somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সালেহ আহমদ তাকরীম এর হেফজ প্রতিযোগিতায় ৩য় হওয়া নাকি বাংলাদেশী নারী ফুটবলারদের SAFF চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম হওয়া। কোনটাকে সমর্থন করবেন?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আসুন... একটি পরিস্থিতি বলি আপনাদের, তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
ধরুন... পাশাপাশি দুইটা বাড়ি, দুই প্রতিবেশীর দুই সন্তান। একজন SSC পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়েছে আর অপরজন কওমি মাদ্রাসার পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়েছে। এখন দুই প্রতিবেশীই পাড়ায় মিষ্টি খাওয়াইতে গিয়ে দেখা। এখন SSC পরীক্ষার্থীর মা বলছে "আপা আমার ছেলে তো পাশ করেছে... এই নেন মিষ্টি খান।"
কিন্তু কওমি পরীক্ষার্থীর মা বলছে "উহু... না না ঐ মিষ্টি তো খাওয়া যাবে না। আপনার ছেলেতো জেনারেল লাইনে পড়ে পাশ করেছে। সে বিজ্ঞান (বিবর্তন), ইংরেজি তারপর কমার্সের ছাত্র বলে ব্যাংক, সুদ... এইসব পড়ে পাশ করেছে। ঐ মিষ্টি তো হারাম। তাই আপনার মিষ্টি আমি খাবোনা। তবে... আপনি আমার মিষ্টি খাবেন কারণ আমার ছেলে কওমি মাদ্রাসা থেকে ইসলাম, কোরান, হাদিস এইসব পড়ে পাশ করেছে। এগুলো সোয়াবের কাজ। তাই... আমি আপনার ছেলের পাশের মিষ্টি না খেলেও আপনি আমার ছেলের পাশের মিষ্টি খাবেন।"

এখন বলেন তো... কার কোন মিষ্টি খাওয়া উচিৎ?
লজিক্যালি বলতে... বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা আর সালেহ আহমদ তাকরীম দুজনেই বাংলাদেশের নাম বাইরের বিশ্বে তুলে ধরেছে। হিসাব মতে আমাদের তাদের দুজনের সাফল্যই উজ্জাপন করার উচিৎ। কিন্তু... এই দুই পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষের সমর্থকদের অপর পক্ষের প্রতি ব্যাপক ঘৃণা ও বিদ্বেষ মনের মধ্যে। আশাকরি বুঝেছেন কোন পক্ষের কথা বলছি। জি হ্যাঁ... আমি হুজুরদের কথাই বলছি।
নারী ফুটবলাররাও আমাদের সন্তান। তারা আমাদের দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। অথচ এই হুজুরের দল এই নারী বিজয়ীদের নামে ফতোয়া দিচ্ছে, তাদের হয়রানি করছে, কুৎসা রটাচ্ছে, এমনকি তাদের গ্রামের বাড়িতেও হামলা করছে। ফেসবুকে দেখলাম একজন নারী ফুটবলারে গ্রামের বাড়ীতে হুজুররা হামলা দিয়েছে এবং তার মা, বাবা সহ তাদের পরিবার পরিজন কে হুমকি ধমকি দিয়েছে এবং বলেছে তাদের মেয়ে সহ তারা সবাই দোযখে যাবে। এভাবে তারা এই নারী ফুটবলারদের হেনস্থা করছে। অন্যদিকে এই হুজুররাই আবার চাচ্ছে আমরা যেনো আমাদের আরেক সন্তান সালেহ আহমদ তাকরীম কে নিয়ে উল্লাস করি।

দেশের সন্তান হিসেবে... এই দুই পক্ষের সকলেরই ভালোবাসা ও শুভকামনা প্রাপ্য ছিলো। কিন্তু শুধু নারী বলে এই ফুটবলারদের কি হুজুরদের এই ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রাপ্য ছিলো? ধর্মীও দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে সত্যিই ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রাপ্য ছিলো, আর তা তারা পেয়েছেও।

শেষকথা... যেহেতু আমরা হাফিজ সালেহ আহমদ তাকরীম কে সমান ভালোবাসা ও মর্যাদা দিলেও হুজুররা কোনদিনো নারী ফুটবলারদের ভালোবাসা ও মর্যাদা দেবে না। তাই তাদের বলবোও না। তবে, আমি ব্যক্তিগত ভাবে নারী ফুটবলারদের এই মুহূর্তে বেশী সমর্থন জানাই কারণ তারা দেশে নারীদের উন্নয়নে ও তাদের চিন্তাধারা পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আমাদের দেশে মেয়েরা এখন শিক্ষার দিক দিয়ে আগের তুলনায় এগিয়ে আসলেও দেশের প্রতি অবদানে তাদের ভূমিকা খুবই কম। এই নারী ফুটবলাররা সেই অবস্থা থেকে উন্নয়নের প্রথম সিঁড়ি হতে পারে।

হয়ত ভবিষ্যৎ এ যদি কোনো নারী হাফিজা কে দেখি যে বিদেশের মাটিতে গিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে তখন হয়তো তাদেরকেও আমি এই নারী ফুটবলারদের মতোই সমান সমর্থন দেবো। কিন্তু আমি জানি তা কোনদিনো সম্ভব না কারণ ইসলামী বিশ্ব তাদের নিজেদের নারীদেরো সমর্থন করে না। যেখানে মেয়েদের জোরে কথা বলাই হারাম সেখানে মেয়েরা বিদেশে গিয়ে সবার সামনে সুউচ্চ গলায় কোরান পড়ে শোনাবে... তা শুধু কল্পনাতেই সম্ভব।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৪১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×