কোন লেখকের লেখা বই-এর মেধাস্বত্ব ও গ্রন্থস্বত্ব রক্ষা বিষয়ে আমাদের দেশে কোন আইন আছে কি? থেকে থাকলে, সেগুলো প্রয়োগ করা হয় না কেন? কেন নিলক্ষেতে গেলে এখনো অবৈধ বইয়ের সম্ভার চোখে পড়ে? এতে করে কারা লাভবান হচ্ছেন আর কারা ক্ষতি'র সম্মুখীন হচ্ছেন?
.
এই সম্পর্কে লেখার আগে আমার নিজের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই। আমি লেখালিখি করি অনেক দিন হয়ে গেলো। পত্রিকায় লেখার পাশাপাশি ব্লগ জগতে পদচারণা অনেক দিন ধরেই। শত শত গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ লেখাগুলোকে গুছিয়ে একটি বইতে রূপান্তর করতে চেয়েছিলাম একবার। সেই সুযোগেই, দেশের এক নামকরা প্রকাশনা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করি গত বছর। ইচ্ছে ছিলো একটি অনুবাদ বইও বের করবো।
.
আমি যখন প্রকাশনা সংস্থার প্রধানের সাথে যোগাযোগ করি, তাঁকে অনুরোধ করি, যে বইটি অনুবাদ করতে যাচ্ছি সেই বইয়ের লেখকের কাছ থেকে যাতে অনুমতি নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে, আমি প্রকাশককে বইয়ের লেখকের সাথেও পরিচয় করিয়ে দেই ইমেইলের মাধ্যমে। অথচ, সেই প্রকাশক বিদেশী সেই লেখকের গ্রন্থস্বত্ব উপেক্ষা করে আমাকে আমাকে বললেন যে, লেখকের অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই!!! আমি যেন বইটি অনুবাদ করে তাঁর কাছে দেই। তিনি তা প্রকাশ করে দিবেন!
.
হতভম্ব আমি সেই প্রকাশককে সরাসরি 'না' বলে দিয়েছিলাম। সেই বইটি অনুবাদ করলে হয়তো গত বইমেলায় আমার দুটো বই বের হতো। আমি অনুবাদ না করায় প্রকাশক আমার অন্য বইটিও আর ছাপাননি, যদিও পাণ্ডুলিপি তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।
.
ক্ষণিক লাভ ও লোভের তাড়নায় অনেক লেখক কিন্তু এরকম সৎ সাহস সহজে দেখান না। অনেকে আবার, আইন না জানার কারণে অন্যের বই নিজের বলে চালিয়ে দেন বা যথাযথ রেফারেন্স না দিয়ে বইয়ের অংশ প্রকাশ করে ফেলেন নিজের লেখায়।
.
এটা আসলে যেমন নীতি-নৈতিকতা বিরোধী কাজ্ তেমনি লেখকদের আজীবন দরিদ্র করে রাখার অপচেষ্টা। আমি জানি না, উন্নত বিশ্বে কেন একজন লেখক/লেখিকাকে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না। কিন্তু, আমাদের দেশে যে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে তা নীলক্ষেতে গেলেই বুঝা যায়।
.
সর্বোপরি, আমি ব্যারিস্টার সুমন ভাইকে লেখকদের পক্ষে দাঁড়াবার জন্যে সাধুবাদ জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