somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উজরা জেয়ার বাংলাদেশ সফর ও আমাদের গনতন্ত্র।

০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের রাজনীতি খুবই একটি জটিল সময় পার করছে। অনেক রাজনীতিবিদ তা মুখে অস্বীকার করলে ও তাদের অন্তরের ভিতর যে দুগ দুগ করছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অবশ্য আমাদের রাজনীতিবিদের কথাবার্তায় তাদের ভিতরে অবস্হা আমরা সাধারন মানুষ স্পষ্ট ভাবেই বুঝতে সক্ষম। বিশেষ করে আমাদের ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগীদের কথার ভিতরে এক ধরনের বিশেষ অস্হিরতার ছাপ স্পষ্ট। তারা কখন যে কি বলেন সম্ভবত তা তাদের নিজেদের ই জানা নাই। তার পর ও বলতে হবে তাই বলেন। আর তাদের এই বলাটা দেশে ও বিদেশে কতটা গ্রহনযোগ্যতা পাবে তা হয়তো তারা ভবেননা বা পরোয়া করেন না। আর সেই না করার ও যথেষ্ট কারন আছে। সব ই এখন আমাদের সাধারন মানুষের ভাগ্য! আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে ও স্বাধীনতার অনেক সুফল থেকে আজ বঞ্চিত।

সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন সরকারের একটি বিশেষ শক্তিশালী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে গেলেন। এই প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু'র মত অভিজ্ঞ কুটনীতিবিদ সহ অন্যান কর্মকর্তাগন। অবশ্য এর আগে ও ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় আবার ডোনাল্ড লু ইতোমধ্যে সরকার পরিবর্তনের কারিগরি হিসেবে ও পরিচিতি পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বদৌলতে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন তার সরকার পতনের মুল কারিগর ই নাকি ডোনাল্ড লু। আবার গত বছরের ২৮শে জুলাই যখন ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে এসেছিলেন তখন কিন্তু তিনি সেখানে তার প্রেমের গোপন রহস্য ফাঁস করে দিয়ে গেছেন। গত বছর ২৯শে জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারে নেপালস্হ মার্কিন দূতাবাস তার একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন যেখানে তিনি নেপালকে নিয়ে কোন রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া না দিয়ে তার স্ত্রী এরিয়েল আহার্টের সাথে তার নেপালে প্রথম দেখা ও প্রেমের বর্ননা দেন। সত্যিকারেই কি ডোনাল্ড লু একজন রোমান্টিক রাজনীতিবিদ?

এবার আসি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে। তাদের এই সফরের উদ্দেশ্য কয়েকটা যুক্ত থাকলে ও মুল উদ্দেশ্য ই ছিল আমাদের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের বিশেষ লক্ষ্য ই হলো বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। সেই লক্ষ্যে তারা কাজ ও করে যাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে। তবে অন্যদের নিয়ে চিন্তা না করে নিজেদের কথাই বলি। গত ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‍্যাব) ও এর তৎকালীন ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর পর আমাদের মানবাধিকার পরিস্হিতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের চিঠি চালাচালি তার পর গত ২৪ মে বাংলাদেশে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ ভিসা নীতি প্রনয়ণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে. ব্লিঙ্কেন ঘোষিত এই ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশী নাগরিক ও তার পরিবারের সদস্যদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই ভিসা নীতি প্রনয়ণের ফলে আমাদের কর্তাব্যক্তিদের অনেকের ভিতরই কম্পন সৃষ্টি হয়েছে এই নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক আলোচনা সমালোচনা যুক্তি পাল্টা যুক্তি আমরা শুনেছি। উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে ও আমাদের একেকজন একেক ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছেন। তবে আমাদের কর্তাব্যক্তিরা যে আমাদের বোকা ভাবে তা তাদের কথায় যথেষ্ট প্রমান মিলে। তারা হয়তো ভুলে গেছেন আমরা বীরের জাতি। মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ অনেকের সাথেই সাক্ষাৎ করেন। প্রত্যেকের সাথে সাক্ষাতের পর ই তাদের একই দাবী বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সকলের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত হতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ও তাদের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সকলের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এবার আসি আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি ও এর বাস্তবায়ন নিয়ে। আমাদের দেশে পর পর গত দুইটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতিকে যেমন লজ্জিত করছে তেমন ই ধ্বংসের মুখোমুখি দাড় করিছে আমাদের গনতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকারকে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা দেখলাম বিএনপি সহ অধিকাংশ দলই নির্বাচন বর্জন করলো। তাদের নির্বাচন বর্জনের কারন তো আমাদের সকলের ই জানা। ঐ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ও ৩০০ টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন কেন ঐ ১৫৩ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী ছিল না? ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের কর্তাব্যক্তিদের অনেকের মুখে ই বলতে শোনা গেছে এটা সংবিধান রক্ষার নির্বাচন। তাই আমাদের আশা ছিল হয়তো পরবর্তীতে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্হা করবে সরকার। জনগনের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি মাধ্যমে পরিচালিত হবে রাষ্ট্র। কিন্তু বাস্তবে সেই আশায় মিললো গুড়ে বালি! আর ২০১৮ নির্বাচন নিয়ে তো বলার কিছুই নাই। ঐ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি তো স্পষ্ট ধারনা দিয়েই গেছেন। তিনি বলে গেলেন, " তিনি 'ব্যালট বাক্স ভর্তি' করার ঘটনা সম্পর্কে শুনেছেন এবং আগের রাতে কিছু পুলিশ ব্যালট বাক্সে ভর্তি করে দিয়েছে, যা তিনি অন্য কোনো দেশে কখনো শোনেননি। "

