somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

এলোমেলো

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন এক বসায় লেখাটা শেষ হলো তখন শব্দ সংখ্যা তিন হাজার পাঁচিশ। সময় লেগেছে দেঢ় ঘন্টা। গল্পটা এখানেই শেষ করতে পারি কিন্তু লেখাটা এখনো আমার মন মতন হয়নি। তাই তার জন্য আরো কিছু সময় দিতে হবে।
যদি এমন নিরবচ্ছিন্ন সময় পাওয়া যায় তবে অনেক লেখা শেষ করে ফেলতে পারি। কিন্তু ঘোড়ার পিঠে জিন লাগিয়ে চললে কখনোই মন মতন লেখা শেষ হয়ে উঠে না। ঘুড়ির সুতো ছেড়ে দিয়ে খেলার জন্য সময় লাগে। অথচ কখনো তাকে টেনে নামিয়ে ফেলতে হয় কখনো উড়িয়ে দিয়ে ছেড়ে রাখি । তারা ঝুলে থাকে মাঝ পথে। অনেক সময় অনেকদিন তাদের নিয়ে আর খেলা হয় না। তবে নতুন করে বসলে অন্য রকম করে সাজিয়ে তোলা যায়।
আজ সময় ছিল আরো লিখার কিন্তু এক সময় আর লিখতে ইচ্ছা করল না। তখন ইচ্ছা করল রান্না করার। ইলিশ পোলাউ রান্না করলাম। মাঝে মাঝে বৃষ্টি এসে গান শুনিয়ে যাচ্ছে তার মাঝে এমন মজাদার ইলিশ পোলাউ খেতে কি যে ভালোলাগল। খেতে খেতে গলা পর্যন্ত খেয়ে ফেললাম।
রান্না করতে করতে আর খেতে খেতে দেখছিলাম অনেকবার দেখা এ্যামি ওয়াইনহাউস কে নিয়ে করা ডকুমেন্টারিটা। গানের সুরে ভরে উঠছিল আমার ঘর। সাথে মন খারাপ হয়ে গেলো এত্ত সুন্দর গানের পাখিটা মাত্র সাতাস বছর বয়সে কেনো মরে গেল।
গানের জীবন মাত্র দশ বছর। আঠারো বছরে তার গান শুনে রেকোর্ড লেবেল অবাক হয়ে গিয়েছিল। এই বয়সে যদি তুমি এমন গান কারো আরো পূর্ণ বয়স্ক হলে তোমার ঋদ্ধতা কোথায় পৌঁছাবে? অবাক হয়ে কিশোরী মেয়েটিকেই প্রশ্ন করে বসেছিল।
মাত্র কয়েকটি গানের বছরে ছাব্বিশটি সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার আর উনসত্তরবার মনোনয়ন পেয়েছে সে । অথচ কি এক অশান্তি ভুলতে, মদ পান করত সারাক্ষণ। নানা রকম মদের মিশ্রনে নিজের বিছানায় শুয়ে গান শুনতে শুনতে মরে গেলো এমন অল্প বয়সে।
অথচ মাঝে মাঝেই ওর গান শুনে আমি অস্থির হই এখনো। কি ভয়নাক ডেপ্থ, গভীর উপলব্দি যেমন তার কণ্ঠে তেমন তার লেখা শব্দ মালায়। এমনি এমনি তো আর নিজের দেশ ছাড়িয়ে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে সব পুরস্কার জয় করে নেয়নি এ্যামি ওয়াইনহাউস।
একক নারী শিল্পীসহ ছয়টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের পাঁচটি জয়সহ, চারটি আইভর নভোলো পুরষ্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ঘরে তুলেছিল। এমটিভি ইউরোপ সংগীত পুরষ্কার, তিনটি এমটিভি ভিডিও সংগীত পুরষ্কার, তিনটি বিশ্ব সঙ্গীত পুরষ্কার এবং একটি মার্কারি পুরষ্কার বছরের সেরা অ্যালবাম। অথচ নিজের জীবনটাকেই মূল্য দিল না তেমন করে।
