somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি ইন্টার পাশ, এই পরিচয় দিতে আমি কখনো লজ্জাবোধ করি নি

১৩ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১৪ সালের কোন একসময় সামুর এক ব্লগারের সাথে সামুতে ব্লগিং এর সূত্র ধরে ফেসবুকে যুক্ত ছিলাম। তিনি তখন পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে থাকতেন। কয়েকদিন বেশ ভালোই মেসেজে কথাবার্তা হয়েছিল। আমি তাকে জানিয়েছিলাম, আমি ইন্টার পাশের পর আর পড়ালেখা করি নাই । তিনি সেটা বিশ্বাসও করেছিলেন। যেকোন ভাবে হোক আমি তার আসল আইডি’র খোঁজ পেয়েছিলাম। পরে একসময় তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় । ২০১৫ সালের পর থেকে তিনি তো আর ব্লগেই আসেন না। সব লেখাও ব্লগ থেকে সরিয়ে ফেলেন।
করোনার সময়ে হঠাৎ করে তার কথা মনে পড়েছিল । পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, তিনি পরিবার নিয়ে ভালোই আছেন । এখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। ইচ্ছে আছে একদিন তার সাথে গিয়ে দেখা করে চমকে দিব ।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর আত্মপরিচয় প্রবন্ধে লিখেছেন,
“মানুষের প্রকৃতির মধ্যে সবই যদি চিরন্তন হয়, কিছুই যদি তাহার নিজে গড়িয়া লইবার না থাকে, আপনার মধ্যে কোথাও যদি সে আপনার ইচ্ছা খাটাইবার জায়গা না পায় তবে তো সে মাটির ঢেলা। আবার যদি তাহার অতীতকালের কোনো একটা চিরন্তন ধারা না থাকে তাহার সমস্তই যদি আকস্মিক হয় কিংবা নিজের ইচ্ছা অনুসারেই আগাগোড়া আপনাকে যদি তাহার রচনা করিতে হয় তবে সে একটা পাগলামি, একটা আকাশকুসুম।

মানুষের এই প্রকৃতি অনুসারেই মানুষের পরিচয়। তাহার খানিকটা পাকা খানিকটা কাঁচা, তাহার এক জায়গায় ইচ্ছা খাটে না আর - এক জায়গায় ইচ্ছারই সৃজনশালা। মানুষের সমস্ত পরিচয়ই যদি পাকা হয় অথবা তাহার সমস্তই যদি কাঁচা হয় তবে দুইই তাহার পক্ষে বিপদ।“

মানুষের পরিচয় কিসে শিক্ষা না কর্মে নাকি উভয়ের যোগফল । মানুষের মধ্য যদি আত্মবিশ্বাস থাকে , মানুষ যদি ভুল না করে , নিজের ভুল স্বীকার করার সাহসিকতা থাকে তবে সেই মানুষের পক্ষে নিজের একটা পরিচয় সৃষ্টি করা অসম্ভব নয় কখনো।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর কৃপণতা প্রবন্ধে লিখেছেন,
মানুষের শক্তির মধ্যে একটা বাড়তির ভাগ আছে। সেই শক্তি মানুষের নিজের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। জন্তুর শক্তি পরিমিত বলিয়াই তারা কিছু সৃষ্টি করে না, মানুষের শক্তি পরিমিতের বেশি বলিয়াই তারা সেই বাড়তির ভাগ লইয়া আপনার সভ্যতা সৃষ্টি করিতে থাকে।


কয়েক দিন আগে আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তো জীবনে অনেক কিছু করার চেষ্টা করলা কিন্তু কিছুই তো করতে পারলা না। তুমি যে বিজনেসে ফেল মেরেছ অন্যজন তো সেটা দিব্যি করে যাচ্ছে। পড়ালেখাও ঠিকমত করতে পারলা না। খালি বাপের টাকা নষ্ট করতেছ। তোমার পরিবারের অন্য সদস্যরা যার যার পজিশনে অত্যন্ত সফল। তোমার বাপ মারা গেলে তো তোমার অবস্থা শোচনীয় হয়ে যাবে। আমার ধারণা, তোমার বদমেজাজ আর জেদের কারণে তোমার এই অবস্থা।
আমি তারে বললাম, সবাই পারতেছে আমি পারতেছি না, আমাকে দিয়ে কখনো কিছু হবে না । এসব ভেবে তো আমি আমার জীবন শেষ করে দিতে পারি না। আমার ভাবনা আমারেই ভাবতে দেন। আমার জায়গায় আপনি থাকলে অনেক আগেই আত্মহত্যা করে বসতেন। আমার ভবিষ্যৎ আল্লাহ্‌র রহমতে অনেক ভাল।
লেখা শেষ করছি ,প্রয়াত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী আবদুল মান্নান এর একটি লেখা থেকে উদ্ধৃতি থেকে । তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম উপন্যাস ‘রাইফেল, রোটি , আওরাত’ উপন্যাসের ভূমিকায় লিখেছিলেন,
‘’ মানুষ এবং পশুর মধ্যে বড় একটা পার্থক্য হচ্ছে, পশু একমাত্র বর্তমানকেই দেখে, মানুষ দেখে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে এক সঙ্গে বিবেচনা করে। যখন কোন ব্যক্তি এবং সমাজ একমাত্র বর্তমানের মধ্যেই আবর্তিত হতে থাকে তখন সর্বনাশের ইশারা প্রকট হতে থাকে।‘’
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৩০
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জামায়াতকর্মীরা সমাজকর্মী হয়ে থাকবে : আমির

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৯




বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে নিজেদের জনগণের শাসক নয়, সেবক ও খাদেম পরিচয় দেবে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত কর্মীরা আজীবন সমাজকর্মী হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধী চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের মিলিটারীকে ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:২৪



১৯৭১ সালের জেনারেশন'এর কাছে ইন্দিরা (১৯১৭ - ১৯৮৪ ) ছিলেন ১ জন বিশাল ব্যক্তিত্ব; যু্দ্ধ লেগে যাওয়ার পর, উনি বলেছিলেন যে, বাংগালীরা ভালো ও নীরিহ জাতি, তিনি এই জাতিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×