মার্কেট, বাজার এবং হোটেল গুলোতে ভীড় দেখে এক শ্রেনীর মানুষ রই রই করে বলে উঠে কিসের অভাব এই দেশে! মার্কেট, বাজার এবং হোটেল গুলো ভীড় বুঝতে হলে মুলত আমাদের বাংলাদেশী চরিত্র বুঝতে হবে, এতেই সমাধান আছে। হোটেলে যদি এক দল খাবার খায়, বিল দেয় যে কোন একজন, তিনি ধনী বা কোন উপলক্ষে, সবাই নিজনিজ বিল দেয় না, দিলে বুঝতেন, কার কাছে কত টাকা?
মার্কেট গুলোতে যারা কেনা কাটা করেন, তাদের অধিকাংশ মহিলা, কেনেন পরিবারের সবার জন্য পোষাক একটা বা এক সেট করে, অধিকাংশ উনারা নিজেরা কামাই করেন না, ঈদচাদ পূজা পর্বনে স্বামী অল্প টাকা দিলেও অন্যান্ন ধনী ভাই, বোন, মামা, চাচারা উপহার হিসাবে এই অকেশন গুলোতে টাকা দেন, ফলে নুতন কাপড় চোপড় কিন্তেই পারেন, আমাদের পরিবার গুলোতে এই সংস্কৃতি বহু পুরানো, পরিবারে যিনি ধনী হয়ে যান তিনি এই সংস্কৃতি ধরে রাখেন, নিদেন পক্ষে টাকা না দিলেও ধনীরা উপহার হিসাবে পোষাক আষাক খাবার পাঠান, মধব্যিত্ত পরিবার গুলোও আবার এমন করে অন্যদের উপহার বিতরন করেন। এটা নিয়ে সার্ভে করলেই বুঝতে পারবেন, টাকা আসে মুলত ধনীদের থেকেই।
অন্যদিকে এই দেশের অধিকাংশ মানুষ যেহেতু মুসলিম, ফলে আমরা পরকাল বিশ্বাস করি, খুব কম মানুষই কিপ্টে স্বভাবের, কাল কি খাবো আমরা জানি না, পকেটের টাকা শেষ করে উপরওয়ালার দিকে চেয়ে থাকি এবং এভাবেই আমাদের জীবন যায় বা পার হয়! আমরা অনেক ক্ষেত্রেই 'না' বলি না, প্রতারিত হয়েও বলি, আলহামদুলিল্লাহ!
তবে আমার মুল পর্যবেক্ষন হচ্ছে, এই দেশের অধিকাংশ পরিবার (শহরের কিছু বাদে) চলে প্রবাসীদের টাকায়, এই প্রবাসী ভাইবোনেরা যতক্ষন শ্বাস নেন, নিজে না খেয়ে পরেও দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠান, নিজে আত্মত্যাগ করে অন্যদের জীবন গড়ে যান, জেলা উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ পরিবারের কোন না কোন সন্তান বিদেশে থাকেনই, এরা ঈদচাদ এলে আরো নিজকে উজাড় করে টাকা পাঠান! বাংলাদেশের মুল ডলার ইঙ্কামের বা রিজার্ভ ফান্ড বৃদ্ধির জন্য দায় এই প্রবাসীরাই!
শেষে বলি, অভ্যন্তরীণ আরো একটা শ্রেনী আছে বা হাজারে গোটা ৫/১০ পেয়ে যাবেন, যারা সরকারী চাকুরে, ব্যবসা বানিজ্যে গলা কেটে উপার্জন করে, এদের হাতও খোলা, কিপ্টামিতে অভস্থ্য নয়, এরাও এই সব বাজার চাঙ্গা রাখতে হেল্প করে, যখন ঈদচাদ আসে, কিছু হলেও বিলায় বা খাওয়ায়!
করোনা ভাইরাসের মত সময়ে অনেকে বেঁচে গিয়েছে এবং এতে আরো সাহস বেড়েছে, অনেকে বা অনেক পরিবার মনে করছে, টাকা যা আছে খরচ করি, কাল আবার আসবেই, করোনার মত সময়ে যখন কিছু হয় নাই, ফলে এখনো সামনে কিছু হবে না! তাওয়াক্লতু আলালাহ!