বিএনপি সহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ই এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার এক দফা দাবীতে আন্দোলন করছেন। আওয়ামি লীগ ও তাদের জোটের দাবী হলো বর্তমান সরকারে অধীনে নির্বাচন। স্বাভাবিক ভাবেই আমার প্রশ্ন আওয়ামী লীগ সহ তাদের জোট তো ক্ষমতায় তাই তাদের এই দাবী কার কাছে? আমরা তো ইতোমধ্যে তাদের অধীনে পর পর দুইটি লজ্জা জনক নির্বাচন দেখলাম। তারা শুধু জাতীয় নির্বাচনেই এমন টি করেছে তা কিন্তু নয়। জাতীয় সংসদের প্রতিটি উপনির্বাচন এমন কি স্হানীয় সরকার নির্বাচন ও সুষ্ঠু হয় হয়েছে বলে নজির খুব একটা আছে বলে কেউই বিশ্বাস করেন না। যার সর্বশেষ প্রমান ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন।

গত ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচন। এই নির্বাচন বিএনপি সহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ না করলে ও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ছাড়া কয়েকটা নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল বহুল আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম ও মো. তারিকুল ইসলাম সহ মোট আট জন প্রার্থী অংশ গ্রহন করেন। যদি ও হিরো আলম অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রার্থী হয়েছেন। প্রথমে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করলেও পরে তিনি আপিলের মাধ্যমে তার প্রার্থীতা ফিরে পান। এর পর আমরা দেখেছি দফায় দফায় তার নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা সহ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা। সর্বশেষ যা দেখলাম তা কোন ভাবে মেনে নেওয়া মতো কোন বিষয় ছিল না। নির্বাচনের দিন শেষ ভাগে একটি কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হিরো আলম ও তার সঙ্গীদের উপর নৃশংস হামলা করা হয়। আর এই হামলাকারীরা আর কেউই নন তারা বর্তমান ক্ষমতাসীনদের গুন্ডা বাহিনী কিছু অংশ। তাদের মুখে ছিল আমাদের প্রিয় স্লোগান জয় বাংলা। যদিও আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তবে লজ্জার বিষয় হলো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হিরো আলমকে রক্ষা না করে সেই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে এক প্রকার তুলে দিয়েছিলেন বলেই মনে হয় ! অবশ্য এর আগে ও আমরা দেখেছি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম ও তার কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার দৃশ্য। সেখানে মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর কিছু সদস্য। ঢাকা- ১৭ এর উপনির্বাচনে হিরো আলমের সঙ্গে এই ঘটনার সময় বাংলাদেশ উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৬ সদস্যের নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল। জানিনা এই নিয়ে তাদের মনোভাব কি হবে ? তবে ইতোমধ্যে হিরো আলমের উপর এই নিলজ্জ হামলার নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, বাংলাদেশে আবস্হানরত মার্কিন দুতাবাস সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের দুতাবাস ও হাইকমিশন সহ দেশী বিদেশী সচেতন মহল। এই হামলা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন গুলিও সোচ্চার।

