somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সুচিন্তার সুশাসক!

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র শুধু একক কোন ব্যাক্তির প্রচেষ্টার ফলাফল নয়। সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র গড়ে উঠে হাজারো মানুষের ছোট ছোট অবদানে, ছোট ছোট ত্যাগে, ছোট ছোট ভালবাসায়, রাষ্ট্র বা দেশকে যদি আমরা ফুলের বাগানের সাথে তুলনা করি, সেখানে বড় যে গাছটা দেখেন সেটাই সব কিছু নয়, সেই বাগানের দূর্বাঘাসেরও একটা সৌন্দর্য্য আছে, তাকেও সম বা ইকুয়েল মর্যদা দেয়ার আছে, বড় গাছে না ছড়ে সেই দূর্বাঘাসে যে লোকটা শুয়ে আকাশের সৌন্দর্য্য দেখে, তা কি কখনো খেয়াল করেছেন, দুর্বাঘাসের জায়গাতে যদি কাদামাটি থাকত তবে কি কোন কবি সেখানে শুয়ে মাথার নীচে হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকাত, নিশ্চয় না! ফলে বাগানের ছোট চারাটাও ফেলনা নয়! ঠিক সমাজ, জাতি, রাষ্ট্রের কথাও আমাদের এভাবে বিবেচনা করা দরকার। যে মানুষটা এই সমাজ, জাতি, রাষ্ট্রে জন্মেছেন তিনি পাহাড়, জঙ্গল, গ্রাম, শহর যেখানেই থাকুন না কেন, সেও এই বাগানের ফুল এবং ঔলিক সৌন্দর্য্য! অনেকের হয়ত স্বাভাবিক দেখা চোখে কোন অবদান থাকে না, আদতে হয়ত তার কোন পুরুষ/নারী এই সমাজ জাতি রাষ্ট্র গঠনে অবদান রাখেই বা রাখবে, ফলে তারও সুষ্টু পরিচর্যা দরকার!

বেশী লেখা তো আবার আপনারা পড়েন না, আসেন সামান্য উদাহরণ দেই। কবি জসিম উদ্দিনকে ভাল জানেন এখন আর তেমন লোক কই, তাকে কেন পল্লীকবি বলা হত তা আর কে মনে রেখেছে! উনাকে নিয়ে কোন গবেষণা বা দৃঢ় উচ্চারণ কই। পল্লীকবি জসিমউদ্দিন কি কি লিখেছেন সে খবর কে আর রাখে? অথচ বিশ্বাস করুন, এই পল্লীকবি হাজারো কাজে স্থানে আমাদের মনে দাগ দিয়ে গেছেন। আরো ধরি মাত্র একটি গানের কথাই, তিনি লিখেছেন 'প্রাণ সখি রে, ওই শোন কদম্ব তলে বংশী বাঁজায় কে? বংশী বাঁজায় কে রে সখি বংশী বাঁজায় কে, আমার মাথার বেনী বদল দিবো তারে এনে দে, প্রাণ সখি রে...... ।" আহ কি কথা, কি সুর। আমাকে যদি কোন স্টেজে দাঁড়িয়ে শুধু এই গানের ব্যাখ্যা দিতে বলেন, আমি ঘন্টার পর ঘন্টা সেই দৃশ্য গুলোর ব্যাখ্যা দিতে পারবো, আহ, কি সুমধুর দৃশ্য তিনি কয়েক লাইনেই আমাদের বলে গেছেন। অথচ এই লোকের কথাই আমরা ভুলে গেছি, এমন আরো কত নাম না জানা ফুলের খবর আমরা রাখি নাই, রাখতে চাই নাই। অথচ এই ফুল গুলোর সুঘ্রানেই আমাদের সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র গড়ে উঠেছে। কবি রবীন্দ্রনাথ, কবি নজরুলকেও যেখানে মনে রাখতে চাই না, সেখানে এরা আর কি! যাদের আরো ছোট অবদান, তাদেরতো খাতায় নামই নেই! খুব দুঃখের বিষয় বটে!

কথা গুলো মনের দুঃখেই বললাম, কথা হচ্ছে কে বা কার চেষ্টায় এই ছোট ছোট ত্যাগ গুলো আমাদের সামনে আসতে পারে, হ্যাঁ, এর জন্য চাই একজন সুবিবেচনার সুশাসক। আসলে একজন সুশাসকের ঐকান্তিক চেষ্টা হওয়া উচিত, বাগানের ছোট বড় সব গাছ ফুলের সব অব্দান স্বীকার করা এবং এই ছোট ছোট ত্যাগী মানুষ গুলোর কথা প্রকাশ্যে সমাজ, জাতির সামনে পেশ করা। সমাজের বড়রা যখন সমাজ গঠনে ছোটদের ভুমিকা বড় করে প্রকাশ করে তখন সমাজের বেশীর ভাগ মানুষ খুশি হয় এবং সমাজ এগিয়ে যায়, সমাজ সভ্য হয়, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত বেড়ে উঠে এবং এদিন সেই সমাজ মজবুত ও শক্ত হয়।

স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের সেই একজন সুচিন্তার সুবিবেচনার সুশাসক আসে নাই, যিনি প্রকাশ্যে বলবেন, ঐ যে পালতোলা নৌকায় জেলেরা মাছ ধরছে, তারাই আমাদের প্রাণ কিংবা ফসলের মাঠে সোনালী ধান হাতে মানুষটাই আমাদের জান!

আমি এখনো তেমনি একজন সুশাসকের অপেক্ষা করি, নিশ্চয় কেহ একজন এসে এই কথা বলবেই!

(ছবি গুলো নেট থেকে নেয়া, গানের লিঙ্ক কমেন্ট দেখুন)





সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৩
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×