১৯৭৫ সাল শেখ মুজিব হত্যার পর এর প্রতিবাদ করার মত কাউকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলনা, আওয়ামীলীগ এর তখনকার বাকশালীরাও নাকি খন্দকার মোশতাক এর সাথেই এক হয়ে অবৈধ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল। সবাই শেখ মুজিব হত্যাকে নীরবে সমর্থন দিয়েছিল শুধু একমাত্র বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বাদে। বিদেশী কোন এক পত্রিকা বলেছে, শেখ মুজিব না হলে নাকি বাংলাদেশ হত না। তাহলে অবশ্যই শেখ মুজিব তৎকালীন বাংলাদেশের মানুষের অন্তরের অন্তরে ছিল, যার এক ৭ মার্চে ভাষণে কোটি কোটি জনতা জীবনমরণ যুদ্ধ নেমে গিয়েছিল, যার কথায় মানুষ নাকি মৃত্যুর সাথে খেলা করেছে। তার মৃত্যুতে কেন মানুষ একটু বিক্ষোভ, একটু মুখ দিয়ে প্রতিবাদ করলো না? প্রশ্ন আমাদের নতুন প্রজম্মের। যারা এখন শেখ মুজিব কে নতুন প্রজম্মের কাছে, দেশের সবচেয়ে ত্যাগী, সবচেয়ে ব্যক্তিত্ব্যসম্পন্ন দেশপ্রেমিক সাজাচ্ছে, তারা কি বলতে পারবে কেন শেখ মুজিব হত্যার পর কোন প্রতিবাদ হয়নি। স্বয়ং তার নিজের দলের লোকেরা কেন কোন কিছু করল না?
যখন বাংলাদেশের প্রথম পার্লামেন্ট গঠন করে তাজউদ্দিন আহমেদ মুজিব নগরে, তখন শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি বলে ঘোষনা দিয়েছিল। ১০ই জানুয়ারী শেখ মুজিব দেশে আসার পর, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে নিজে কেন প্রধানমন্ত্রী হলেন? শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হয়ে আবার কেন রাষ্ট্রপতি হলেন ১৯৭৫ সালে?
মুক্তিযোদ্ধের সময় যে বাঙ্গালীরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অধীনে চাকরী করেছে ও পরাজিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সেই পরাজিত প্রশাসনকে শেখ মুজিব পুনর্জীবিত এবং দেশ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কেন দিয়েছিলেন? তাদের ছাড়া কি শেখ মুজিব দেশ চালাতে পারতো না? কি দোষ করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের নিয়ে কেন শেখ মুজিব সরকার এবং দেশ চালানে কাজে নিয়োজিত হলেন না?
ভারতের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা ছিল, যারা ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধে প্রশিক্ষন নিয়ে এসে দেশে অনেককে প্রশিক্ষন দিয়েছিল। সেই তালিকা না এনে কেন শেখ মুজিব নানাজনকে দিয়ে নানারকম মুক্তিযোদ্ধের তালিকা করে মুক্তিযোদ্ধের সার্টিফিকেট বিতরণ করেছিল? যেখানে অনেক রাজাকারও সার্টিফিকেট নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিল। শেখ মুজিব কি পারতো না ভারত থেকে তালিকাটা নিতে?
শেখ মুজিব এর সময় দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ না খেতে পেয়ে ক্ষুধায় মারা গিয়েছিল। বৃদ্ধি পেয়েছিল লুন্ঠন ও দুর্নীতি। সর্বহারা পার্টির নেতা কমরেড সিরাজ সিকদার এর আর্বিভাব ঘটলো। শ্রেণী সংগ্রাম নামে সংগ্রামও শুরু হয়। অনেক যুবক সিরাজ সিকদার এর সাথে যোগ দিয়েছিল। নির্যাতিত নিপীড়িত শোষিত বাঙ্গালির হৃদয়ে কমরেড সিরাজ সিকদারকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দানা বেধেঁছিল। কিন্তু ১৯৭৪ সালে ২রা জানুয়ারী পুলিশের হাতে কথিত বন্ধুক যুদ্ধে নিহীত হয়েছে। আর শেখ মুজিবর রহমান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে দম্ভের সাথে বলেছিলেন, আজ কোথায় সিরাজ সিকাদর? এটা বলার কারণ কি ছিল শেখ মুজিবর এর?
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবর রহমান প্রধানমন্ত্রী থেকে রাষ্ট্রপতি হলেন। হয়ে কেন দেশের সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করছিলেন? এবং সরকারী মালিকানায় নেওয়া দৈনিক ইত্তেফাকসহ চারটি পত্রিকা ছাড়া বাকি সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ কেন করতে হয়েছিল তাকে? যারাই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। দিগন্ত টিভি, আমার দেশ এর মত সংবাদ মিডিয়া বর্তমানে বন্ধ রেখেছ। অনেক কেন? উত্তর অনেক। তবে সহজ উত্তর কি? আশাকরি নতুন প্রজম্মের আওয়ামীলীগদের কাছে এইসব কেন এর উত্তর সুন্দর ভাবে পাওয়া যাবে।
সূত্র: আমার ফাসিঁ চাই