♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
(ছবি নেট হতে)
ভাই জাদিদ,
আপনাকে লিখতে ভয় করে, তারপরও লিখার জন্যে চাপ অনুভব করে লিখছি। আপনার সম্প্রতি পোস্ট পড়ে এই লিখা। জানি লিখাটা হয়তো আপনার নিকটে হাস্যরসাত্মক হবে, কারণ আপনাদের মতো জ্ঞাণী-মানি আমি নই। আর সেই ভয় হতেই আপনাদের লিখার সাহস করিনা। তারপরও হাজার গায়কের মাঝে যেমন হিরো আলম হাসি সৃষ্টি করে, আপনাদের জ্ঞাণীদের ভীরেও মতামত দিয়ে তেমনি একটু হাসি সৃষ্টির চেষ্টা করছি।
আপনার জনসেবা নিঃসন্দেহে অপূর্ব। সম্প্রতিও জানি অনেক কষ্ট করছেন। আর সেই কষ্ট হতেই কিছুটা লাঘবের উদ্দেশ্যে ব্লগারদের পরামর্শ চেয়েছেন এবং দিয়েছেন ফউন্ডেসন তৈরীর। নিঃসন্দেহে তা মহৎ উদ্যোগ। তারপরও আমি আপনাকে যা বলতে চাই, তা বুঝতে পারছিনা কিভাবে নেবেন। তবুও বলছি। ব্লগের সার্বিক অবস্থা আমার চাইতে আপনি ভালো জানেন ও বুঝেন। আমাদের মানসিকতা, মানবিকতা, বন্ডিং, ভন্ডামিসহ সকল বিষয়েই আপনি সবার চাইতে ভালো জ্ঞাণ রাখেন বলে আশা করি। ইতিমধ্যে আমাদের নিয়ে অনেক ইভেন্ট পরিচালনার অভিজ্ঞতা আপনার রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা নিশ্চই আপনাকে আমাদের ভালো করেই চিনিয়েছে। তাই,
একটা সংগঠন বা ফাউন্ডেসন ক্ষুদ্র কোনো বিষয় নয়। সেইসাথে সামু'র একটা ফেইসভ্যালু রয়েছে। এখন এই দু'টোর সমন্বয়ে সাধারণভাবেই অনেক বড় কিছু করা সম্ভব। আর আপনিও নিশ্চই সেটাই ভাবছেন। অবশ্যই বিষয়টা অনেক আশা জাগানিয়া। কিন্তু যদি হিতের বিপরীত হয়, তখন? অলরেডি জানিনা, শুনেছি যে সামুর ব্লগার পরিচয়ে সহব্লগার হতে টাকা মেরে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এখন এভাবে ফাউন্ডেসন করার সুযোগ করে দিয়ে আবার সেই ঘটনাকে সহজ করে দেওয়া হচ্ছেনাতো? এখানে কেউ বাচ্চা নয়। তাই নিয়ন্ত্রণ ততোটা সহজ হবে বলে মনে হয়না।
অন্যদিকে এমনিতেই একেকজন কোনো ভুল পেলে যা করি, তখন সংগঠেনের অবস্থা কি হবে আশা করি ভাবতেই পারেন। তাছাড়া অনেকেই এনোনিমাস থাকতে ভালোবাসেন। তখন অনেকেই চাইলেও অংশ নিতে পারেবন না, যদিও এনোনিমাসের মাঝে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্লগার আছেন বলে ধারণা করি। আবার অনেকে নাম-পরিচয় গোপনের সুবিধা নিতে পারে। সামু ফাউন্ডেসনের নামে তখন ব্লগারদের নিকট কল আসা কিংবা ব্লগারদের অর্থআত্মসাৎ করাও কঠিন কিছু হবে কি, যেখানে আমাদের অনেক সহজ-সরল নারী ও পুরুষ ব্লগার রয়েছেন? তখন যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য দোষী হবে সার্বিকভাবে সামু। আর এভাবে ওপেন ফাউন্ডেসন করার সুযোগ দিলে কাল হয়তো আপনিই রাস্তায় হাঁটার সময় “সামু ফাউন্ডেসনের কার্যালয়” লিখা সাইনবোর্ড কোনো পাবলিক টয়লেটের উপর বা গাছে পেরেক মারা দেখতে পারেন। কিংবা গাছে-গাছে “সামু বাবার ফাউন্ডেসন”-এর নামে দানবাক্সও ঝুলতে দেখতে পারেন। তাতে আশা করি বুঝতেই পারছেন বিষয়টার জন্যে কতোটা সচ্ছতা, জবাবদিহিতা, আর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। বাস্তবিক জীবনেই এসব সহজতর হয়না, আর ভার্চুয়ালি বিষয়টা কেমন হবে আশা করি বুঝতেই পারছেন। তাছাড়া অনেক প্রবাসী হৃদয়বান ব্লগার রয়েছেন বলে বৈদেশিক মুদ্রা হরনের এ এক মোক্ষম উপায়। বুঝতেই পারেন সমাজে কতো মানুষ এমন উপায় খুঁজে চলেছে।
ধরলাম সব প্রতিকূলতা জয় করে ফাউন্ডেসন করলেন। তখন ব্লগে যেমনি সমান্য বিষয়ে জটিল বা সোনার সিন্ডিকেট হয়ে যায়, তখন এমন বড় বিষয়ে কি হবে আশা করি বুঝতেই পারছেন। ধরলাম আলী ভাইকে দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতি হলে আলী ভাইকে কি রকম কথা-বার্তা সহ্য করতে হবে ভাবতে পারেন? পরিস্থিতি বিবেচনায় আলী ভাইয়ের পদত্যাগ দাবী, ভাবতে পারেন বিষয়গুলো? আর এসব বিবেচনায় মনে হয়না আলী ভাইদের মতো এলিট ব্লগারগণ এই দায়িত্ব নেবেন। তখনতো পরিস্থিতি কি হবে বুঝেনই। সেইসাথে ফ্রি-তে কিছু শত্রু তৈরী হবে। এমনিতে আলী ভাইয়ের হয়তো কোনো শত্রু নেই। কিন্তু ফাউন্ডেসনে জটিলপন্থীরা চাইবে জটিল ভাই প্রধান হোক। তখন অযথাই আলী ভাইয়ের দোষ বের করে তাঁকে অপদস্ত করবে। নিশ্চই ভাবতে পারেন বিষয়টা কতোটা নেক্কার আর ধীক্কারজনক? তখন জটিল ভাইয়ের পর্যায়ে নামিয়ে অনেকেই আলী ভাইকে নিয়ে পোস্ট লিখবে! যেমনি অনেকেই হাসিনা বা খালেদাসহ কোনো ব্যক্তিকেই নিয়ে লিখতে ছাড়েনা! কিন্তু এসব কি মেনে নেবার মতো?
