যাকাত ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম । আমাদের দেশে সাধারনত রমজান মাসেই আমরা যাকাত প্রদান করে থাকি। যাকাত হিসেবে ক্যশ টাকা, শারী , লুঙ্গি ইত্যাদি দেয়ার রেওয়াজই বেশি চালু আমাদের দেশে। তবে করোনা ও যুদ্ধের কারনে বিশ্বব্যপী খাদ্যসামগ্রীর দাম এখন আকাশ্চুম্বী। উন্নত দেশে নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য নানা ধরনের ভাতার ব্যবস্থা করে ইনফ্লেশন সামাল দিচ্ছে জনবান্ধব সরকার।সরকারের পাশাপশি সাধারন মানুষও এগিয়ে আসছে মানব সেবায়। আমার এখানে সুপার মার্কেটের এক কোনে গত কয়েকমাস ধরে দেখছি যে কিছু ট্রলিতে বাজারের প্যকেট কিন্ত ট্রলির আশেপাশে কেউ নেই। পরে একজন বলল , যে কেউ ইচ্ছে করলেই যে কোন প্যকেট ঐ ট্রলি থেকে বাসায় নিয়ে যেতে পারে। আসলে সাধারন মানুষই এভাবে বাজার করে ট্রলি রেখে যাচ্ছে দরিদ্র মানুষের জন্য । আমাদের দেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির এই সময়ে নিম্ন আয়ের মানুষদের অবস্থা বর্তমানে খুবই করুন। আর তাই এবারের রোজায় একটু ভিন্নভাবে যাকাত দেয়ার কথা ভাবতে পারেন।
দেশে আমার বৃহৎ পরিবারের সব ভাইবোনদের যাকাতের টাকা এবার এক্ত্র করে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কেনা হয়েছে । পরিবার প্রতি চাল ডাল, ছোলা, তেল, আলু, পেয়াজের একটা প্যকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে যা দিয়ে একটি পরিবারের এই রোজার মাসটা চলে যাবে। গ্রামে ও ঢাকায় দুস্থ মানুষের মাঝে এই পন্য সামগ্রী বিতরন শুরু করা হয়েছে। যারা এই জিনিষগুলো পাচ্ছে তারা সবাই অত্যন্ত খুশি হয়েছে , কারন উচ্চমূল্যের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীই এখন সবচেয়ে কাংখিত বস্তু। এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে খুশি দরিদ্র মায়েরা, কারন পরিবারের খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হয় মায়েরই। একজন মা যদি সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারে তবে তার চেয়ে বড় কষ্ট পৃথীবিতে আর হয় না।
অনেকেই হয়ত বলতে পারেন যে , রোজা শেষ হলে এসব মানুষ চলবে কিভাবে ? না এই প্রশ্নের উত্তর আমারো জানা নেই। তবে রমজান মাসে আমাদের দেশে খাদ্য সামগ্রীর দাম অন্যান্য সময়ের চাইতে অনেক বেশি হয়। মুসলিম দেশ হিসেবে আমাদের দেশের ধনী , গরীব সবাই রমজান মাসে রোজা রাখার চেষ্টা করে। ধর্মীয় এই রীতি পালনের মাঝে মানুষ আত্মিক শান্তি লাভ করে। তাই রোজা রেখে কাউকে যেন অনাহারে ভুগতে না হয়, এটুকু ভাবনার দায় আমরা চাইলেই সবাই মিলে নিতে পারি।