পাইরেসি হচ্ছে মরনঘাতী ক্যান্সারের মতন! যা ধুকে ধুকে আমাদের শেষ করে দিচ্ছে, শেষ করে দিছে আমাদের দেশের অডিও বাজার কে! হারিয়ে গেছে আমাদের দেশের অগনিত মেধাবী শিল্পী, যার ক্ষতিপূরণ চাইলেও কেউ দিয়ে শেষ করতে পারবে না।
একটা সময় আমরা বাচ্চু,হাসান,জেমস নামের তিন জনের একক, দৈত ও তৃতীয় হয়ে আসা এলবাম বাজারে খুঁজে পেতাম কিন্তু কালের বিবর্তনে হাওয়ায় সেই সব নাম জানা অজানা শিল্পীরা আজ বিলিন হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র এই পাইরেসির জন্য।
এ যুগে আমরা কিনা করেছি! অনেক কিছু পেরেছি এই ভার্চুয়াল কীবোর্ড এর ঠুকাঠুকি তে! এখনো সম্ভব, চাইলেই আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি আমাদের সেই অডিও বাজার পুরোনো চেহারায়!
হ্যাঁ আমরা পেরেছি, রানা প্লাজায় ধসে পরা অসং্খ্য মানুষকে মৃত্যুর পথ থেকে বাঁচিয়ে দিতে, পেরেছি নারায়ণগঞ্জ এর গুম হয়ে যাওয়া লাশের নেপথ্যে কে ছিল তার মুখোশ উন্মোচন করতে! এমন আরও অসংখ্য ঘটনা আমরা রুখে দিয়েছি কেবল এই ভার্চুয়াল কিবোর্ড চালিয়ে!
হ্যাঁ এখনো পারি, তবে তা আপনারা বা আমাদের স্বচেস্টায়!
কিভাবে? কোন উপায়ে?
বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় অসংখ্য ওয়েব কিংবা ফোরাম আছে যাতে নতুন পুরোনো গানের ঝুলি রয়েছে! কিছু মানুষ আছে, যারা স্বল্প কিছু টাকা ব্যয়ে এইরকম ওয়েব কিংবা ফোরাম বানিয়ে নিজেদের হোস্টের কাতারে নাম লিখায়!
আমরা চাইলে ওই সকল ওয়েব কিংবা ফোরাম বন্ধ করে দিতে পারি! ওই সকল ওয়েব কিংবা ফোরাম সরকারী ভাবে পুরোপুরি অবৈধ! তবু তারা এই দেশের শিল্পীদের অসংখ্য গান বিনা অনুমতিতে কপি করে রেখেছেন! আর তাতে আমরা বা আমাদের মত অগনিত মানুষ আছে যারা কয়েকটাকার এমবি কিনে তা ডাউনলোড করে নিচ্ছি! এবং এতে করে ক্যাসেট বা সিডি কেনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতেছি, তারই সাথে দেশের অগনিত মেধাবী শিল্পীরা আশা হারিয়ে ফেলতেছে নতুন এলবাম বা সিডি বের করার জন্য!
আমার কাছে এমন কয়েকটি ওয়েব কিংবা ফোরামের নাম আছে যেখানে লক্ষ লক্ষ গানের ঝুলি পরে আছে! সেসব আমি বা আমরা ইনফো দিতে পারি যদি আমাদের দেশের শিল্পীরা তা আইনিভাবে ব্যান করে দিতে পারে!
সেক্ষেত্রে পাইরেসি অনেকাংশে কমে আসবে! তখন আমি,তারা বা তাহারা আর ওইসব ওয়েব কিংবা ফোরামের দিকে তাকিয়ে থাকবে না গান ডাউনলোড করার জন্য! এতে করে মানুষজন ছুটবে ফুটপাত কিংবা মোবাইল মার্কেট গুলির দিকে! কারন সেখানেও কিছু টাকার বিনিময়ে মেমোরি কার্ডে কম্পিউটারের সাহায্যে গান ট্রান্সফার করে দেয়! এবং তার জন্য যদি সরকার আইনিভাবে একশন চালায় তবে ওইসব কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক জব্দ করা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার!
এতে করে পাবলিক বিপরীত চিন্তা করতে বাধ্য! এবং নতুন সিডি বের হলে তা কেনার জন্য কিছুটা হলেও মুখিয়ে থাকবে!
দেশে এখন বহুলাংশে মানুষের কাছে স্মার্টফোন এভেইলাবল! এদের অনেকেই আছে যারা কানে হেড ফোন লাগিয়ে গান শুনে যায়! উনারা কিভাবে মোবাইলে গান শুনবেন? যদি কেউ এই প্রশ্ন করে থাকেন, তাদের জন্য অনলাইনে একটি অপশন খোলা থাকবে!
যেমন, কোন একটা সিংগার যদি তার নতুন এলবাম বের করার পর অনলাইনে একটা পোর্টাল সাইটে তা ডিরেক্ট ক্রয়ের মাধ্যমে প্লাগিন করে রাখে তবে তা স্মার্টফোন ইউজাররা আনলিমিটেড শুনতে পারবেন আজীবনের জন্য!
ধরুন, Apple iphone এর জন্য যদি itunes এ, Samsung এর জন্য যদি play store এ পেইড এপ্লিকেশন এর মত করে শিল্পীরা নিজে থেকে পোর্টাল সিস্টেম করে দেয় তাতে স্মার্টফোন ইউজাররাও নিজেদের ফোনে গান শোনা থেকে বাদ পরবেন না!
তবে হ্যাঁ... মনে রাখা উচিৎ, কোন প্রকারেও যেনো ওইসব অফিসিয়াল store এ ডাউনলোড অপশনটি না দেয়া হয়! কারন এতে করে একজনে টাকা দিয়ে গান কিনে তা ডাউনলোড করে তার বন্ধুদের মাঝে একমুহুর্তে Sharit নামক দুর্দান্ত এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে এক বিন্দু পরিমানও লেট করবে না!
যেহেতু দেশে এখন ম্যাক্সিমাম ইয়াং জেনারেশনের কাছে ইন্টারনেট কানেশন আছে, সেহেতু যখন তখন তারা একবার পে করে পছন্দের শিল্পীদের গান শুনতে পারবে!
সবার জন্য হিসাব সহজ, আর এতে করে আমাদের দেশে অডিও বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে, শিল্পীরাও গান গাইতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। ফিরে পাবো আগের সেই একক ডুয়েট এর অডিও বাজার। যেখানে থাকবে জেমস,বাচ্চু,হাসান সহ অনেক জানা অজানা নামের দেশীয় শিল্পীদের গান।