বেয়াড়া টাইপের সাদা ল্যান্ড রোভারখানি সেইদিন কি কইরা যেন আমার হাতে পঙ্খিরাজ হইয়া উঠিলো। যতই আঁকাবাকা করিয়া চালাইতে চাই, গাড়ী আমার সোজাই চলে। ইহার পর ক্রমেই আমার দৃষ্টি সাইড ভিউ মিররে আটকাইয়া যাইতে লাগিলো। ছোট্ট আয়নাটি জুড়িয়া গোলাপী একখানি মুখ বারংবার আমার মনযোগ কাড়িয়া লইতে লাগিলো। এইদিকে পুঁচকা ড্রাইভারের গাড়ী চালনায় আস্বস্ত হইয়া সকলেই মনে হয় খানিকটা স্বস্থির সহিত আরাম করিয়া বসিলো। তরুনীর চোখ মুখ হইতেও ভয়ের চিহ্ন বিদায় লইয়া প্রশান্তির ছায়া পড়িল। মাঝে মাঝেই সাইড ভিউ মিররে উহার সহিত চোখাচোখি হইতে লাগিল :#> এমন সময় হঠাৎ উহার চোখে স্পষ্ট শাষনের ছায়া দেখিতে পাইয়া ভীত হইয়া উঠিলাম
রংপুর হইতে ফিরিয়া আসিয়া আমার অবস্থা চান্দুর ন্যায় হইয়া উঠিল। বন্ধুগনকে এই বলিয়া আস্বস্ত করিলাম যে - সমস্তটাই ধরলার পাড়ে করা প্লান মোতাবেক আগাইতেছে। কিন্তু আমি নিজে জানি যে কোন কিছুই প্লান মোতাবেক হইতেছেনা। দিনে রাতে চব্বিশ ঘন্টা আমি উহাকে চোক্ষের সামনে দেখিতে পাইতেছি
সময় গড়াইয়া যায়, প্লান মাফিক আমার প্রেমে পড়া আর হয়না
এই ঘটনার ২ দিন পর আমার ভগ্নী একদা স্কুল হইতে ফিরিয়া আমার হস্তে একখানি মলাট করা পাঠ্যা পুস্তক ধরাইয়া দিয়া বলে সম্পার বান্ধবী উক্ত পুস্তকখানি আমাকে দিতে বলিয়াছে
প্রহর শুরুর আলোয় রাঙা সেদিন পৌষমাস
তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ ...
মুহুর্তে প্রশান্তিতে ভরিয়া গেল মন। বাহির হইয়া গিয়া বন্ধুমহলে ঘটনা বর্ননা না করিয়াই উহাদের একচোট খাওয়াইয়া দিলাম, ফলে উহারা বুঝিয়া গেল যে শুভ কিছু ঘটিয়াছে
উহার সহিত আমার প্রথম সাক্ষাত হয় আমাদের বাসাতেই। নানাবিধ সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় বাসায় মেয়েদের আগমনে আমার মাতৃদেবী মোটেও বিচলীত হইতেননা, কাজেই উহাদের আগমনেও হন নাই। কিন্তু সম্পা ইচ্ছায় হৌক আর বিব্রততা হেতু হৌক, প্রথম দিনেই মা জননীকে দেখিয়া মাথায় ওড়না দ্বারা ঘোমটা টানিয়া ঝাপাইয়া পড়িয়া কদমবুচী করিয়া ঘোষনা করিয়া দিয়াছিল যে সে এই বাড়ীর বিশেষ কেহ হইবার তালে রহিয়াছে
সম্পা আমার প্রেমিকার চাইতে বন্ধুই বেশী ছিলো। যতক্ষন একসাথে থাকিতাম, আমরা একে অপরকে খেপানোতেই বেশী মনযোগী থাকিতাম। তবে শর্ত ছিল প্রতিদিন ভালবাসায় পরিপুর্ণ একখানি করিয়া পত্র উহার হস্তে পৌছাইয়া দেওয়া লাগিবে। বৎসরাধিককাল এইভাবে চলিবার পরে উহার পিতা উহাদিগকে লইয়া রাজশাহীতে গমন করেন এবং আমার প্রেমপর্ব স্থগিত হইয়া যায়। পরে আমি উচ্চশীক্ষার্থে রাজশাহীতে গমন করিলে তিন বছর পরে আবার আমাদের প্রেমের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। সেই সময় সম্পা মাঝেমাঝেই আমাদের কলেজে আসিতো এবং সারা কলেজ আমার হাত ধরিয়া হাটিয়া বেড়াইতো সবাইকে জানাইয়া দেওয়ার জন্য, যাহাতে আমি আর নতুন কোন প্রেম করিতে না পারি
এমতাবস্তায় আমার পিতামাতার সহিত উহার পিতামাতা পর্যায়ের আলোচনার ধার্য হয় যে আমার অনার্স শেষ হইলে আমাদের বিবাহ হইবে। :!> কিন্তু উহার বেরসিক পিতা ভাল ব্যাংকার পাত্র পাইয়া বিনা উস্কানীতে এক রাত্রীতে উহার আক্দ পড়াইয়া দেন
====================================
আমার প্রেমিকা পর্বের ইহাই ছিল শেষের আগের পর্ব। শেষ পর্ব জানিতে ইচ্ছুক ব্যাক্তিবর্গ নীচের লিঙ্কে ক্লিক করিয়া দেখিতে পারেন
মনে কি পড়ে প্রিয়?
সবাইকে এই আবজাব ব্লগ কষ্ট করিয়া পড়িবার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই :#>
আগের পর্বঃ
আমার প্রেমিকারা - সম্পা পর্ব (১)
আমার প্রেমিকারা - চম্পা পর্ব
আমার প্রেমিকারা - ইলোরা পর্ব
আমার প্রেমিকারা - হুমায়রা পর্ব
আমার প্রেমিকারা - জেনী পর্ব
আমার প্রেমিকারা - কাঁকন পর্ব
আমার প্রেমিকারা - লোপা পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