আবার যদি জটিল ভাই প্রধান হয়, তখন সোনাগাজি ক্রিমিনাল-ক্রিমিনাল করে মাথা নষ্ট করবে। আবার জটিলপন্থীরা কিছু হলেই সোনাপন্থীদের ফাউন্ডেসন হতে বাদ দেবার আন্দোলন করবে। কিংবা জটিল ভাই ব্যক্তিগত আক্রোশ হতেও তা করতে পারে। তখন হয়তো সোনাপন্থীরা আলাদাভাবে “ফাউন্ডেসন ২” খুলবে। ঘটনার পুরাবৃত্তিতে তা হয়তো পরে শ্যাম্পু, সাইয়্যান, শেরজা তপন, রাজীব প্রমুখদের হাত ধরে ক্রমান্বয়ে ফাউন্ডেসন ৩, ৪, ৫, ৬……… জন্ম নিতেই থাকবে। তাতে পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ হতে পারে? তখন হয়তো ব্লগার খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর গহয়ে যাবে। দেখা যাবে সবাই সভাপতি আর সহ-সভাপতি। তখন সত্যিকার ত্রাণের প্রয়োজনে হয়তো আপনাকেই উদ্যোগ নিতে হবে, নয়তো আভীর মতো সহজ-সরলগণ ভেবে পাবেন না কাকে বিশ্বাস করবেন! তখন সহজ-সরল অনেক ব্লগার পাগলও হয়ে যেতে পারেন। এর দায়িত্ব কে নেবে? সেইসাথে পাগল বানানোর জন্যেতো সামাজিক মাধ্যমে মেসেজে, কলে, বা পোস্ট দিয়ে “সামু ফাউন্ডেসন হতে বলছি…….” ধরণের কন্টেন্টের অভাবই হবেনা! তখন “ফাউন্ডেসনের নামে সামুর অর্থ কেলেঙ্কারি” শীর্ষক খবরও অস্বাভাবিক কিছু হবেনা। সামু এমনিতেই কম চাপে আছে? তখন এনবিআরসহ অনেক প্রতিষ্ঠান হয়তো ব্লগ আর ব্লগারদের প্রতি নজরদারি বাড়াবে। তখন আপনিসহ সব ব্লগারের লাইন যদি পাবনামূখী হয়, তখন কি সেখানে জায়গা হবে? নাকি তখন ফাউন্ডেসনের অর্থে নতুন “পাগলাগারদ” নির্মাণ করতে হবে?
তাই মনে হয় ফাউন্ডেসন না করে, কোনো ব্যানার না দিয়ে, বিভিন্ন রিজিয়নে অঘোষিতভাবে সামুর জন্যে অসাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন মত, পেশা, বয়স, ধর্ম ইত্যাদির ভিত্তিতে কিছু সেচ্ছাসেবী তৈরী করুন যাতে প্রয়োজনমত তাদের হতে সেচ্ছাশ্রম গ্রহণ করতে পারেন। নির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত তার কার্যক্রম পরিচালিত হবে, আর ঘটনার শেষেই তার সমাপ্তি ঘটবে। আমার ক্ষুদ্রজ্ঞাণে মনে হয় স্থায়ী ফাউন্ডেসন টাইপের কিছু না করাই উত্তম হবে। নয়তো আপনার মাথা ঠান্ডা রাখার পরিবর্তে বরং সেই ফাউন্ডেসন ঠান্ডা করতে আবার ফাউন্ডেসন তৈরী করতে হবে। আর এভাবেই হয়তো ফাউন্ডেসনের পর ফাউন্ডেসন তৈরী করাই চলতে থাকবে।
নিশ্চই আমার মত মূর্খের লিখা পরে বিরক্ত হচ্ছেন। তাই আর লিখা বড় করছি না। ভুল-ত্রুটির জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে বিদায় নিচ্ছি।
জয় সামুব্লগ,
জয় ব্লগকাগু,
সামু দীর্ঘজীবী হোক।
পূর্বে যাদের লিখেছি
জুনাপি
নতুন নকিব ভাই
পদাতিক ও গেঁয়ো ভূত ভাই
শেরজা তপন ভাই
সোনাবীজ ভাই
জুল ভার্ণ ভাই
সাড়ে চুয়াত্তর ভাই
ছবি আভী
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১১