আমাদের জাতির সংগ্রামের শুরুটা ছিলো মিলিটারী শাসনের(১৯৫৮-১৯৬৯ সাল) বিপক্ষে, জেনারেল আইয়ুব খানের বিরু্দ্ধে; সময় লেগেছে, কিন্তু জাতি আইয়ুব খানের গদি উল্টায়ে দিয়েছিলো (১৯৬৯ সাল); পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের সামান্য অংশ ইহাতে পরোক্ষভাবে সাপোর্ট জানায়েছিলো, বড় অংশ হতভম্ব, বাংগালীরা একি করছে!। ব্যুরোক্রেটরা কার পক্ষে ছিলো? তারা সাধারণ মানুষের সাথে ছিলো না, তারা নতুন মিলিটারী শাসনকর্তা ইয়াহিয়া খানের সাথে ছিলো।
তারা যদি সাধারণ মানুষের সাথে থাকতো, ইয়াহিয়া খান আসতে পারতো না; জোর করে এলেও ২/১মাস ক্ষমতায় থেকে, কমপক্ষে সাময়িক কোন সিভিলিয়ান সরকার গঠন করে, সেটার হাতে ক্ষমতা দিতে বাধ্য হতো।
১৯৬৯-১৯৭০ সালে বাংগালীরা যখন পুর্ব পাকিস্তানে শেখ সাহেব ও মাওলানার নেতৃত্বে সমাগত ভোটের জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছিলো, ব্যুরোক্রেটরা পুরোপুরি মুসলিম লীগের পক্ষে ছিলো, তারা শেখ সাহেবকে সহ্যই করতো না। দেশ যখন স্বাধীন হলো, তাজুদ্দিন সাহেব ভয়ংকর বেকুবী করলেন, ১৯৭১ সালের (স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ) ১৪/১৫ই ডিসেম্বরেও যেসব ব্যুরোক্রেটরা ইয়াহিয়া খানের সরকার চালাচ্ছিলো, তাদের হাতে দেশ ছেড়ে দিলেন; এসব ব্যুরোক্রেটরা শেখ সাহেবকে মোটাই সহ্য করতো না, ওরা মনেপ্রাণে পাকিস্তানী সিষ্টেমের মানুষ ছিলো, তারা নতুন জাতিকে ক্রমেই পাকিস্তানের পথে নিয়ে গেছে।
জেনারেল জিয়ার ক্যু'টা আমাদের মিলিটারীর প্ল্যানে হয়নি, ইহার ডিজাইনে ছিলো সিআইএ ও পাকীদের মিলিটারি ইনটেলিজেন্স, আইএসআই; ব্যুরোক্রেটদের লাইন-আপ করানো হয়েছিলো ইহার জন্য, শেখ-বিরোধী ব্যুরোক্রেটদের জন্য ইহা ছিলো একটি ঈদের দিন।
১৫ই আগষ্ট ভোরবেলা যেভাবে আওয়ামী লীগ হাওয়া হয়ে গিয়েছিলো, সেভাবে যদি ব্যুরোক্রেটরা কাজ থেকে পালিয়ে যেতো, সকালে কেহ কাজে না যেতো, আমেরিকা, পাকিস্তান, জিয়া ও মিলিটারীর অন্যন্য জেনারেলরা চুপ হয়ে যেতো; তারা বাধ্য হয়ে নতুন সাময়িক সিভিলিয়ান সরকার গঠন করে ক্ষমতা থেকে সরে, ক্যান্টনমেন্টে ফিরে যেতো।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:৩৪