খেলার মাঠে Fluke শব্দটি প্রায়ই শোনা যায়। বাংলায় অপ্রত্যাশিত বা আকস্মিক। ছোট কোন দল বড় কোন দলের বিপক্ষে কখনো বড় সাফল্য পেয়ে গেলে সেটিকে Fluke হিসেবে গণ্য করা হয়। এ ধরনের সাফল্য সবসময় আসে না। একসময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যকে যেমন Fluke বলা হত। নিয়মিত সাফল্য আর এই অপ্রত্যাশিত বা আকস্মিক সাফল্যের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই পার্থক্য বিস্তর। আমাদের দেশের রাজনীতিতেও কালভদ্রে এরকম অপ্রত্যাশিত বা আকস্মিক সাফল্য দেখা দিয়েছে। অধিকাংশই পরবর্তীতে দেশের রাজনীতির অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। বিশেষত যারা ছাত্ররাজনীতি থেকে আসা। নুরুল হক নুর যিনি ভিপি নুর হিসেবেও পরিচিত, এর সর্বশেষ সংযোজন।
নুরুল হক নুর যেভাবে আগাচ্ছেন তাতে তিনি অন্য সাবেক ছাত্রনেতাদের মত ছোট দলের নেতা হয়েই থাকবেন। যে পরিবর্তনের ডাক দিতে চাচ্ছেন সে পরিবর্তন কখনো আসবে না। খুব বেশি হলে পরবর্তী নির্বাচনে ড: কামাল হোসেনের বিগত নির্বাচনের ভাগ্য বরণ হতে পারে তার সর্বোচ্চ রাজনৈতিক সাফল্য। কারণ তিনি বা তার দল ভাষণ দিয়েই সরকার পাল্টাতে চান আর শাহবাগ কিংবা প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়েই আন্দোলন করতে চান। ঢাকা থেকে বের হতেই পারেন না। প্রকৃত জনসম্পৃক্ততা থেকে অনেক দূরে আছেন। চট্টগ্রামের সিআরবি থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল গ্রাম কোথাও তাদের সম্পৃক্ততা নেই (কোন রাজনৈতিক দলেরই সাংগঠনিক ভাবে নেই)। তাহলে কিভাবে তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবেন? তাদের সকলেই নেতা, সকলেই বুদ্ধিজীবী। সত্যিকার অর্থে তার বা তার দলের কোন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক নেই। ফলাফল অপরিপক্ক বক্তব্য, ভাষণ আর কর্মসূচী। তাদের না আছে ক্যরিশম্যাটিক কোন নেতৃত্ব না আছে কোন সঠিক পরিকল্পনা। যে কারণে তারা আন্দোলনের সফলতার জন্য বিএনপির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। প্রকৃত জনসম্পৃক্ততা থাকলে যা হত না। অনেক সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেও নুরুল হক নুর মলিন হয়ে যাচ্ছেন যা হতাশাজনক। একটি দল বড় দলে রুপান্তর হয় তার থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বদৌলতে। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে যেমন নিওক্লিয়াস। বিএনপির শুরুর দিনগুলো যাদু মিয়ার ভূমিকাও একই ছিল।
নুরুল হক নুর নিজেও অতিরিক্ত আত্নবিশ্বাসী কিন্ত এখনো অনেক অপরিপক্ক। একা সব করতে পারবেন না কিন্ত নিজেকে সঠিকভাবে না গোছালে অন্যদের মত বড় দলের পুতুল হয়ে পড়বেন। তাঁর রাজনৈতিক অভিলাষ তাকেই ঠিক করতে হবে।