নির্বাচনকালীন সময় মুল দায়িত্ব পালন করার কথা নির্বাচন কমিশনের। তবে সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হলো আমাদের নির্বাচন কমিশন প্রতি পদে পদে তাদের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের অবহেলা ও গাফিলতির জন্য আমাদের নির্বাচন ব্যবস্হাকে আজ প্রায় ধ্বংসের দাড় প্রান্তে নিয়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তাদের দায়িত্বহীনতার কারনেই আজ আমদের সাধারন ভোটাররা ভোট কেন্দ্র বিমুখ এরও প্রমান ঢাকা-১৭ এর উপনির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের হিসাব মতে এই উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ১১.৫১ শতাংশের মতো। যেখানে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন।


কোন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচনের ফলাফল বাতিলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমিয়ে জাতীয় সংসদে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল পাস হওয়াকে দেশের অধিকাংশ মানুষ ই যখন জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে বলে দাবী করে আসছেন। সেখানে আমাদের নির্বাচন কমিশন থেকে শুনানো হচ্ছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত কোন দলীয় সরকারের অধীনে কোন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে প্রমান মিলে নাই। বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ২০ মার্চ মাগুরা-২ আসনে উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির প্রমান মিলে। অথচ সেই নির্বাচন কিন্তু অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফের নেতৃত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের অধীনে। যারা নাকি গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে পরিচালনা করেন। তার পর ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাস আমাদের সকলের ই জানা। এর পর আওয়ামিলীগের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের মুখে আমাদের সংবিধানে যুক্ত হলো তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্হা যা বাংলাদেশের প্রতিটি সাধারন মানুষ গ্রহন করে নিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে ঐ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ই বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ ও তাদের জোট রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহন করে নানান কৌশলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করে নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী করতে মরিয়া হয়ে পরেন। এর পর আমাদের দেখতে হলো ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুইটি জঘন্য নির্বাচন। বাংলাদেশের সাধারন মানুষ সকল প্রেক্ষাপট বিবেচনায় মনে করে বাংলাদেশে গনতন্ত্র রক্ষায় একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন যা হবে সকল রাজনৈতিক দল ও জনমানুষের অংশগ্রহণে যার কোন বিকল্প নাই। আর দেশে একটি সুষ্ঠু গনতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলেই দেশের মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা সহ সকল মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এর জন্য অবশ্যই প্রয়োজন সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্হা। যা শুধুমাত্র আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্হার মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।


সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২৩ রাত ১:৫৪
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তুমি অথবা শরৎকাল

লিখেছেন আজব লিংকন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:১০


রোদ হাসলে আকাশের নীল হাসে।
গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা মেঘ দল ব্যস্ত হয়ে
দূর সীমাহীন দিগন্তে ছুটে।

লিলুয়া বাতাসে তোমার মুখে এসে পড়া চুল আর
ঢেউ খেলানো আঁচলের সাথে—
কাশবনে সব কাশফুল নেচে যায়।
নিভৃতে একজোড়া অপলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৪০

প্রসঙ্গঃ স্কুলে ভর্তি.....

সেই ষাট সত্তর দশকের কথা বলছি- আমাদের শিক্ষা জীবনে এক ক্লাস পাস করে উপরের ক্লাসে রেজাল্ট রোল অনার অনুযায়ী অটো ভর্তি করে নেওয়া হতো, বাড়তি কোনো ফিস দিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন্দির দর্শন : ০০২ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি পূজা মন্ডপ ও নাচঘর বা নাট মন্দির

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের জমিদার বাড়িগুলির মধ্যে খুবই সুপরিচিত এবং বেশ বড় একটি জমিদার বাড়ি। পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে একটি লেখা আমি পোস্ট করেছিলাম সামুতে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কলকাতা থেকে রামকৃষ্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদিন সবকিছু হারিয়ে যাবে

লিখেছেন সামিয়া, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



একদিন সবকিছু ফিকে হয়ে যাবে,
সময়ের সাথে হারিয়ে যাবে স্মৃতি।
মনে থাকবে না ঠিক ঠাক কি রকম ছিল
আমাদের আলাদা পথচলা,
হোঁচট খাওয়া।
মনে থাকবে না
কাছে পাওয়ার আকুতি।
যাতনার যে ভার বয়ে বেড়িয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে না'ফেরা অবধি দেশ মিলিটারীর অধীনে থাকবে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৯



একমাত্র আওয়ামী লীগ ব্যতিত, বাকী দলগুলো ক্যন্টনমেন্টে জন্মনেয়া, কিংবা মিলিটারী-বান্ধব।

আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ অনেকটা সমর্থক শব্দ ছিলো: বাংলাদেশ ব্যতিত আওয়ামী লীগের প্রয়োজন নেই, আওয়ামী লীগ ব্যতিত বাংলাদেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×