::::কসাই পাখির ভোজন পর্ব::::
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বাংলাদেশে থাকে অথচ কসাই পাখি দেখে নি এমন লোকের সংখ্যা হাতে গোনা হবে। সমস্যা একটাই পাখিটা খুবই সহজলভ্য কিন্তু নামটা একটু অপরিচিত। তাছারা ‘কসাই পাখি’ নামটা প্রমিত বাংলা, একেক এলাকাতে একেক নামে ডাকে, কেউ বলে ল্যাঞ্জা লাটোরা, কেউ লাটোরা আবার কেউ বা বলে বাঘটিকি। দেখতে খুব কিউট হলেও নামটাই বলে দেয় এরা দেখতে সুন্দর কিন্তু স্বভাবে বান্দরটাইপ একটা পাখি।
কসাই পাখি ছোট্ট একটা শিকারী পাখি। ছোট পোকা মাকড়, গিরগিটি, টিকটিকি এগুলো ঝোপঝার থেকে ধরে কপাত করে খেয়ে ফেলে। একটা ওয়েবসাইটে দেখেছিলাম এরা নাকি নদী থেকে মাছ পর্যন্ত ধরে খায়। দক্ষিন ভারতে কোন এক ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার একটা কসাই পাখির ছবি তুলেছিল জ্যান্ত সাপ খুচিয়ে মেরে খেয়ে ফেলছে। তাই এর আচার ব্যাবহারের বিস্তর বর্ণনা শুনে বোঝাই যায় যে কসাই পাখি দেখতে যতোই সুন্দর হোক না কেন স্বভাব চরিত্র ভয়াবহ নিষ্ঠুর। একবার পদ্মা রিসোর্টে একটা কসাই পাখিকে দেখেছিলাম একটা টিকটিকিকে ধারালো ঠোট দিয়ে আক্ষরিক অর্থে জ্যান্ত ছিড়ে খেয়ে ফেলছে। জিনিসটা দেখে পর পর দুদিন ভাত খেতে বেশ কষ্ট হয়েছিল। এদের ইংরেজী নাম লং টেইলড শ্রাইক। দক্ষিন এশিয়ার প্রায় সবখানেই এরা দেখা যায়। এমনকি খোদ ঢাকা শহরেও বিস্তর কসাই পাখি মেলে একটু চোখ কান খোলা রাখলেই।
কমাস আগে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি গিয়েছিলাম ক্যামেরা নিয়ে। বিস্তর বেলে হাঁস (লেসার হুইসেল ডাক) এসেছে। গিয়ে দেখি শুধু বেলে হাঁসই নয়, শয়ে শয়ে শামুক খোল (এশিয়ান ওপেন বিল) পাখি। সন্ধ্যার সময় গাছগুলোতে এতগুলো শামুকখোল ভীর করছে যে বসার জায়গা নিয়েই মারামারি লেগে যায়। দুপুরে পিছের পুকুর ধারে একটা ভয়াবহ লাজুক শুভ্র ডাহুককে লেন্সের দুরুত্বে আনার যখন ব্যর্থ চেষ্টা করছি, তখন দেখলাম মাথার উপরে ইলেক্ট্রিকের খাম্বার উপরে আমাদের ছেলেমানুষি কার্যকলাপ বিরক্তির সাথে দেখছে একটা কসাই। ভালো করে দেখে টের পেলাম তার ঠোটে জীবন্ত কিছু একটা ছটফট করছে। ক্যামেরা তাক করতেই ফুরুত। না পালিয়ে গেল না। অন্য পাখিদের মতো এরা মোটেই লাজুক না, মানুষের প্রতি ভাবভঙ্গিও ড্যামকেয়ার টাইপ। উড়ে এসে বরঞ্চ আরো কাছের একটা ঝোপের উপরে এসে বসলো। ভালোভাবেই দেখছি মুখের মধ্যে ধরা একটা ডাশা মাকড়শা। ঠোট আর দুপায়ের সাহায্যে ছিড়ে খুড়ে রাক্ষুসে ভোজন পর্ব শেষে কসাই পাখিটি সামনের একটা ডালে গিয়ে বসলো রোদ পোহাতে।
মাংস কাটায় ব্যাস্ত কসাই।
খাওয়া শেষ। এখন রোদ পোহানো।
লেখাটা আগে আমার ব্যাক্তিগত ব্লগঃ shoummo.com এবং সচলায়তনে প্রকাশ।
২৪টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক
আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।
“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন