশে।

শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন ফরীদি
_____________________
আপনার অভিনয় খুব মিস করি,
আপনি মন্ত্র মুগ্ধ করে রাখতেন
ক্যামেরা আপনাকেই খুঁজে নিতো
দুর্নিবার আকর্ষণে খুঁজে নিতো দর্শকের চোখ।
রূপসী রমনীর আবেদন ফিকে হয়ে যেত
আপনার অভিব্যক্তির কাছে।
সময়ের অপচয় ততটুকু সময় যতটুকু সময়
ক্যামেরাতে অন্য কোন অভিনেতার অবয়ব
আপনার সংলাপ বিহীন সময়টুকুতেও
আপনিই হয়ে ওঠতেন চূড়ান্ত অভিনয়।
তাই আপনি ছিলেন একেবারে ব্যতিক্রম।
আপনি অকপটে সত্য বলে দিতেন
সমুদ্রের মত বিশাল হৃদয় নিয়ে আপনি
দান করে গেছেন।
করোনা আক্রান্ত সময়ে তাই স্মৃতির মানসপটে
আপনি আরও প্রগাঢ় হয়ে ওঠেন।
আজ আপনি জন্মেছিলেন ভাষা আন্দোলনের
সময়ে ।
আপনি ছিলেন নির্লোভ মুক্তিযোদ্ধা;
আর্ত পীড়িত মানুষের আশ্রয়,
এখনো অগণিত বাঙালির হৃদয়ে দাগ কেটে রেখেছে আপনার অনবদ্য অভিনয়।
----------------------------------------------------------------------------------------
ছবি ঃ ঠাকুরমাহমুদ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:৩৭
২৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্বাসীকে লজিকের কথা বলার দরকার কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:১৭




হনুমান দেবতা এবং বোরাকে কি লজিক আছে? ধর্ম প্রচারক বলেছেন, বিশ্বাসী বিশ্বাস করেছেন ঘটনা এ পর্যন্ত। তাহলে সবাই অবিশ্বাসী হচ্ছে না কেন? কারণ অবিশ্বাসী বিশ্বাস করার মত কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের শাহেদ জামাল- ৭১

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



শাহেদ জামাল আমার বন্ধু।
খুব ভালো বন্ধু। কাছের বন্ধু। আমরা একসাথেই স্কুল আর কলেজে লেখাপড়া করেছি। ঢাকা শহরে শাহেদের মতো সহজ সরল ভালো ছেলে আর একটা খুজে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাবছিলাম ২ লক্ষ ব্লগ হিট উপলক্ষে ব্লগে একটু ফান করব আড্ডা দিব, কিন্তু এক কুৎসিত অপব্লগার সেটা হতে দিলোনা।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০৫



এটি ব্লগে আমার ২৬০ তম পোস্ট। এবং আজকে আমার ব্লগের মোট হিট ২০০০০০ পূর্ণ হয়েছে। আমি আনন্দিত।এই ছোট ছোট বিষয় গুলো সেলিব্রেট করা হয়তো ছেলে মানুষী। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শয়তান বন্দি থাকলে শয়তানি করে কে?

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:২০



রমজানে নাকি শয়তানকে বেধে রাখা হয়,তাহলে শয়তানি করে কে?

বহুদিন পর পর ব্লগে আসি এটা এখন অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। বেশ কিছু বয়স্ক, মুরুব্বি, সম বয়সি,অল্প বয়সি একটিভ কিছু ব্লগার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কট বাঙালি

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:২৪



কদিন পরপরই আমাদের দেশে বয়কটের ঢল নামে । অবশ্য তাতে খুব একটা কাজ হয় না । বাঙালির জোশ বেশি দিন থাকে না । কোন কিছু নিয়েই বাঙালি কখনই একমত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×