এ্যামি ওয়ায়াইনহাউস মনে করিয়ে দেয় ।
ব্যান্ড কুইনের লিড ভোকালিস্ট রক মিউজিকের ইতিহাসের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংগীতশিল্পী হিসাবে পরিচিত ফ্রেডি মার্কারিকে। তার ঝলমলে মঞ্চের ব্যক্তিত্ব এবং চার-অকটভ ভোকাল রেঞ্জের জন্য পরিচিত ছিলেন। অথচ বেহিসাবী জীবন যাপন করে তাকেও মেনে নিতে হয় এইডসের মতন দুরারোগ্য ব্যাধীকে। যার কারনে সমস্ত ড্রামাটিক জীবন যাপন, দর্শকের মনমাতানো ভালোবাসা সব ফেলে মাত্র পয়তাল্লিশ বছরে চলে যেতে হয় কুইন বিখ্যাত ফ্রেডি মার্কারিকে।
এই সাথে আরো মনে পরে যায়, কাছের মানুষ ঋতুপর্ণ ঘোষকে। অর্থনীতির ছাত্র ঋতুপর্ণ ঘোষ, অথচ কর্ম জীবন শুরু হলো বিজ্ঞাপন সংস্থার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে। কিন্তু সেখান থেকে সরে গিয়ে সিনেমা বানাতে শুরু করল। শুধু বানানো ডিরেকশন নয় নিজের অভিনয় দিয়ে প্রাণবন্ত করে মুগ্ধ করে ফেলল দর্শককে।
মাত্র একুশ বছরের কর্ম জীবনে চব্বিশটি ছবি বানাল! প্রতিটি ছবি জীবনের কঠিন গহীনের খবর চোখের সামনে তুলে আনে প্রাণবন্ত করে। যে কথা গুলো বলা যায় না সে কথা অনুভবে চোখে অশ্রু যেমন ঝরায়, গলার কাছে কষ্ট আটকে থাকে, উদাস করা মন কোথায় যেন চির চেনা জগতের মাঝে ঢুকে যায়। এমন দারুণ কাজ করে অর্জন করে নিল, বারোটি জাতীয় পুরস্কারসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এত্ত এত্ত গভীর অনুভবের একজন মানুষ অথচ নিজেকে বদলে ফেলার তুমুল আগ্রহ থেকে কিছুতেই সরে থাকতে পারল না।
হরমোন বদল করতে গিয়ে নিজের শরীরটাকে দূর্বল করে ফেলল। যার ধকল সইতে পারল না শরীর। মাত্র উনপঞ্চাশ বছরে শেষ হয়ে গেল জীবন। আমরা নতুন ধরনের আবেগ অনুভুতির ছবিগুলো পাওয়া বন্ধ হয়ে গেল যা ঋতুর ভাবনায় নির্মিত হতো।
প্রথম ছবি দেখা হয়েছিল দুই হাজার পাঁচে অন্তরমহল, তারপর রেনকোট তারপর সব চরিত্র কাল্পনিক। এরপর বেশ একটা গ্যাপ পরে গেল ছবি দেখায়। তারপর আবার শুরু হলো বাড়িওয়ালি, তিতলি, দহন, অসুখ। খুঁজে খুঁজে সব ছবিগুলোই দেখা হলো অনেকবার করে। আর কোন ছবি নেই তাই এখন মাঝে মাঝে কথা শুনি কি দারুণ করে একজন মানুষ কথা বলতে পারে। এত্ত সুন্দর বর্ণনায় জীবন তুলে আনে।
মেধাবী মানুষগুলোর মধ্যে একধরনের উড়নচণ্ডি বোহেমিয়ান ভাব থেকেই যায় যেন।



সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৭
১০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×